ঢাকা প্রেস নিউজ
বড়পুকুরিয়া কয়লাখনির প্রধান ফটকের সামনে ক্ষতিপূরণের দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ শুরু করেছেন ১২ গ্রামের ক্ষতিগ্রস্ত সাধারণ মানুষ। বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১১টায় শুরু হওয়া এই কর্মসূচিতে হাজারো নারী-পুরুষ অংশগ্রহণ করেন। আন্দোলনকারীরা জানিয়েছেন, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তারা প্রধান ফটক ছাড়বেন না। এদিকে, খনির নিরাপত্তায় পুলিশের পাশাপাশি আর্মড পুলিশ ও সেনা সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে।
ক্ষতিগ্রস্তদের সংগঠন ‘দাবি আদায় বাস্তবায়ন কমিটির’ সভাপতি মো. গোলাম মোস্তফা বলেন, বড়পুকুরিয়ার ভূ-গর্ভ থেকে কয়লা উত্তোলনের ফলে এলাকার বাড়িঘরে ফাটল দেখা দিয়েছে, দেবে যাচ্ছে ফসলি জমি, নেমে গেছে পানির স্তর। রাতে আতঙ্কে ঘুমাতে পারছেন না গ্রামবাসী। ২০২৩ সালের ৫ নভেম্বর ক্ষতিপূরণ চেয়ে খনির ব্যবস্থাপনা পরিচালক বরাবর লিখিত অভিযোগ দেওয়া হলেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এরপর ২০২৪ সালের ২২ জানুয়ারি পুনরায় অভিযোগ করা হয় এবং একই বছরের ১২ ফেব্রুয়ারি আল্টিমেটাম দেওয়া হলেও খনি কর্তৃপক্ষ কর্ণপাত করেনি। পরবর্তীতে আরও দু’দফা লিখিত আবেদন করা হয়।
তিনি আরও বলেন, আমাদের ৬ দফা দাবি মেনে না নেওয়া পর্যন্ত অবস্থান কর্মসূচি চলবে। দাবিগুলো হলো: ১. অবিলম্বে ক্ষতিগ্রস্ত বাড়িঘরের ক্ষতিপূরণ প্রদান। ২. ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তাঘাট দ্রুত মেরামত। ৩. ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার বেকার যুবকদের চাকরির ব্যবস্থা। ৪. সুপেয় পানির নিশ্চিতকরণ। ৫. কৃষকদের জমির নিচ থেকে উত্তোলিত কয়লার জন্য উৎপাদন বোনাস প্রদান। ৬. মাইনিং সিটি অথবা উন্নতমানের বাসস্থান নির্মাণ।
সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক রবিউল ইসলাম বলেন, আমাদের ন্যায্য দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত খনির প্রধান ফটকে অবস্থান করে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়া হবে।
চৌহাটি গ্রামের ক্ষতিগ্রস্ত মোসলেমা বেগম বলেন, ‘খনির কারণে আমাদের বাড়িঘর ধ্বংস হয়ে গেছে। রাতে ঠিকমতো ঘুমাতে পারছি না। ভূগর্ভের বিকট শব্দে প্রতিদিন বাড়িতে ফাটল ধরছে। কর্তৃপক্ষ ক্ষতিপূরণের আশ্বাস দিলেও এখন আর পাত্তা দিচ্ছে না।’
এ বিষয়ে বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. সাইফুল ইসলাম সরকারের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
উল্লেখ্য, বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির ভূ-গর্ভ থেকে কয়লা উত্তোলনের ফলে পার্শ্ববর্তী বৈগ্রাম, কাশিয়া ডাঙ্গা, মোবারকপুর, জব্বরপাড়া, দক্ষিণ রসুলপুর (বড়), দক্ষিণ রসুলপুর (ছোট), পূর্ব জব্বরপাড়া, চক মহেশপুর, হামিদপুর, উত্তর চৌহাটি, চৌহাটি, সাহাগ্রাম, দুর্গাপুর ও শেরপুরসহ বেশ কয়েকটি গ্রাম ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে।