চবির সাবেক শিক্ষার্থীকে ছাত্রলীগ সন্দেহে মারধর, জুতার মালা পরিয়ে পুলিশে সোপর্দ

  প্রিন্ট করুন   প্রকাশকালঃ ১৫ এপ্রিল ২০২৫ ০৬:০৪ অপরাহ্ণ   |   ১০৭ বার পঠিত
চবির সাবেক শিক্ষার্থীকে ছাত্রলীগ সন্দেহে মারধর, জুতার মালা পরিয়ে পুলিশে সোপর্দ

চবি প্রতিনিধি:-

 

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) ছাত্রলীগের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকার সন্দেহে শাওন হোসেন নামে সাবেক এক শিক্ষার্থীকে মারধর ও অপমান করার ঘটনা ঘটেছে। সোমবার (১৪ এপ্রিল) রাত ১০টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে এ ঘটনা ঘটে। পরে তাকে জুতার মালা পরিয়ে পুলিশে সোপর্দ করেন ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা।
 

মারধরের শিকার শাওন হোসেন চবির পরিসংখ্যান বিভাগের ২০১৬-১৭ সেশনের শিক্ষার্থী। তিনি পয়লা বৈশাখ উপলক্ষে ক্যাম্পাসে গেলে এ হামলার শিকার হন। বর্তমানে তিনি চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
 

প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে জানা গেছে, রাতের দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের অগ্রণী ব্যাংকের সামনে থেকে শাওনকে আটক করেন ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। তাকে মারধরের পর জুতার মালা পরিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের পুলিশ ফাঁড়িতে হস্তান্তর করা হয়। পরে পুলিশ তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসাকেন্দ্রে নিয়ে গেলে প্রাথমিক চিকিৎসার পর চমেকে পাঠানো হয়।
 

চবি ছাত্রদলের একাধিক নেতাকর্মী এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার বিষয়টি স্বীকার করেছেন। তাদের একজন, প্রাণিবিদ্যা বিভাগের শিক্ষার্থী শামীম উদ্দিন জানান, “২০২২ সালে আমি গোপনে ছাত্রদলের সঙ্গে যুক্ত ছিলাম। তখন শাওন আমাকে মারধর করেন এবং ক্যাম্পাসে আসায় বাধা দেন। পরে আমার পরিবার প্রশাসনের কাছে ক্ষমা চাইলে ক্লাসে ফিরতে পারি। শাওন শুধু আমাকে নয়, আরও অনেক ছাত্রদল নেতাকর্মীকেও হামলা করেছেন।”
 

এ বিষয়ে চবি ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন বলেন, “শাওনের বিরুদ্ধে বহু ছাত্র ও ছাত্রদল নেতাকর্মীর ওপর হামলার অভিযোগ রয়েছে। তাই আমরা তাকে পুলিশে সোপর্দ করেছি।”
 

তবে শাওন হোসেন নিজের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “আমি শামীমকে চিনি, তবে কোনো নির্যাতনের ঘটনার সঙ্গে জড়িত নই। কিছু লোক আমাকে ধরে মারধর করেছে। আমার কোনো রাজনৈতিক সম্পৃক্ততাও নেই।”
 

বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসাকেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত প্রধান চিকিৎসক ডা. মোহাম্মদ আবু তৈয়ব জানান, শাওনের শরীরে দৃশ্যমান আঘাতের চিহ্ন না থাকলেও তিনি আতঙ্কিত ছিলেন। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে চমেক হাসপাতালে পাঠানো হয়।
 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক তানভীর মোহাম্মদ হায়দার বলেন, “ভুক্তভোগীকে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। লিখিত অভিযোগ পেলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে। মৌখিক অভিযোগের ভিত্তিতে পদক্ষেপ নিতে গেলে প্রশাসন নানা জটিলতায় পড়ে।”