ইউক্রেনের গুরুত্বপূর্ণ ও বিশাল একটি বাঁধ রাশিয়া বিস্ফোরণের মাধ্যমে উড়িয়ে দিয়েছে বলে কিয়েভ অভিযোগ করছে। তারা বলছে, ইউক্রেনীয় বাহিনী যাতে নিপ্রো নদী পার হয়ে দেশটির দক্ষিণাঞ্চলে রুশ বাহিনীর ওপর পাল্টা সামরিক আক্রমণ চালাতে না পারে সেজন্যই বাঁধটি ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে। খবর বিবিসির।
রাশিয়ার পক্ষ থেকে এই অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে। তারা এ বাঁধ ধ্বংসের জন্য ইউক্রেনীয় বাহিনীর গোলাবর্ষণকেই দায়ী করেছে। এই বাঁধটি খেরসন অঞ্চলের যে নোভা কাখভকা শহরে, সেটি বর্তমানে রুশ সৈন্যদের নিয়ন্ত্রণে।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাঁধ ধ্বংসের ঘটনার পর হাজার হাজার লোককে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমি জেলেনস্কি বলেছেন, বাঁধটি ধ্বংস হওয়ার কারণে ৮০টি শহর এবং বসতি বন্যার ঝুঁকিতে পড়েছে। খেরসন শহর ভয়াবহ বন্যার কবলে পড়তে পারে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
স্থানীয় একজন সামরিক কর্মকর্তা বলছেন, খেরসন অঞ্চলের অন্তত আটটি বসতি ইতোমধ্যে প্লাবিত হয়ে গেছে। রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা তাস বলছে, নোভা কাখভকা শহরটি পানির নিচে তলিয়ে গেছে।
মস্কো-সমর্থিত স্থানীয় কর্তৃপক্ষকে উদ্ধৃত করে তাস আরো বলছে, যে সেখানে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে। প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি বলছেন, বন্যার হাত থেকে লোকজনকে উদ্ধারের জন্য তারা সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
পরিস্থিতি মোকাবেলায় তিনি ইউক্রেনের জাতীয় নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা পরিষদের জরুরি বৈঠক ডেকেছেন। প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি বলছেন, ভোর রাত স্থানীয় সময় ২টা ৫০মিনিটে এই জলবিদ্যুৎ বাঁধটি উড়িয়ে দেওয়া হয়। তার আশঙ্কা, এর ফলে ৮০টির মতো টাউন ও গ্রাম ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
তিনি বলেন, তার সরকার ও সরকারের বিভিন্ন বিভাগ “লোকজনকে রক্ষায় যা কিছু করা সম্ভব তার সবই করছে” এবং যারা “বিপদজনক এলাকায়” অবস্থান করছে তাদেরকে যতো দ্রুত সম্ভব সেখান থেকে সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এই ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন পশ্চিমা প্রতিরক্ষা জোট ন্যাটোর প্রধান ইয়েন্স স্টলটেনবার্গ। তিনি বলেন, এই বাঁধ ধ্বংস করা থেকে “ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়ার বর্বরতা” সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়।
এক টুইট বার্তায় তিনি বলছেন, এর ফলে “হাজার হাজার বেসামরিক লোকজন হুমকির মুখে পড়েছে এবং এর ফলে পরিবেশেরও বড় ধরনের ক্ষতি হয়েছে।”
ইউরোপীয় কাউন্সিলের প্রধান চার্লস মিশেল বাঁধ ভাঙার জন্য রাশিয়াকে দায়ী করেছেন। তিনি বলছেন, এ ধরনের একটি বেসামরিক অবকাঠামো ধ্বংস করা “যুদ্ধাপরাধ।”