জাপা ও ১৪ দল শরিকরা এখনো সংলাপে ডাক পায়নি

  প্রিন্ট করুন   প্রকাশকালঃ ২০ নভেম্বর ২০২৫ ০৩:২৪ অপরাহ্ণ   |   ৪৬ বার পঠিত
জাপা ও ১৪ দল শরিকরা এখনো সংলাপে ডাক পায়নি

নির্বাচন কমিশন (ইসি) কার্যক্রম নিষিদ্ধ জাতীয় পার্টি ও আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটের কিছু শরিক দলের বাদ দিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ শেষ করার পথে রয়েছে। যদিও ইসি কর্মকর্তারা আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানাচ্ছেন না, তবে এসব দলকে সংলাপে ডাকা হচ্ছে না, তা প্রায় নিশ্চিত।
 

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি হিসেবে ১৩ নভেম্বর থেকে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ শুরু করে ইসি। বুধবার পর্যন্ত চার দফায় মোট ৪৮টি নিবন্ধিত দলকে সংলাপে আমন্ত্রণ জানানো হয়। বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি-বিজেপি এই আমন্ত্রণে সাড়া দেয়নি। বাকি ৪৭টি দলকে নিয়ে সংলাপ শেষ হয়েছে। সংলাপ সাধারণত সকাল ও দুপুরে দুই দফায় অনুষ্ঠিত হয়।
 

ইসিতে মোট ৫৯টি দল নিবন্ধিত আছে। এর মধ্যে আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ থাকায় তাদের নিবন্ধন স্থগিত। ফ্রিডম পার্টি, ঐকবদ্ধ নাগরিক আন্দোলন ও পিডিপি’র নিবন্ধন বাতিল হয়েছে। অর্থাৎ প্রকৃত নিবন্ধিত দল সংখ্যা ৫৫। এর মধ্যে সাতটি দলের সঙ্গে এখনও সংলাপ হয়নি। জাতীয় পার্টি ছাড়াও ১৪ দলের ছয় শরিক—জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদ, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি, সাম্যবাদী দল, জাতীয় পার্টি-জেপি (মঞ্জু), তরিকত ফেডারেশন এবং গণতন্ত্রী পার্টি—এই তালিকায় আছে। ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-ন্যাপ ইতিমধ্যেই সংলাপে অংশ নিয়েছে।
 

ইসি’র কোনো কর্মকর্তা স্পষ্টভাবে জানাচ্ছেন না যে, এই সাতটি দলকে সংলাপের বাইরে রাখা হবে কিনা। তবে জ্যেষ্ঠ সচিব আখতার আহমেদ বলেছেন, “যাদের সঙ্গে মতবিনিময় করার সিদ্ধান্ত কমিশন নিয়েছিল, তাদের সঙ্গে সংলাপ সম্পন্ন হয়েছে। বর্তমানে অন্য কোনো দলের সঙ্গে মতবিনিময় জরুরি বলে মনে হয় না।”
 

সংলাপের প্রক্রিয়া শুরু হয় ২৮ সেপ্টেম্বর। প্রথমে সুশীল সমাজ, শিক্ষক, নির্বাচন বিশেষজ্ঞ ও নারী নেতাদের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। নতুন দলের নিবন্ধন প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ার পর ১৩ নভেম্বর থেকে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ শুরু হয়। চারদিনে ৪৮টি দলকে আমন্ত্রণ জানানো হয়। বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি-বিজেপি না আসায় বাকি ৪৭টি দলকে নিয়ে সংলাপ শেষ করা হয়েছে।
 

পটপরিবর্তনের পর ৫ আগস্ট থেকে আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ হওয়ায় এবং গণঅভ্যুত্থানে অংশ নেওয়া দলের দাবিতে জাতীয় পার্টি ও ১৪ দলের শরিকদেরও রাজনৈতিক নিষিদ্ধ বা নিবন্ধন বাতিলের দাবি ওঠে। কিছু দল লিখিতভাবে ইসির কাছে সংলাপে না ডাকার আবেদনও করেছে।
 

ইসি সূত্র বলছে, মূলত সব নিবন্ধিত দলকে সংলাপে ডাকার নীতি থাকলেও বিভিন্ন দলের দাবির কারণে কমিশন তা থেকে সরে এসেছে। তাই ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনের জন্য এই সাতটি দল থেকে আপাতত কোনো মতামত নেওয়া হচ্ছে না।
 

সংলাপে অংশ নেওয়া দলসমূহ:

  • ১৩ নভেম্বর: লিবারেল ডেমোক্র্যাটিক পার্টি, বাংলাদেশ কংগ্রেস, বাংলাদেশ মুসলিম লীগ, ন্যাশনাল পিপলস পার্টি, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডি, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ, বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্ট-বিএনএফ, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলন-বিএনএম। (১২টি দল)

  • ১৬ নভেম্বর: গণফোরাম, গণফ্রন্ট, ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ, ইসলামী ঐক্যজোট, বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি, বাংলাদেশ জাসদ, বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-ন্যাপ, তৃণমূল বিএনপি, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। (১১টি দল)

  • ১৭ নভেম্বর: বাংলাদেশ লেবার পার্টি, বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোট, বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি, বাংলাদেশ মুসলিম লীগ-বিএমএল, আমার বাংলাদেশ পার্টি, বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টি, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট, খেলাফত মজলিস, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি-জাগপা, জাকের পার্টি। (১২টি দল)

  • ১৯ নভেম্বর: বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, বাংলাদেশ মাইনরিটি জনতা পার্টি, ইনসানিয়াত বিপ্লব বাংলাদেশ, জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপি, গণসংহতি আন্দোলন-জিএসএ, জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলন-এনডিএম, বাংলাদেশ লেবার পার্টি, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল, গণঅধিকার পরিষদ, নাগরিক ঐক্য, বাংলাদেশ রিপাবলিকান পার্টি, বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ (মার্কসবাদী)। (১৩টি দল)