ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নির্বাচন কমিশন (ইসি) আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় বসেছে। বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৩টায় রাজধানীর আগারগাঁওয়ে ইসি সচিবালয়ের সম্মেলন কক্ষে সভাটি শুরু হয়।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ. এম. এম. নাসির উদ্দীনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ বৈঠকে সরকারের ৩১টি মন্ত্রণালয় ও সংস্থার প্রতিনিধিরা অংশ নেন। চার নির্বাচন কমিশনার, ইসির জ্যেষ্ঠ সচিব আখতার আহমেদসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও সভায় উপস্থিত ছিলেন।
সভায় আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে মন্ত্রিপরিষদ সচিব, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, স্বরাষ্ট্র, জনপ্রশাসন, নৌপরিবহন, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান, পররাষ্ট্র, অর্থ, আইন, তথ্য ও সম্প্রচার, স্থানীয় সরকার, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি, কৃষি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, ডাক ও টেলিযোগাযোগসহ মোট ৩১টি মন্ত্রণালয় ও সংস্থার প্রতিনিধিদের। এছাড়া জাতীয় সংসদ সচিবালয়, চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদফতর, ডাক অধিদফতর, বিটিভি, বেতার, বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ, এলজিইডি, শিক্ষা প্রকৌশল অধিদফতর ও কারা অধিদফতরের প্রতিনিধিরাও উপস্থিত ছিলেন বলে জানিয়েছে ইসি।
ইসির প্রস্তুত করা কার্যপত্র অনুযায়ী, সভায় ২২টি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়। এর মধ্যে অন্যতম ছিল—
সংখ্যালঘু, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী ও সাধারণ জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ
সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখা ও নাশকতা প্রতিরোধে বিশেষ নজরদারি
ভোটকেন্দ্র স্থাপনা ও অবকাঠামো উন্নয়ন
ভোটগ্রহণ কর্মকর্তার প্যানেল প্রস্তুত
পার্বত্য এলাকায় পরিবহন সহায়তা
প্রচার ও সচেতনতা কার্যক্রম জোরদার
পর্যবেক্ষক নিয়োগে সহায়তা
ঋণখেলাপি সংক্রান্ত তথ্য ব্যবস্থাপনা
বাজেট বরাদ্দ ও ব্যয় তদারকি
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ ও আচরণবিধি প্রতিপালন
নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ, স্বাস্থ্যসেবা, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও অগ্নিনিরাপত্তা
নির্বাচনী প্রচারসামগ্রী অপসারণ, যানবাহন ও নৌযান নিয়ন্ত্রণ
প্রবাসী ও অভ্যন্তরীণ পোস্টাল ভোটিংয়ের নিরাপত্তা
কারাগারে ভোটের ব্যবস্থা
সামাজিক মাধ্যমে ভুয়া বা উস্কানিমূলক তথ্য মোকাবিলায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ব্যবহার
কার্যপত্রে আরও বলা হয়েছে, ভোটারদের নিরাপদে ভোট দিতে যাতায়াতের জন্য শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে। পাশাপাশি ভোটার সচেতনতা বৃদ্ধি, সেবামূলক খাতে (টেলিযোগাযোগ, ব্যাংকিং ইত্যাদি) সার্ভিস সহজীকরণ এবং নাগরিকদের নির্বাচনী মনোভাব ইতিবাচক করতে সিভিক এডুকেশন কার্যক্রম জোরদারের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
ইসি আশা করছে, বৈঠকের প্রস্তাব ও সুপারিশ অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও সংস্থাগুলো প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে।
নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এর আগে গত ২২ অক্টোবর সাতটি সরকারি বিভাগের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেছে ইসি। এছাড়া সেপ্টেম্বরের শেষ দিকে নির্বাচনী প্রক্রিয়া নিয়ে বিভিন্ন অংশীজনের সঙ্গে ধারাবাহিক সংলাপ শুরু হয়।
এর অংশ হিসেবে ২৮ সেপ্টেম্বর নাগরিক সমাজ ও শিক্ষাবিদদের সঙ্গে, ৬ অক্টোবর গণমাধ্যমের জ্যেষ্ঠ সাংবাদিকদের সঙ্গে দুটি পৃথক সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়। রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন কার্যক্রম শেষ হলে দলগুলোর সঙ্গেও সংলাপে বসবে নির্বাচন কমিশন।