মানুষের উপকারকারী মানুষই পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ মানুষ

প্রকাশকালঃ ২৭ আগu ২০২৩ ০৪:৩১ অপরাহ্ণ ২৫০ বার পঠিত
মানুষের উপকারকারী মানুষই পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ মানুষ

হাদিসের ভাষ্যমতে, মানুষের কল্যাণে কাজ করা ব্যক্তি পৃথিবীর শ্রেষ্ঠতম মানুষ। যে মানুষের উপকারে আসে না, তার ভেতরে কল্যাণ নেই। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘মানুষের বেশি বেশি উপকারকারী মানুষই শ্রেষ্ঠ মানুষ। জাবের বিন আবদুল্লাহ (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘মুমিন ভালোবাসার বন্ধনে অন্যকে যুক্ত করে এবং তাকেও ভালোবাসার বন্ধনে যুক্ত করা হয়।

যে ভালোবাসার বন্ধনে অন্যকে যুক্ত করে না এবং তাকেও ভালোবাসার বন্ধনে যুক্ত করা হয় না, তার মধ্যে কোনো কল্যাণ নেই। আর সেই মানুষই শ্রেষ্ঠ মানুষ, যে মানুষের কল্যাণে বেশি অগ্রগামী।’ (তাবারানি আওসাত, হাদিস : ৫৯৪৯)

ইবনুল কাইয়িম (রহ.) বলেছেন, ‘কোরআন-সুন্নাহ, বিবেক-বুদ্ধি, স্বভাব এবং জাতি-ধর্ম-বর্ণ-নির্বিশেষে মানবীয় অভিজ্ঞতা বলে যে সৃষ্টিকুলের প্রতিপালকের নৈকট্য অর্জন, তাঁর সৃষ্টির সঙ্গে সদাচরণ এবং তাদের উপকার সাধন সব ধরনের কল্যাণ বয়ে আনে। এর বিপরীতে মানুষের সঙ্গে অসদাচরণ এবং তাদের অপকার করলে তা সব রকমের অনিষ্টের বড় কারণ হয়ে দাঁড়ায়।


ফলত আল্লাহর নিয়ামতরাজি প্রাপ্তি এবং তাঁর গজব ও শাস্তি থেকে রক্ষা পাওয়ার ক্ষেত্রে আল্লাহ তাআলার আনুগত্য ও তাঁর সৃষ্টির উপকার সাধনের বিরাট ভূমিকা আছে।’ (আল-জাওয়াবুল কাফি, পৃষ্ঠা ৯)।

মহান আল্লাহর কাছে সবচেয়ে প্রিয় ওই ব্যক্তি, যে মানুষের বেশি উপকার করে। ইবনু ওমর (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, (১) আল্লাহর কাছে সেই ব্যক্তি সবচেয়ে প্রিয় যে মানুষের সবচেয়ে বেশি উপকার করে।

(২) আল্লাহর কাছে সবচেয়ে প্রিয় নেক আমল হলো কোনো মুসলিমকে আনন্দিত করা অথবা তার কোনো বিপদ, কষ্ট বা উৎকণ্ঠা দূর করা, অথবা তার ঋণ পরিশোধ করে দেওয়া অথবা তার ক্ষুধা দূর করা। তিনি বলেন, (৩) আমার কোনো ভাইয়ের সাহায্যের জন্য তার সঙ্গে হেঁটে যাওয়া আমার কাছে এই মসজিদে (মসজিদে নববীতে) এক মাস ইতিকাফ করার চেয়েও প্রিয়। (৪) যে ব্যক্তি তার ক্রোধ সংবরণ করবে, আল্লাহ তার দোষ-ত্রুটি গোপন রাখবেন। 


নিজের ক্রোধ কার্যকর করার সুযোগ থাকা সত্ত্বেও যে ব্যক্তি তা দমন করবে, কিয়ামতের দিন মহান আল্লাহ তার হৃদয়কে সন্তুষ্টি দিয়ে ভরে দেবেন। (৫) যে ব্যক্তি তার কোনো ভাইয়ের সঙ্গে গিয়ে তার কোনো প্রয়োজন মিটিয়ে দেবে, কিয়ামতের কঠিন দিনে যেদিন পুলসিরাতের ওপর সবার পা পিছলে যাবে, সেদিন আল্লাহ তার পা দৃঢ় রাখবেন। (সহিহুত তারগিব, হাদিস : ২৬২৩)

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বাণী, ‘আমার কোনো ভাইয়ের প্রয়োজন পূরণে তার সঙ্গে হেঁটে যাওয়া এই মসজিদে অর্থাৎ মদিনার মসজিদে আমার এক মাস ইতিকাফ করা থেকে আমার কাছে বেশি প্রিয়।’ (মাজমাউজ জাওয়ায়েদ, হাদিস : ১৩৭০৮)

এ জন্য যে ইতিকাফের উপকার ইতিকাফকারীর নিজের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে, কিন্তু মানুষের প্রয়োজনে তার সঙ্গে হাঁটার উপকার অন্য মানুষের মধ্যে সঞ্চারিত হয়, ফলে তা জনগণের জন্য নিশ্চিতভাবেই বেশি উপকারী।