ঢাকা প্রেস-নিউজ ডেস্ক:-
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) নবনির্বাচিত মেয়র বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনের শপথ গ্রহণ নিয়ে সৃষ্টি হয়েছে আইনি জটিলতা। গত ২৭ এপ্রিল গেজেট প্রকাশের পর আজ মঙ্গলবার ছিল শপথ গ্রহণের ৩০ দিনের সময়সীমার শেষ দিন। কিন্তু স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় এখনও কোনো উদ্যোগ নেয়নি।
আইনের জটিলতা ও আদালতের নির্দেশনার অপেক্ষা
স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব রেজাউল মাকছুদ জাহেদী জানিয়েছেন, হাইকোর্টে একটি রিট খারিজ হওয়ার পর শপথের প্রস্তুতি নেওয়া হলেও পরে আপিল করা হয়েছে। এখন বিষয়টি আদালতের বিচারাধীন থাকায়, আদালতের সিদ্ধান্তের আগেই শপথ গ্রহণ করানো সম্ভব নয়। তিনি আরও বলেন, “আমরা আদালতের নির্দেশনার জন্য অপেক্ষা করছি। আদালতের রায় অনুযায়ী পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”
তিনি জানান, সচিবালয়ে অগ্নিকাণ্ডের কারণে মন্ত্রণালয়ের কার্যক্রম নগর ভবনে অস্থায়ীভাবে চলছিল। তবে নতুন করে সচিবালয়ে ফিরে যাওয়ার প্রস্তুতি চলছে, যা এক-দুই দিনের মধ্যেই সম্পন্ন হবে।
আন্দোলনে উত্তপ্ত নগর ভবন
ইশরাকের সমর্থক ও ডিএসসিসির একটি বড় অংশের কর্মচারীরা টানা ১৩ দিন ধরে নগর ভবনের মূল ফটকে তালা দিয়ে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। গতকাল সোমবারও ভবনের দরজা বন্ধ ছিল, ফলে নাগরিক সেবা পুরোপুরি বন্ধ ছিল।
‘ঢাকাবাসী’ নামে আন্দোলনরত সংগঠনের প্রধান সমন্বয়কারী সাবেক সচিব মশিউর রহমান বলেন, “আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে শপথ না করালে আরও কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে।”
আইনজীবীদের চাপ ও আইনি প্রক্রিয়া
ইশরাকের পক্ষে তাঁর আইনজীবী ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন গতকাল আবারও মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছেন। এর আগে ১৭ মে-তেও একই দাবি জানিয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছিল।
তিনি বলেন, “আইন অনুযায়ী গেজেট প্রকাশের ৩০ দিনের মধ্যে শপথ নিতে হয়। এই সময়ের মধ্যে শপথ না হওয়া দুঃখজনক এবং বেআইনি। তবে এতে ইশরাকের কোনো দায় নেই, কারণ তিনি স্বেচ্ছায় শপথ নিতে চেয়েছেন। দায় সরকার পক্ষের।” তিনি জানান, শিগগিরই এ বিষয়ে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
নাগরিক ভোগান্তি ও মানববন্ধন
নগর ভবনের তালা ও সেবা বন্ধ থাকায় সাধারণ মানুষ দুর্ভোগে পড়েছেন। গতকাল জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে ‘বিক্ষুব্ধ নগরবাসী’ ব্যানারে আয়োজিত মানববন্ধনে বক্তারা দ্রুত নাগরিক সেবা চালুর দাবি জানান।
আজ চেম্বার আদালতে শুনানি
গত বৃহস্পতিবার হাইকোর্টে ইশরাকের পক্ষে দায়ের করা রিট খারিজ হয়ে যায়। এরপর সেই আদেশের বিরুদ্ধে গতকাল সোমবার আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতে আবেদন করেন আইনজীবী জহিরুল ইসলাম মুসা। আজ মঙ্গলবার এই আবেদনের শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে।
