রংপুর প্রতিনিধি:-
রংপুরের পীরগাছা উপজেলার কল্যাণী ইউনিয়নে এক গৃহবধূকে গাছের সঙ্গে বেঁধে রাতভর নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। নির্যাতনের সেই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে এলাকায় তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। রবিবার সকাল পর্যন্ত ঘটনাটি নিয়ে পুলিশ কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত শুক্রবার রাতে শেফালী বেগম নামের ওই গৃহবধূকে তার স্বামী নজরুল ইসলাম ও স্বামীর প্রথম স্ত্রী আমেনা বেগম নির্মমভাবে মারধর করেন। পরে মধ্যরাতে বাড়ির উঠানে একটি গাছের সঙ্গে বেঁধে তাকে আবারও পিটিয়ে আহত করা হয়। ভোরে শেফালীর চিৎকারে প্রতিবেশীরা ছুটে এসে তাকে উদ্ধার করেন এবং ঘটনাটির ভিডিও ধারণ করে সামাজিক মাধ্যমে প্রকাশ করেন। পরে গণমাধ্যমকর্মীরা ঘটনাস্থলে গেলে স্থানীয়রা গৃহবধূর হাতের বাঁধন খুলে দেন।
ভুক্তভোগী শেফালী বেগম জানান, তার বাড়ি একই উপজেলার পাওটানা হাটের নিজতাজ গ্রামে। ২০১৪ সালে নজরুল ইসলামের সঙ্গে তার বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই স্বামী ও সতিন আমেনা প্রায়ই তাকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করতেন। এ কারণে তিনি প্রায় এক বছর ধরে আত্মীয়দের বাড়িতে ছিলেন। শুক্রবার রাতে স্বামীর বাড়িতে ফিরে এলে নজরুল দাবি করেন, তিনি শেফালীকে তালাক দিয়েছেন। তালাকনামা দেখতে চাইলে স্বামী ও সতিন মিলে তাকে নির্যাতন শুরু করেন।
স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য শাহীন মির্জা সুমন বলেন, “ঘটনাটি অত্যন্ত নিন্দনীয় ও লজ্জাজনক। একজন নারীকে এভাবে গাছের সঙ্গে বেঁধে নির্যাতন করা মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন।” তিনি জানান, ফেসবুকে ভিডিও দেখে বিষয়টি জানতে পেরে তিনি ঘটনাস্থলে গিয়ে গৃহবধূকে নিরাপদে তার আত্মীয়দের বাড়িতে পাঠিয়ে দেন।
রংপুর মেট্রোপলিটন মাহিগঞ্জ থানার ওসি আব্দুল কুদ্দুস বলেন, “সাংবাদিকদের মাধ্যমে ঘটনাটি জেনেছি। এখন পর্যন্ত ওই নারী কোনো লিখিত অভিযোগ করেননি। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”