ঢাকা প্রেস নিউজ
প্রখ্যাত ইসলামী আলোচক মাওলানা মিজানুর রহমান আজহারী বলেছেন, ইসলামের শ্রেষ্ঠত্বের বাণী উগ্রবাদ বা জঙ্গিবাদ নয়, বরং বুদ্ধিবৃত্তিক ও উত্তম পন্থায় মানুষের কাছে পৌঁছাতে হবে। বিজ্ঞানের অগ্রগতি ও প্রযুক্তির সদ্ব্যবহার করে মানুষকে ইসলামের পথে আনতে হবে এবং ধাপে ধাপে সংসদকে ইসলামের নীতিমালায় আলোকিত করতে হবে। ইসলামই একমাত্র ধর্ম যা শান্তি ও কল্যাণ বয়ে আনে; অন্য কোনো পন্থা কেবল অশান্তি সৃষ্টি করে।
শুক্রবার (৩ জানুয়ারি) রাতে যশোরের পুলেরহাটে আদ-দ্বীন সকিনা মেডিকেল কলেজ মাঠে আয়োজিত তিন দিনব্যাপী তাফসিরুল কোরআন মাহফিলের সমাপনী দিনে তিনি এসব কথা বলেন।
মাওলানা আজহারী আরও বলেন, “ইসলামের আলোকে দেশকে সাজাতে হবে, কিন্তু কোনো জঙ্গিবাদ বা সন্ত্রাস সৃষ্টি হতে দেওয়া যাবে না।” তিনি সমালোচনা করে বলেন, “গত ১৫ বছরে দেশে অনেক লুটপাট হয়েছে। যেখানে অন্যান্য দেশ উন্নয়নের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে, সেখানে আমাদের দেশের সরকার লুটপাটে ব্যস্ত।” তিনি আরও বলেন, এক দল যায়, আরেক দল এসে লুটপাট করে।
সমাজের বর্তমান অবস্থা নিয়ে তিনি বলেন, “সমাজে হিংসা, বিদ্বেষ এবং বিশৃঙ্খলার বিস্তৃতি ঘটছে। এমনকি ইসরায়েল ফিলিস্তিনে নির্দয় হামলা চালাচ্ছে, যা সভ্যতাকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিচ্ছে।”
জনপ্রিয় এই ইসলামি বক্তা বলেন, “বিশ্বে জনসংখ্যা বাড়ছে, কিন্তু ভালো মানুষের সংখ্যা কমে যাচ্ছে। আমাদের আল-কোরআনের আলোকে জীবন গঠন করে উন্নত ও নৈতিক মানুষ হতে হবে।”
তাফসির পেশ করার সময় তিনি বলেন, আল্লাহ তায়ালা মানবজাতিকে সম্মান দিয়ে সৃষ্টি করেছেন এবং মহাবিশ্বের সমস্ত সৃষ্টিকে মানুষের কল্যাণে ব্যবহার করার উপযোগী করে দিয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, “আল্লাহ চাঁদ-সূর্য, গ্রহ-নক্ষত্র সবই মানুষের মঙ্গল ও কল্যাণের জন্য সৃষ্টি করেছেন এবং মানুষের শ্রেষ্ঠত্ব দান করেছেন। মানুষকে স্বাধীনভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা দিয়েছেন, যা ভালো বা মন্দ উভয় কাজে ব্যবহার করা যেতে পারে।”
সুললিত কণ্ঠে আজহারী বলেন, “মৃত্যু ছাড়া মানুষ সবকিছু জয় করতে পারে, এবং মানব সম্পদের উন্নয়ন ছাড়া কোনো দেশ উন্নত হতে পারে না।”
মাহফিলে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির খুলনা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত এবং আদ-দ্বীন ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক ডা. শেখ মহিউদ্দিন।
এর আগে বাদ মাগরিব তাফসির পেশ করেন আস সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান শায়খ আহমাদুল্লাহ।
উল্লেখ্য, আদ-দ্বীন ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে যশোরে তিন দিনব্যাপী তাফসিরুল কোরআন মাহফিলের আয়োজন করা হয়। প্রথম দিন আল্লামা মামুনুল হক ও আব্দুল হাই মুহাম্মদ সাইফুল্লাহ, দ্বিতীয় দিন মাওলানা রফিকুল ইসলাম মাদানী ও মুফতি আমির হাজমা এবং শেষ দিনে শায়খ আহমাদুল্লাহ ও মাওলানা মিজানুর রহমান আজহারী বক্তব্য প্রদান করেন।