গাজীপুরের রাজবাড়ীতে আজ বিক্ষোভ সমাবেশের ডাক দিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। সংগঠনটির নেতাকর্মীরা খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে সমাবেশস্থল, গাজীপুর সদর উপজেলার রাজবাড়ি মাঠের দিকে অগ্রসর হচ্ছেন। সংগঠনটির ফেসবুক পেজে শনিবার বেলা সাড়ে ১১টায় এ বিক্ষোভ সমাবেশের ঘোষণা দেওয়া হয়, যদিও মূল সমাবেশ বেলা দেড়টার দিকে অনুষ্ঠিত হবে বলে জানা গেছে। সেখানে কেন্দ্রীয় নেতারাও উপস্থিত থাকবেন।
গাজীপুর মহানগরের ধীরাশ্রমের দাখিণখান এলাকায় সাবেক মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকের বাড়িতে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় এ বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে। এ ঘটনার জেরে হামলাকারীদের সঙ্গে স্থানীয়দের সংঘর্ষ হয়, যাতে অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে তিনজনের অবস্থা গুরুতর বলে ধারণা করা হচ্ছে।
জাতীয় নাগরিক কমিটির প্রধান সংগঠক সারজিস আলম তার ফেসবুক পেজে লেখেন, ‘গাজীপুরে আজকেই হবে আওয়ামী সন্ত্রাসীদের শেষ দিন। আমরা আসছি...।’
স্থানীয়রা জানান, শুক্রবার সন্ধ্যার পর থেকেই আ ক ম মোজাম্মেলের বাড়ির আশপাশে কয়েকজন অচেনা লোক ঘোরাফেরা করছিলেন। হঠাৎ তারা বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভেতরে প্রবেশ করে ভাঙচুর শুরু করে। এ সময় মসজিদের মাইকে ‘ডাকাত এসেছে’ ঘোষণা দেওয়া হলে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী ও এলাকাবাসী প্রতিরোধ করতে এগিয়ে আসেন। এতে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে, যেখানে অন্তত ১৫ জন আহত হন।
আহতদের উদ্ধার করে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। গুরুতর আহত আটজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন।
গাজীপুর মহানগর পুলিশের সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আরিফুর রহমান জানান, হামলার খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায়। তবে ঘটনার প্রকৃত কারণ সম্পর্কে নিশ্চিত হতে পারেননি বলে জানান তিনি। কোনো পক্ষের সঙ্গে তখনো যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের গাজীপুর জেলার যুগ্ম আহ্বায়ক নাবওল আহমেদ অভিযোগ করেন, শুক্রবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে তাদের জানানো হয় যে, সাবেক মন্ত্রীর বাড়িতে হামলা হয়েছে এবং সেখানে কয়েকজন শিক্ষার্থী আটকা পড়েছেন। তাদের উদ্ধারের জন্য আন্দোলনের কর্মীরা সেখানে গেলে পরিকল্পিতভাবে তাদের আটকে রেখে মারধর করা হয়।
তিনি আরও দাবি করেন, শিক্ষার্থীরা ফাঁদে পড়েছে, এটি বুঝতে পেরে তারা বহুবার পুলিশের সাহায্য চেয়েছেন, কিন্তু পুলিশ প্রায় দুই ঘণ্টা পর ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। তিনি বলেন, ‘যারা হামলা চালিয়েছে, তারা সবাই আওয়ামী লীগ ও তাদের অঙ্গসংগঠনের সদস্য।’
বিক্ষোভ সমাবেশকে কেন্দ্র করে গাজীপুরে উত্তেজনা বিরাজ করছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।