নওগাঁয়ের অমূল্য সম্পদ কুসুম্বা শাহী মসজিদ

প্রকাশকালঃ ২০ এপ্রিল ২০২৪ ১০:৪৯ পূর্বাহ্ণ ১৬২ বার পঠিত
নওগাঁয়ের অমূল্য সম্পদ কুসুম্বা শাহী মসজিদ

নওগাঁ জেলার মান্দা উপজেলায় অবস্থিত।সুলতানী আমলের (১৫৫৮ খ্রিস্টাব্দ) স্থাপত্য নিদর্শন।নির্মাণ করেছিলেন আফগান শাসক গিয়াসউদ্দিন বাহাদুর শাহ।
 

মসজিদের দেয়ালে তোড়া হরফে 'আল মালিকু' লেখা পাথর পাওয়া যায় যা সুলতান আলাউদ্দিন হোসেন শাহের শাসনকালের (১৪৯৮-১৫২৬ খ্রিস্টাব্দ) সাথে সম্পর্কিত বলে ধারণা করা হয়।ইটের তৈরি মসজিদের দেয়ালগুলো কালো পাথরে মোড়ানো।পাঁচটি গম্বুজ বিশিষ্ট।মিহরাব অলংকৃত টেরাকোটা কারুকার্যে সমৃদ্ধ।মসজিদের উত্তর-দক্ষিণ দিকে ৫৮ ফুট লম্বা এবং ৫২ ফুট চওড়া।
 

মসজিদের সামনে ২৫.৮৩ একর বিশাল জলাশয়।মসজিদের অভ্যন্তরে উত্তর-পশ্চিম কোণে একটি উঁচু আসন রয়েছে যেখানে বসে তৎকালীন কাজী/বিচারকরা বিচার কার্য পরিচালনা করতেন বলে ধারণা করা হয়।মসজিদের সন্মুখভাগে রয়েছে তিনটি দরজা। আকারে দুইটি বড়, অন্যটি অপেক্ষাকৃত ছোট। দরজাগুলো খিলানযুক্ত মেহরাব আকৃতির। মসজিদের চার কোনায় রয়েছে চারটি মিনার। মিনারগুলো মসজিদের দেওয়াল পর্যন্ত উঁচু ও আট কোনাকার। ছাদের ওপর রয়েছে মোট ছয়টি গুম্বুজ, যা দুইটি সারিতে তৈরি। মসজিদের ভেতর পশ্চিমের দেওয়ালে তিনটি মেহরাবের ওপর ঝুলন্ত শিকল, ফুল ও লতা-পাতার কারুকাজ করা। এ কারুকার্যগুলো খুব উন্নতমানের। দ্বিতীয় সারির গম্বুজগুলো আকৃতির দিক দিয়ে ছোট। ১৮৯৭ সালে ভূমিকম্পে তিনটি গম্বুজ নষ্ট হয়েছিল।পরে প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ মসজিদটি সংস্কার করে। বর্তমানে কুসুম্বা শাহী মসজিদে নিয়মিত পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করেন মুসল্লিরা। 

 

মসজিদের সন্মুখভাগে রয়েছে খোলা প্রাঙ্গণ ও পাথর বসানো সিঁড়ি। যা দীঘিতে গিয়ে নেমেছে। মসজিদের প্রবেশ পথের কিছুটা দূরে বাক্স আকৃতির একখণ্ড কালো পাথর দেখা যায়। এটিকে অনেকে কবর বলে মনে করেন। জানা যায়, জনৈক কৃষক হাল চাষের সময় তার জমিতে পাথরটির সন্ধান পায়। সম্ভবত তার প্রচেষ্টায় পাথরটি জমি থেকে তুলে এনে রাস্তার পাশে রাখা হয়েছিল।

 

প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের আওতায় কুসুম্বা শাহী মসজিদের দেখাশোনা করেন পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহারের কাস্টোডিয়ান ফজলুল করিম। তিনি বলেন, কুসুম্বা মসজিদ প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের সংরক্ষিত পুরাকীর্তি। যেখানে প্রতিদিন বিভিন্ন স্থান থেকে দেশি-বিদেশি পর্যটকরা ঘুরতে আসেন। বিশেষ করে ছুটির দিনগুলোতে ভিড় বেশি হয়ে থাকে। তিনি আরো বলেন, সুলতানি আমলের ঐতিহাসিক এ নিদর্শন দেখতে দূরদূরান্ত থেকে যারা আসেন, তাদের থাকার সুব্যবস্থা রয়েছে। বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের রেস্ট হাউজে স্বল্প খরচে পর্যটকরা থাকতে পারেন।