হিংস্র প্রাণীগুলোও আল্লাহর তাসবিহ পাঠ করে

প্রকাশকালঃ ০৯ আগu ২০২৩ ০১:৩৭ অপরাহ্ণ ২৪২ বার পঠিত
হিংস্র প্রাণীগুলোও আল্লাহর তাসবিহ পাঠ করে

ল্লাহর সুবিশাল সৃষ্টিজগৎ তাঁর নির্দেশনা ও বেঁধে দেওয়া নিয়মে পরিচালিত হয়। কোরআনের ভাষ্যানুযায়ী নভোমণ্ডল ও ভূমণ্ডলের সব কিছু আল্লাহর তাসবিহ তথা পবিত্রতা ঘোষণা করে। ইরশাদ হয়েছে, ‘আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবীতে যা কিছু আছে সবই আল্লাহর পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করে। তিনি পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়।’ (সুরা : হাদিদ, আয়াত : ১)

প্রশ্ন হতে পারে, হিংস্র প্রাণীগুলোও কি আল্লাহর তাসবিহ পাঠ করে? উত্তর হলো, হ্যাঁ। তারাও আল্লাহর পবিত্রতা ঘোষণা করে এবং তাসবিহ পাঠ করে। পবিত্র কোরআনের ব্যাপকার্থক বাক্যগুলো হিংস্র ও হিংস্র নয়—এমন সব প্রাণীকে, এমনকি জড় পদার্থগুলোকে অন্তর্ভুক্ত করে। অর্থাৎ সৃষ্টিজগতের সব জীব ও জড় আল্লাহর তাসবিহ পাঠ করে।

এটাই আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামাতের বিশ্বাস। মহান আল্লাহ বলেন, ‘তুমি কি দেখো না যে আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবীতে যারা আছে তারা এবং উড্ডীয়মান বিহঙ্গকুল আল্লাহর পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করে? প্রত্যেকেই জানে তার ইবাদতের ও পবিত্রতা ঘোষণার পদ্ধতি এবং তারা যা করে সে বিষয়ে আল্লাহ সম্যক অবগত।’ (সুরা : নুর, আয়াত : ৪১)


উল্লিখিত আয়াতের ব্যাখ্যায় ইকরামা (রা.) বলেন, তোমাদের কেউ যেন তার বাহন ও কাপড় বিক্রি না করে। কেননা প্রতিটি বস্তুই আল্লাহর সপবিত্র প্রশংসা করে। (তাফসিরে তাবারি : ১৭/৪৫৫)

ইবরাহিম নাখয়ি (রহ.) বলেন, প্রাণ আছে বা নেই এমন সব কিছুই আয়াতের অন্তর্ভুক্ত। এমনকি দরজার চৌকাঠও আল্লাহর জিকির করে। (তাফসিরে কুরতুবি : ১০/২৬৮)


জীব ও জড় আল্লাহর সব সৃষ্টি আল্লাহর জিকির করে আপন পদ্ধতিতে। কিন্তু জ্ঞানের সীমাবদ্ধতার কারণে মানুষ তা বুঝতে পারে না। আল্লাহ বলেন, ‘সাত আকাশ, পৃথিবী এবং তাদের অন্তর্বর্তী সব কিছু তাঁরই পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করে এবং এমন কিছু নেই, যা তাঁর সপ্রশংস পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করে না; কিন্তু তাদের পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা তোমরা অনুধাবন করতে পারো না; নিশ্চয়ই তিনি সহনশীল, ক্ষমাপরায়ণ।’ (সুরা : বনি ইসরাঈল, আয়াত : ৪৪)

তবে আল্লাহ তাঁর কোনো কোনো বিশেষ বান্দাকে অন্য প্রাণী ও জড় পদার্থের ভাষা বোঝার তাওফিক দেন। যেমন আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) বলেন, আমরা খাবার খাওয়ার সময় খাবারের তাসবিহ শুনতাম। (তাফসিরে ইবনে কাসির : ৫/৭৯)

সর্বোপরি, কোনো প্রাণীর স্বভাবে হিংস্রতা থাকার অর্থ এই নয় যে প্রাণীটি আল্লাহর অবাধ্য বা মানবজাতির জন্য সার্বিক বিচারে ক্ষতিকর। কেননা পরিবেশবিজ্ঞানীদের ভাষ্য মতে, হিংস্র প্রাণীও প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আবার এসব প্রাণী থেকে উপকৃত হওয়ারও সুযোগ থাকে। যেমন সাপের বিষ থেকে ওষুধ তৈরি হওয়া, কুমিরের চামড়া দিয়ে জুতা তৈরি হওয়া ইত্যাদি। প্রাণীগুলোর হিংস্র স্বভাব আল্লাহর আনুগত্যের পথে বাধাও নয়।

আল্লাহ সবাইকে সঠিক বুঝ দান করুন। আমিন