কাইয়ুম চৌধুরী,বিশেষ প্রতিনিধি (চট্টগ্রাম):-
বন ও পরিবেশ মন্ত্রনালয়ের দাবী কোহিনুর শিপ ইয়ার্ডের ভবনটি বনায়ন আওতায় তুলাতলী মৌজা পড়েছে,ইয়ার্ডের মালিক রাজা কাসেম বলছে ফৌজদারহাট মৌজায় তাঁর ইয়ার্ড,এই দ্বন্ধে শিপ ইয়ার্ডটি গুড়িয়ে দেয় জেলা প্রশাসন।এতে ক্ষয়ত্ষতি শতকোটি টাকা দাবী করেছে ক্ষতিগ্রহস্হ রাজা কাসেম।
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড ফৌজদানহাট জেলেপাড়াস্হ কোহিনুর শিপ ইয়ার্ডে জেলা প্রশাসনে উদ্যোগে বিপুল পরিমাণ সেনাবাহিনী, র ্যাব, পুলিশ, আনসার ও ডিবি মোতায়েনের মাধ্যমে রাজা কশেমের কোহিনুর শিপ ইয়ার্ডের মূল ভবন ও স্হাপনা উচ্ছেদ শুরু করে সকাল ১০ টায়।এসময় এলাকাবাসী বাধা দিতে চাইলে আইশৃঙ্খলা বাহিনী ধাওয়া করলে এলাকাবাসী ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। এরপর জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট আল আমিনের নির্দেশে ইয়ার্ডের তিনতল মূল ভবনটি উত্তর দিক থেকে ভাংগতে শুরু করে ইস্ক্যাভেটর। এসময় পুলিশ,র্যাব,সেনাবাহিনী, আনসার গোয়েন্দ বিভাগের লোকজন উপস্হিত ছিলেন।
তবে রাজা কাশেমের দাবী আদালতে মামলা থাকার পরও গায়ের জোড়ে স্হাপনাটি উচ্ছেদে তার প্রায় ১০০ কোটি টাকা ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
জেলা প্রশাসনের ম্যাজিষ্ট্রেট আল আমিন প্রতিনিধিকে জানান, ১০নং সলিমপুর ইউনিয়নের ফৌজদারহাট উপকূলে কোহিনুর শিপ ইয়ার্ডের স্হাপনাটি ১নং খাস খতিয়ানের তুলাতুলী মৌজায় অবস্হিত। কিন্তু ইয়ার্ডের মালিক ওনার স্হাপনাটির জন্য তুলাতুলী মৌজায় তিনি কোন লিজ বা অনুমোদন নেননি,দিনি লিজ নিয়েছেন সলিমপুর মৌজার। তাই আমরা স্হাপনাটি উচ্ছেদের জন্য কার্যক্রম চালাচ্ছি। তবে তিনি সলিমপুর মৌজায় লিজ নেয়ায় আমরা ইয়ার্ডের বাকি অংশে যাচ্ছি না।
এদিকে উচ্ছেদ অভিযানের সময় বিপুল পরিমাণ সেনাবাহিনী, র্যাব,পুলিশ,আনসার,ডিবির ছাড়াও আরো উপস্হিত ছিলেন, জেলা প্রশাসন ম্যাজিষ্ট্রেট মাইনুল হোসেন,সীতাকুণ্ড মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ মজিবুর রহমান, ভাটিয়ারী ভূমি অফিসের উপ-সহকারী কর্মকর্তা মোঃ জয়নাল আবেদীন, রনকান্তি সুশীল প্রমূখ।
অপরদিকে কোহিনুর শিপ ইয়ার্ড মালিক রাজা কাশেম প্রতিনিধি কে বলেন, তারা আমার ইয়ার্ডের ভিতরে থাকা মূল্যবান জিনিসপত্র সম্পূর্ণ অন্যায় ভাবে বড় দুইটি স্ক্যাভেটর দিয়ে তিনতলা বিল্ডিংটি ভেঙ্গে তছনছ করে দেয়।অথচ জেলা প্রশাসন, পরিবশ অধিদপ্তর,ফায়ার সার্ভিস,বিস্ফোরক অধিদপ্তর ও মন্ত্রণালয়ের ছাড়পত্র এবং অনুমোদন নেয়া হয়। এ সমস্ত বিভিন্ন সংস্হা গুলো সলিমপুর মৌজায় আমার স্হাপনা দেখেই ছাড়পত্র বা অনুমোদন দেয়।স্হাপনা উচ্ছেদে তার প্রায় ১০০ কোটি টাকা ক্ষয়ক্ষতি হয় বলে জানান। বন ও পরিবেশ মন্ত্রনালয় আমার প্রতি জুলুম করেছে। সলিমপুম মৌজাকে তুলাতলী মৌজার অংশ বলে একতরফা দাবী করে আমার ইয়ার্ডটি তছনছ করে দিল।
তিনি আরো বলেন,বন ও পরিবেশ মন্ত্রনালয় একে একে চারটি মামলা করে সর্বোচ্চ আদালতে হেরে যায়,একটি মামলা তারা নিজেরায় তুলে নেয়। এরপরও একতরফা কোনপ্রকার নোটিশ ছাড়াই আজ বুধবার সকাল কয়েকমত বিভিন্ন বাহিনী নিয়ে এই অন্যায়ভাবে উচ্ছেদ করলো,ক্ষতি করলো শতকোটি টাকার সম্পদ। আমি ন্যায় বিচার চাই।
সম্প্রতি ইয়ার্ড ভূমি লিজ বিষয়ে ১৮/১০/২০২২ সালে তৎকালীন জেলা প্রশাসক মোঃ মোমিনুর রহমানের এক রিপোর্টে ইয়ার্ডের জন্য বরাদ্ধের প্রতিবেদনে দেখা যায়,সলিমপুর,ভাটিয়ারী,জাহানাবাদ,দক্ষিন,মধ্য,উত্তর সোনাইছড়ি, শিপ ইয়ার্ডের জন্য অনুমোদন করা হয়েছে।
আর উপকূলীয় বনায়নের জন্য লতিফপুর, নডালিয়া,গুপ্তাখালী, গুলিয়াখালী, সৈয়দপুর ভাটেরখীল মৌজার ৬৮১৪,৯৫৫ একর উপকূলীয় ভূমি সংরক্ষিত উপকূলীয় বনায়নের জন্য অসুমোদিত।এই শিপ ইয়ার্ডটি বনায়নের মৌজায় পড়েনি। তাই শিপ ইয়ার্ডের জন্য অনুমোদন দেয়া যেতে পারে।