টেকনাফে চাঁদা না দেওয়ায় ব্যবসায়ীকে মারধরের অভিযোগ

  প্রিন্ট করুন   প্রকাশকালঃ ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ০৭:১৮ অপরাহ্ণ   |   ৩৭ বার পঠিত
টেকনাফে চাঁদা না দেওয়ায় ব্যবসায়ীকে মারধরের অভিযোগ

টেকনাফ (কক্সবাজার) প্রতিনিধি:-


 

কক্সবাজারের টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপে চাঁদা না দেওয়ার কারণে এক ব্যবসায়ীকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে। ঘটনাটি ঘটে রোববার (৭ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টার দিকে সাবরাং ইউনিয়নের শাহপরীর দ্বীপ জেটি ঘাট-সংলগ্ন পুরান বাজারের একটি বরফকলে। ভুক্তভোগী মো. রফিক স্থানীয় ক্ষুদ্র বরফ ব্যবসায়ী।
 

রফিক অভিযোগ করে বলেন, কিছুদিন ধরে স্থানীয় জিয়াবুল হক নিজেকে জেটি ঘাটের ইজাদার পরিচয় দিয়ে তার কাছে নিয়মিত চাঁদা দাবি করে আসছিলেন। রোববার সকালে বরফকলে এসে এক মাসের জন্য ৪৫ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেন তিনি। রফিক টাকা দিতে অস্বীকার করলে জিয়াবুল হক ও তার সহযোগীরা তাকে বেদম মারধর করেন। এ সময় মো. ইউনুছ বাইলাও তাদের সঙ্গে ছিলেন বলে দাবি করেন ভুক্তভোগী।
 

তিনি আরও জানান, এই চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে ইজারার নাম ভাঙিয়ে জেটি ঘাটসহ আশপাশের মানুষের কাছ থেকে চাঁদা আদায় করে আসছে। প্রশাসনের হস্তক্ষেপে একসময় বন্ধ হলেও আবার নতুনভাবে জেলা পরিষদের কিছু খাস আদায়কারীর সঙ্গে মিলে চাঁদা উত্তোলনের চেষ্টা করছে তারা। রফিক বলেন, “আমি এখন নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। সরকারের সহযোগিতা চাই এবং দোষীদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি।”
 

অভিযোগের বিষয়ে জিয়াবুল হক দাবি করেন, “আমি কোনো খাস আদায়কারী নই। চাঁদা দাবির অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা। মূলত রাজনৈতিক ইস্যুতে রফিক আমাকে গালাগাল করেছিলেন। ভাগিনা হওয়ার কারণে আমি কেবল দুই-একটা থাপ্পড় দিয়েছি।”
 

টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ এহসান উদ্দিন বলেন, “শাহপরীর দ্বীপে চাঁদা না দেওয়ায় এক ব্যবসায়ীকে মারধরের বিষয়টি শুনেছি। ঘটনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”
 

উল্লেখ্য, মামলা-সংক্রান্ত জটিলতায় চলতি বছর শাহপরীর দ্বীপ জেটি ঘাটের ইজারা হয়নি। ফলে জেলা পরিষদ খাস আদায়ের সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু সেই সুযোগে একটি প্রভাবশালী চক্র ভুয়া ইজারাদার সাজিয়ে টোল আদায় শুরু করে। বিষয়টি প্রকাশ্যে আসার পর জেলা পরিষদ তিনজন আদায়কারী নিয়োগ করে। তবে সম্প্রতি অভিযোগ উঠেছে, এই নিয়োগকারীদের সহযোগিতায় আবারও দ্বীপজুড়ে চাঁদা তোলা হচ্ছে—যা নিয়মবহির্ভূত, কারণ খাস আদায়ের ক্ষমতা কেবল ঘাটের এক কিলোমিটারের মধ্যে সীমাবদ্ধ।
 

এ বিষয়ে জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ আল মারুমের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও সাড়া পাওয়া যায়নি।
 

কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিন বলেন, “এ ধরনের ঘটনা অত্যন্ত দুঃখজনক। বিষয়টি খতিয়ে দেখে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
 

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মিডিয়া) মো. জসিম উদ্দিন বলেন, “চাঁদাবাজদের ছাড় দেওয়া হবে না। ঘটনাটি গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে।”