তিস্তার পানি বিপৎসীমার ওপরে, ব্যারাজের সব জলকপাট খোলা

  প্রিন্ট করুন   প্রকাশকালঃ ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১২:২৫ অপরাহ্ণ   |   ৩১ বার পঠিত
তিস্তার পানি বিপৎসীমার ওপরে, ব্যারাজের সব জলকপাট খোলা

উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও টানা বৃষ্টিপাতের কারণে তিস্তার পানি দ্রুত বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ওপরে প্রবাহিত হচ্ছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে তিস্তা ব্যারাজের সবকটি (৪৪টি) জলকপাট খুলে দেওয়া হয়েছে।
 

সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) সকাল ৬টায় নীলফামারীর ডালিয়া পয়েন্টে পানির উচ্চতা রেকর্ড করা হয় ৫২ দশমিক ১৮ সেন্টিমিটার, যা বিপৎসীমার ৩ সেন্টিমিটার ওপরে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) ডালিয়া ডিভিশনের নির্বাহী প্রকৌশলী অমিতাভ চৌধুরী।
 

পাউবো জানায়, রোববার সকাল পর্যন্ত তিস্তার পানি বিপৎসীমার ২৩ সেন্টিমিটার নিচে ছিল। দুপুরের পর তা বাড়তে শুরু করে এবং রাত ৯টার দিকে বিপৎসীমার মাত্র ৩ সেন্টিমিটার নিচে পৌঁছায়। পরবর্তীতে ভোরে পানির চাপ আরও বেড়ে সীমা অতিক্রম করে।
 

হঠাৎ পানির এই বৃদ্ধি নীলফামারীর ডিমলা ও লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার তিস্তা তীরবর্তী এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে দিয়েছে। স্থানীয়দের দাবি, ইতোমধ্যেই নদীর পাড়সংলগ্ন কিছু নিম্নাঞ্চলে পানি ঢুকতে শুরু করেছে। জনপ্রতিনিধিরা সতর্ক করে জানিয়েছেন, পানির স্তর অব্যাহতভাবে বাড়তে থাকলে চরাঞ্চল ও নিম্নভূমি প্লাবিত হয়ে ফসলি জমি ও বসতঘর ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। ইতোমধ্যে অনেক পরিবার গবাদিপশু ও প্রয়োজনীয় সামগ্রী নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিচ্ছে।
 

ডিমলার টেপাখড়িবাড়ি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রবিউল ইসলাম বলেন, “তিস্তায় পানি ক্রমেই বাড়ছে। এখনও ঘরবাড়ি প্লাবিত হয়নি, তবে গ্রামবাসী আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে।”
 

পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী অমিতাভ চৌধুরী জানান, উজানে ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলের কারণে তিস্তার পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। সকাল ৬টা থেকে তা বিপৎসীমার ওপরে প্রবাহিত হচ্ছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ব্যারাজের সব জলকপাট খোলা রাখা হয়েছে।
 

এদিকে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র (বাপাউবো) জানিয়েছে, ১৪ থেকে ১৭ সেপ্টেম্বরের মধ্যে রংপুর বিভাগের প্রধান নদীগুলোর পানি আরও বাড়তে পারে। বিশেষ করে তিস্তা ও দুধকুমার নদীর পানি বিপৎসীমা অতিক্রমের আশঙ্কা রয়েছে। এতে লালমনিরহাট, নীলফামারী, রংপুর ও কুড়িগ্রামের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ার ঝুঁকি তৈরি হতে পারে। নদীপাড়ের মানুষকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।