ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিতে সদস্যরাষ্ট্রকে আহ্বান জাতিসংঘের
প্রকাশকালঃ
০৫ জুন ২০২৪ ০৩:৩১ অপরাহ্ণ ১৫৭ বার পঠিত
ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিতে সব সদস্যরাষ্ট্রকে আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘের একটি বিশেষজ্ঞ দল। স্পেন, আয়ারল্যান্ড ও নরওয়ে ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি প্রদানের এক সপ্তাহ পর এই আহ্বান জানাল জাতিসংঘের এই দলটি। জাতিসংঘের ফিলিস্তিন অঞ্চলের মানবাধিকারবিষয়ক বিশেষ দূত ফ্রান্সেসকা অ্যালবানিজও রয়েছেন জাতিসংঘের এই উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিদলটিতে। এদিকে গাজায় ইসরায়েলি হামলায় আরও চার জিম্মির মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গেছে।
সোমবার এক বিবৃতিতে বিশেষজ্ঞরা বলেন, গত দশকের পর দশক ধরে ফিলিস্তিনের জনগণ তাদের মুক্তি ও স্বাধীনতার দাবিতে যে ন্যায্য আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন, তাকে আরও গতিশীল করবে এই স্বীকৃতি। কেননা ফিলিস্তিন এবং পুরো মধ্যপ্রাচ্যে স্থায়ী শান্তি স্থাপনের পূর্বশর্ত হলো রাফায় সামরিক অভিযান বন্ধ করা এবং গাজায় শিগগিরই যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করা; আর ফিলিস্তিন এবং ইসরায়েল গত প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে যে নিরাপত্তাহীনতা, সহিংসতার মুখোমুখি হচ্ছে—তা থেকে বেরিয়ে আসার একমাত্র এবং আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত পথ হলো দ্বিরাষ্ট্র সমাধান। ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান সেই দ্বিরাষ্ট্র সমাধানেরই প্রাথমিক ধাপ বলে তারা উল্লেখ করনে। জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞ প্যানেলের এই বিবৃতি সম্পর্কে মন্তব্য চেয়ে ইসরায়েলের জাতিসংঘ মিশনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
অন্যদিকে সদ্য ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দানকারী স্পেন, আয়ারল্যান্ড এবং নরওয়ের কর্মকর্তারা বলেছেন, এখন থেকে গাজায় যুদ্ধবিরতির জন্য প্রচেষ্টার মাত্রা আরও বাড়াবে এই তিন দেশ। পাশাপাশি তারা বলেছেন, ইউরোপের দেশগুলোর জোট ইউরোপীয় ইউনিয়নও (ইইউ) যেন ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয়—সে লক্ষ্যেও তত্পরতা চালাবেন তারা। এদিকে গাজার দক্ষিণাঞ্চলের খান ইউনিসে ইসরায়েলি বাহিনীর অভিযানের সময় হামাসের হাতে থাকা জিম্মিদের মধ্য থেকে আরও চার জনের মৃত্যু হয়েছে। ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে।
বর্তমানে তাদের মরদেহ হামাসের জিম্মায় রয়েছে। নিহত চারজন হলেন—ব্রিটিশ-ইসরায়েলি নাদাভ পোপেলওয়েল (৫১), চেইম পেরি (৭৯), ইয়োরাম মেতজার (৮০) এবং আমিরাম কুপার (৮৫)। ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর মুখপাত্র ড্যানিয়েল হাগারি বলেন, কয়েক সপ্তাহ ধরে সংগ্রহ করা গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে এই চার ব্যক্তির মৃত্যুর খবর জানা গেছে। গত মাসে হামাস জানিয়েছিল, গাজায় গত এপ্রিলে ইসরায়েলি হামলায় নাদাভ পোপেলওয়েল নামে এক জিম্মির মৃত্যু হয়েছে। ওই সময় যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র দপ্তর জানায়, হামাসের এমন দাবি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। যদিও পরে আর কখনোই ব্রিটিশ ইসরায়েলি নাদাভ পোপেলওয়েলের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করে জানানো হয়নি। নাদাভসহ বাকি তিন জনকে গত বছরের ৭ অক্টোবর গাজার পাশের কিবুতজেস এলাকা থেকে জিম্মি করে হামাস।
জিম্মি এবং নিখোঁজদের পরিবার ফোরাম এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, এই মৃত্যুর খবর শোনার পর প্রত্যেক নেতাকে গভীর আত্মা-অনুসন্ধান করা উচিত। চাইম, ইয়োরাম, আমিরাম এবং নাদাভকে জীবিত অপহরণ করা হয়েছিল। তারা অন্য জিম্মিদের সঙ্গে ছিল যারা আগের চুক্তিতে মুক্তি পেয়েছিল। এই চার জনেরও তাদের দেশে এবং তাদের পরিবারের কাছে জীবিত ফিরে আসা উচিত ছিল। যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র সচিব ডেভিড ক্যামেরন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের এক পোস্টে বলেছেন, তিনি নাদাভ পপলওয়েলের মৃত্যুর কথা শুনে অত্যন্ত ব্যথিত, এই ভয়ংকর সময়ে তিনি নাদাভের প্রিয়জনদের সঙ্গে সমব্যথী। অন্যদিকে গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর চলমান নির্বিচার হামলায় এখন পর্যন্ত ৩৬ হাজারের বেশি মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে।