ঢাকা প্রেস
আনোয়ার সাঈদ তিতু, কুড়িগ্রাম জেলা প্রতিনিধি:-
গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের পর নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়। সেই উপদেষ্টা পরিষদে ঠাঁই হয়নি ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে প্রথম শহীদ হওয়া আবু সাইদের উত্তরবঙ্গের কোনো ব্যক্তির। এরপর দু-দফা উপদেষ্টা পরিষদের আকার বাড়ানো হলেও রংপুর ও রাজশাহী বিভাগের কোনো ব্যক্তিকেই রাখা হয়নি। এ নিয়ে নানা মনে বিভিন্ন প্রশ্ন সৃষ্টি হয়। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের ফসল বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার। অথচ, সেই সরকারের উপদেষ্টা পরিষদে একজনও নেই উত্তরের ১৬ জেলার। এটাও একধরনের বৈষম্য বলে দাবি করেছে ছাত্র-জনতার ব্যানারে আন্দোলনের প্রতিনিধিরা।
মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) বিকেলে কুড়িগ্রামে আঞ্চলিক বৈষম্য নিরসনের দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পূর্বঘোষিত উত্তরবঙ্গের ১৬ জেলায় একযোগে কর্মসূচির অংশহিসেবে কুড়িগ্রামেও অনুষ্ঠিত হয়।
সমাবেশে আব্দুল আজিজ নাহিদ বলেন, রংপুর অঞ্চল বরাবরই বৈষম্যের স্বীকার, চট্টগ্রাম এবং ঢাকা বিভাগে এতো উপদেষ্টা থাকলে রংপুরে কেন উপদেষ্টা নাই? বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের ফসল এই সরকারকে স্মরণ করে দিতে চাই, উপদেষ্টা পরিষদেই তো বৈষম্য তৈরি হয়েছে। এই বৈষম্য দূর করুন। নইলে দেশের জনগণের বিপক্ষে আন্দোলনে নামবে।
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের উদ্দেশ্যে সাদিকুর রহমান বলেন, ১৬ জেলার কোটি কোটি মানুষের ভিড়ে আপনারা কি যোগ্য মানুষে খুঁজে পান না। নাকি খুঁজে দেখেন না? আপনি খুঁজে না পেলে আমাদেরকে বলুন, আমরা যোগ্য লোক খুঁজে দেব। রংপুর অঞ্চল থেকে আমরা ড. আতিক মুজাহিদকে উপদেষ্টা হিসেবে চাই। আপনি তার খোঁজ নিতে পারেন। বর্তমান উপদেষ্টা পরিষদে যারা আছেন, তাদের তুলনায় ড. আতিক মুজাহিদ অনেক যোগ্য।
বিক্ষোভ সমাবেশে ফয়সাল আহমেদ বলেন, আবু সাঈদের রক্তের সাথে বেঈমানি আমরা মানবো না। তার রক্তের উপর বসে আছে আজকের সরকার। অথচ, তার বিভাগ রংপুর থেকে একজনকেও নেওয়া হচ্ছে উপদেষ্টা পরিষদে। রংপুর ও রাজশাহী বিভাগ থেকে ২ জন করে উপদেষ্টা দিতে হবে। এটা শুধু আমাদের দাবি নয়, এ দাবি উত্তরের ১৬ জেলার মানুষের। বক্তব্য শেষে দাবি পেশ করে তারা।
আঞ্চলিক বৈষম্য দূরীকরণে উত্তরবঙ্গের ছাত্র-জনতার ৩ দফা হচ্ছেঃ-
১. সুষম উন্নয়ন ও অর্ন্তভুক্তিমূলক নীতি প্রণয়নে উত্তরবঙ্গের দুই বিভাগ থেকে কমপক্ষে ২ জন করে ৪ জন উপদেষ্টা নিয়োগ করতে হবে।
২. সরকারের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে আমলা ও কর্মকর্তা নিয়োগে আঞ্চলিক বৈষম্য করা যাবে না। সেইসাথে প্রত্যেক উপদেষ্টাকে কার্যক্রমের অগ্রগতি সাপ্তাহিকভাবে জনসম্মুখে প্রকাশ করতে হবে।
৩. বিতর্কিত ও জুলাই বিপ্লবকে ধারণ করে না, এমন কোন উপদেষ্টাকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারে রাখা যাবে না। পলিসি প্রণয়নে উত্তরবঙ্গের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র নেতাদের পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে।
এর আগে সোমবার রাতে একই দাবিতে টিএসসি ক্যাফেটেরিয়াতে সংবাদ সম্মেলন করে উত্তরবঙ্গের সাধারণ ছাত্র-জনতা। ওই সংবাদ সম্মেলনে তারা এই তিন দফা তুলে ধরেন।