দীর্ঘ ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে সাগরে মাছ ধরতে প্রস্তুত মৎস্যজীবীরা
প্রকাশকালঃ
২২ জুলাই ২০২৩ ১২:৫১ অপরাহ্ণ ১৯৩ বার পঠিত
দীর্ঘ ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে আবারও সাগরে মাছ ধরতে প্রস্তুত মৎস্যজীবীরা। আগামীকাল রবিবার রাত ১২টার পর থেকে সাগরে মাছ ধরা শুরু করবেন জেলেরা। প্রস্তুত করা হচ্ছে নৌযান ও জাল। সাগরে থাকার সময়ের খাবার, পানিসহ আনুষঙ্গিক জিনিসপত্র সংগ্রহ করছেন মৎস্যজীবীরা।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন ও মৎস্য সম্পদ সংরক্ষণে ২০ মে থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত মোট ৬৫ দিন দেশের সামুদ্রিক জলসীমায় সব ধরনের মাছ ধরা নিষিদ্ধ থাকে। নিষেধাজ্ঞার এই সময়ে বেকার হয়ে পড়া সমুদ্রগামী জেলেদের খাদ্য সহায়তা হিসেবে ৮৬ কেজি করে চাল দেয় সরকার।
চট্টগ্রামে সামুদ্রিক মৎস্য দপ্তরের পরিচালক মুহাম্মদ জিল্লুর রহমান কালের কণ্ঠকে বলেন, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুরসহ দেশের ১৪টি উপকূলীয় জেলা ও ৬৫টি উপজেলা এবং চট্টগ্রাম নগরী এলাকায় প্রায় পাঁচ লাখ মৎস্যজীবী রয়েছেন, যাঁরা সাগরে মাছ শিকারে যান। এই মৎস্যজীবীরা প্রায় ৬৮ হাজার মেকানাইজড ও আরটিসনাল নৌযান এবং ২৬২টি ইন্ডাস্ট্রিয়াল বোটের মাধ্যমে সাগর থেকে মাছ আহরণ করেন।
সামুদ্রিক মৎস্য আহরণকারী বোট মালিক সমিতির মহাসচিব আমিনুল হক বাবুল সরকার অভিযোগ করে কালের কণ্ঠকে বলেন, সামুদ্রিক মৎস্য আইন কার্যকর হয় শুধু চট্টগ্রাম, নোয়াখালী ও কক্সবাজার জেলায়। দেশের অন্য কোনো উপকূলীয় জেলা বা উপজেলায় এর কার্যকারিতা নেই। চট্টগ্রামে নৌবাহিনী, কোস্ট গার্ড, নৌ পুলিশসহ প্রশাসনের সবাই তৎপর।
মহাসচিব বলেন, ‘প্রশাসনের সঙ্গে বিভিন্ন সময় বৈঠকে আমরা ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা সময়কে ৩০ দিনে নামিয়ে আনার দাবি জানিয়েছি। বলেছি সময় কমান, আইনের যথাযথ প্রয়োগ করুন। কিন্তু আমাদের কথা কেউ শোনে না।’
এ ব্যাপারে সামুদ্রিক মৎস্য দপ্তরের পরিচালক জিল্লুর রহমান বলেন, ‘আইন তো সারা দেশের জন্য। ৭১০ কিলোমিটারের উপকূলীয় এলাকা নিয়ন্ত্রণ করা সত্যিই কঠিন। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী ও প্রশাসনের লোকদের ফাঁকি দিয়ে অনেকেই সাগরে মাছ মারতে যান।’
নিষেধাজ্ঞার সময় ৩০ দিনে নামিয়ে আনার বিষয়ে জিল্লুর রহমান বলেন, ‘সাগরে একেক মাছের প্রজননের সময় ভিন্ন। এই বিষয়টিকে সমন্ব্বয় করে ৬৫ দিন নির্ধারণ করা হয়েছে। আমাদের পাশের দেশ ভারতে ৬১ দিন এবং মিয়ানমারে ৯০ দিন নির্ধারিত। সাগর আমাদের। কিন্তু সাগরের জন্য যখন কোনো আইন তৈরি করা হয় সেটা আন্তর্জাতিক আইনে পরিণত হয়ে যায়।’
এদিকে বাগেরহাটের শরণখোলাসহ উপকূলজুড়ে চলছে সাজ সাজ রব। নিষেধাজ্ঞার ফলে মৎস্য আহরণ বন্ধ থাকায় জেলে শ্রমিকরা দীর্ঘদিন অলস সময় কাটিয়ে আবার ফিরতে শুরু করেছেন মহাজনদের আড়তে। জেলেপল্লীগুলোতে ফের শুরু হয়েছে কর্মচঞ্চলতা।
শরণখোলা উপজেলার জ্যেষ্ঠ মৎস্য কর্মকর্তা বিনয় কুমার রায় বলেন, জেলেরা চালের পাশাপাশি অন্যান্য সুবিধা পাওয়ার যে দাবি জানিয়েছেন, তা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হবে।