প্রকাশকালঃ
২৩ জুলাই ২০২৩ ০১:৪৭ অপরাহ্ণ ২০২ বার পঠিত
এক বছরের বেশি সময় পর ভারতের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৬০০ বিলিয়ন বা ৬০ হাজার কোটি মার্কিন ডলার ছাড়িয়েছে। টানা তৃতীয় সপ্তাহের মতো ভারতে বিদেশ থেকে আসা বিনিয়োগের প্রবাহ বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে দেশটির রিজার্ভের পরিমাণও বেড়েছে।
টাইমস অব ইন্ডিয়া জানিয়েছে, ১৪ জুলাই পর্যন্ত ভারতের কেন্দ্রীয় ব্যাংক রিজার্ভ ব্যাংক অব ইন্ডিয়ায় (আরবিআই) বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ হিসাব করা হয়েছে ৬০৯ বিলিয়ন বা ৬০ হাজার ৯০০ কোটি মার্কিন ডলার। আরবিআইয়ের তথ্যে দেখা গেছে, গত এক সপ্তাহে ভারতের রিজার্ভ বেড়েছে ১ হাজার ২৭৪ কোটি ডলার। এটি গত চার মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ।
এর আগে সর্বশেষ ২০২২ সালের মে মাসে ৬০০ বিলিয়ন ডলারের বেশি রিজার্ভ ছিল ভারতের। সে হিসাবে দীর্ঘ ১৫ মাস পর দেশটির রিজার্ভ আবার ৬০ হাজার কোটি ডলারের ঘর ছাড়াল।
ভারতের কেন্দ্রীয় ব্যাংক যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি বন্ড কেনার পরিমাণ বাড়িয়েছে। এ ছাড়া আন্তর্জাতিক বাজারে অন্যান্য কিছু মুদ্রার দামও বেড়েছে। ভারতের মোট রিজার্ভের পরিমাণ বৃদ্ধির পেছনে এসব কারণও কাজ করেছে।
আরবিআইয়ের কাছে থাকা বৈদেশিক মুদ্রার দুই-তৃতীয়াংশের বেশি মার্কিন ডলার রাখা আছে। বাকি অর্থ রয়েছে ইউরো, ইয়েন, পাউন্ড ও চীনা মুদ্রা রেনমিনবিতে।
এর আগে প্রথমবারের মতো ভারতের রিজার্ভ ৬০০ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছিল ২০২১ সালের জুনে। ওই বছর রেকর্ড পরিমাণে প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ আসে দেশটিতে। এ কারণে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভও বৃদ্ধি পায়।
তবে ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ শুরুর পর গত বছর থেকে বৈদেশিক মুদ্রা বিনিময় বাজারে অস্থিরতা তৈরি হয়। ফলে তখন অভ্যন্তরীণ বাজার স্থিতিশীল রাখতে ডলার বিক্রি করতে বাধ্য হয় ভারতের কেন্দ্রীয় ব্যাংক। অন্যদিকে মূল্যস্ফীতির চাপে থাকা যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংক সুদের হার বৃদ্ধি করলে ভারতের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হাতে থাকা বন্ডের দাম কমে যায়। এসব কারণে ভারতের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে বড় ধরনের ধাক্কা লাগে।
তবে গত তিন মাসে বদলাতে থাকে এ চিত্র। ন্যাশনাল সিকিউরিটিজ ডিপোজিটরি লিমিটেডের তথ্যে দেখা গেছে, বিদেশি বিনিয়োগকারীরা গত তিন মাসে ভারতীয় বিভিন্ন কোম্পানির ইকুইটি কিনতে প্রায় ১৬ বিলিয়ন বা ১ হাজার ৬০০ কোটি ডলার বিনিয়োগ করেছে। ফলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক এসব বিদেশি মুদ্রা বাজার থেকে কিনে নিতে পেরেছে, যা শেষ পর্যন্ত দেশটির রিজার্ভ বাড়িয়ে দিয়েছে।
কেয়ারেটিংস নামের একটি প্রতিষ্ঠান বলছে, পাঁচ মাস ধরে ভারতে পুঁজির প্রবাহ ইতিবাচক ধারায় রয়েছে। এর বেশির ভাগই এসেছে ইকুইটি বা বিনিয়োগ হিসেবে। মুদ্রা ও বন্ডের বাজারে কম অস্থিরতা, মুদ্রার ইতিবাচক বাস্তব হার ও বিভিন্ন সূচকে প্রবৃদ্ধির ধারা থাকায় বিদেশি বিনিয়োগের চাহিদা বেড়েছে।
খবরে বলা হয়েছে, বর্তমানে ভারতের কাছে যে পরিমাণে রিজার্ভ রয়েছে, তা দিয়ে আগামী ১১ মাসের আমদানি ব্যয় মেটানো সম্ভব।
এদিকে পর্যাপ্ত রিজার্ভ ধরে রাখতে ভারত সরকার রুপির লেনদেনের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যকে উৎসাহিত করছে। ইতিমধ্যে বাংলাদেশসহ বেশ কয়েকটি দেশের সঙ্গে রুপিতে বাণিজ্যিক লেনদেন নিয়ে কাজও শুরু হয়েছে। ১১ জুলাই বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে আনুষ্ঠানিকভাবে রুপিতে বাণিজ্যিক লেনদেন শুরু হয়।