উজান থেকে নেমে আসা ঢল ও টানা বৃষ্টির কারণে কুড়িগ্রামের নিম্নাঞ্চলসমূহ প্লাবিত হয়েছে। ফলে ধরলা, তিস্তা, ব্রহ্মপুত্র, দুধকুমারসহ জেলার নদ-নদীগুলোর অববাহিকার বিস্তীর্ণ ফসলি জমি পানিতে তলিয়ে গেছে।
কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত জেলায় মোট ২৯৯ হেক্টর ফসলি জমি পানিতে তলিয়ে গেছে। এর মধ্যে বোরো ধান ১২১ হেক্টর, বাদাম ৭৫ হেক্টর, পাট ৪১ হেক্টর এবং সবজি ৪৮ হেক্টর। বিশেষ করে বাদাম চাষের জমির ক্ষয়ক্ষতি সবচেয়ে বেশি; ৭৫ হেক্টর বাদাম চাষ পুরোপুরি বিনষ্ট হয়ে যাবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
বুধবার (২১ মে) সরেজমিনে জেলার বিভিন্ন চরাঞ্চল ও নিম্নভূমি ঘুরে দেখা যায়, এখনো অনেক জমির বোরো ধান পানির নিচে রয়েছে। বাদাম, পাট, তিল, মরিচসহ অন্যান্য শাক-সবজিও ডুবে গেছে। অনেক কৃষক ধান কেটে ঘরে তুললেও পর্যাপ্ত রোদ না থাকায় তা শুকানো সম্ভব হচ্ছে না। ফলে সেই ধানও নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
রাজারহাট উপজেলার কৃষক মামুনুল ইসলাম জানান, “আমি চার একর জমিতে বোরো ধান রোপণ করেছি। এর মধ্যে দুই একরের ধান কেটে ঘরে তুলেছি, কিন্তু রোদ না থাকায় শুকাতে পারিনি। বাকি দুই একর ধান এখনো পানির নিচে। এই ধান আদৌ কাটা যাবে কিনা, তা নিয়েও সন্দেহ আছে।”
তালুককালুয়া গ্রামের আরেক কৃষক একরামুল হক বলেন, “আমার দুই একর জমির ধান কেটেছি। কিন্তু সূর্যের দেখা না মেলায় বাড়িতেই ধানগুলো নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।”
রাজারহাট উপজেলার কৃষি আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুবল চন্দ্র সরকার জানান, “চলমান বৃষ্টিপাত আরও এক-দু’দিন থাকতে পারে। এরপর আবহাওয়া কিছুটা স্বাভাবিক হবে বলে আশা করা যাচ্ছে।”
এদিকে, কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রাফিকুল হাসান জানান, “টানা বৃষ্টির কারণে নদ-নদীর পানির স্তর বেড়েছে ঠিকই, তবে এখনো জেলায় বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়নি।”