‘ফ্যাট বা চর্বি’ শব্দটি পুরোটাই নেতিবাচক অনুভূতি দেয়। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে শরীরকে সচল ও সুস্থ রাখতে কিছু ফ্যাট বা চর্বির প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য। বছরের পর বছর আমরা জেনে এসেছি, চর্বি খাওয়া খারাপ। কিন্তু গবেষণার ফল বলে, খাবারে চর্বি বা ফ্যাটের উপস্থিতি হার্টের স্বাস্থ্যকর খাদ্যের অপরিহার্য অংশ।
শরীরের নানা কাজের জন্য স্বাস্থ্যকর চর্বি প্রয়োজন। যেমন কোষ উৎপাদন, ভিটামিন শোষণ, শরীরে তাপ উৎপন্ন করা, তাপ ধরে রাখার জন্যও ফ্যাট প্রয়োজন। সুতরাং বুঝতেই পারছেন, সব ফ্যাটই মন্দ নয়। কিছু স্বাস্থ্যকর, আবার কিছু স্বাস্থ্যঝুঁকির কারণ।
ফলে আপনাকেই বুঝে নিতে হবে খাবারের কোন ফ্যাটটি ভালো, আর কোনটি মন্দ।
আমাদের খাদ্যাভ্যাসে সাধারণ তিন ধরনের চর্বি থাকে। তা হলো—
জলপাই তেল, পিনাট বাটার, পিনাট, ক্যানোলা তেল, অ্যাভোকাডো, আলমন্ড বা কাঠবাদাম, নানা ধরনের বাদাম ও বাদামের তেল, শসা, নানা ধরনের বিনস, আখরোট, ভেজিটেবল অয়েল, সূর্যমুখী তেল, তিসির তেল, কালিজিরা তেল, মাছ প্রভৃতি থেকে আসে আন-স্যাচুরেটেড ফ্যাট।
সাধারণত খাবারে উপস্থিতি ফ্যাটগুলো যে সব স্বাস্থ্যঝুঁকির কারণ হয়ে দাঁড়ায়, তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো—
♦ হৃদরোগ
♦ হাইপারটেনশন বা উচ্চ রক্তচাপ
♦ ক্যান্সার
♦ ডায়াবেটিস
♦ স্থূলতা বা ওবেসিটি
তবে খাবারে বিদ্যমান ফ্যাটগুলোর মধ্যে স্বাস্থ্যসম্মত বা উপকারী ফ্যাট হলো আন-স্যাচুরেটেড বা অসম্পৃক্ত চর্বি, যা রুম টেম্পারেচারে কখনো জমে না। আন-স্যাচুরেটেড ফ্যাট রক্তের কোলেস্টেরল লেভেলকে ব্যালান্স করে, ইনফ্লামেশন কমায়, হার্টের রিদমকে স্থিতিশীল রাখে। সুস্বাস্থ্যের জন্য প্রয়োজনীয় ওমেগা-৩, ওমেগা-৬ সবই আসে এই আন-স্যাচুরেটেড ফ্যাট খাবার তালিকায় রাখার মাধ্যমে। আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশন দৈনিক ক্যালরির ৮-১০ শতাংশ আন-স্যাচুরেটেড ফ্যাট রাখার পরামর্শ দেয়।
অন্যদিকে স্যাচুরেটেড ফ্যাট ও ট্রান্স ফ্যাট দুটোই স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। স্যাচুরেটেড ও ট্রান্স ফ্যাট যত বেশি খাবেন, তত বেশি হৃদরোগ হওয়ার ঝুঁকি বাড়বে, স্ট্রোক, ক্যান্সার, উচ্চ রক্তচাপসহ অন্যান্য রক্তনালি বা কার্ডিও ভাসকুুলার রোগ হওয়ার ঝুঁকি বাড়বে। সারা দিনের খাদ্যাভ্যাসে যত বেশি তেল-চর্বি, ভাজা, ভুনা বা ডিপ ফ্রায়েড খাবার রাখবেন, তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে কিন্তু শরীরের ওজনও বাড়বে। সুতরাং পছন্দ অবশ্যই আপনার ওপর।