চাঁদ পৃথিবীর কাছ থেকে ধীরে ধীরে দূরে সরে যাচ্ছে কারণ পৃথিবীর মহাসাগরের জোয়ারের টান চাঁদের গতিকে ত্বরান্বিত করছে। চাঁদের মাধ্যাকর্ষণ পৃথিবীর মহাসাগরের জোয়ারের কারণ হয়, যা পৃথিবীর চারপাশে দুটি তরঙ্গ তৈরি করে। এই তরঙ্গগুলির মধ্যে একটি চাঁদের দিকে নির্দেশিত এবং অন্যটি চাঁদের বিপরীতে নির্দেশিত।
চাঁদের দিকে নির্দেশিত জোয়ারের তরঙ্গ চাঁদের দিকে ত্বরান্বিত করে। এটি চাঁদের কৌণিক ভরবেগ বাড়ায়। কৌণিক ভরবেগ হল একটি বস্তুর ঘূর্ণনের পরিমাণ। চাঁদের কৌণিক ভরবেগ বাড়ার সাথে সাথে এটি পৃথিবী থেকে দূরে সরে যায়।
চাঁদের বিপরীতে নির্দেশিত জোয়ারের তরঙ্গ পৃথিবীর ঘূর্ণনকে ধীর করে দেয়। এটি পৃথিবীর কৌণিক ভরবেগ কমায়। তবে, চাঁদের দিকে নির্দেশিত জোয়ারের তরঙ্গের কারণে পৃথিবীর কৌণিক ভরবেগের যে পরিমাণ বৃদ্ধি পায় তা চাঁদের বিপরীতে নির্দেশিত জোয়ারের তরঙ্গের কারণে পৃথিবীর কৌণিক ভরবেগের যে পরিমাণ হ্রাস পায় তার চেয়ে বেশি। এটি পৃথিবীর কৌণিক ভরবেগ সামগ্রিকভাবে বৃদ্ধি করে এবং চাঁদকে পৃথিবী থেকে দূরে সরিয়ে দেয়।
চাঁদ প্রতি বছর প্রায় ১.৫ ইঞ্চি (৩.৮ সেমি) হারে পৃথিবী থেকে দূরে সরে যাচ্ছে। এই হারটি ধ্রুবক নয়, তবে এটি সময়ের সাথে সাথে পরিবর্তিত হয়। উদাহরণস্বরূপ, বর্তমানে চাঁদ পৃথিবী থেকে দূরে সরে যাওয়ার হারটি অতীতের তুলনায় বেশি।
চাঁদ পৃথিবী থেকে দূরে সরে যাওয়ার ফলে পৃথিবীর দিনের দৈর্ঘ্য বৃদ্ধি পাচ্ছে। পৃথিবীর ঘূর্ণন ধীর হওয়ার কারণে দিনের দৈর্ঘ্য বৃদ্ধি পায়। বর্তমানে পৃথিবীর দিনের দৈর্ঘ্য প্রায় ২৪ ঘন্টা। তবে, ভবিষ্যতে দিনের দৈর্ঘ্য আরও দীর্ঘ হতে পারে।