সারা দেশে শুরু হয়েছে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা। এই পরীক্ষাকে বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়। তাই পরীক্ষার্থীর স্বাস্থ্য ঠিক রাখার জন্য পরীক্ষার অনেক দিন আগ থেকেই পারিবারিকভাবে পরীক্ষার্থীর বিশেষ যত্ন নেওয়া হয়। বেশি বেশি পড়ালেখায় উৎসাহ দেওয়া হয়। এমনকি পরীক্ষার প্রথম দিন পরীক্ষার্থীকে সালামিও দেওয়া হয়।
তবে কিছু পরিবারে পরীক্ষার দিনগুলোতে পরীক্ষার্থীকে ডিম খেতে দেওয়া হয় না। কেননা সমাজে প্রচলিত আছে, পরীক্ষার দিন সকালে ডিম খেলে পরীক্ষার্থীর পরীক্ষা খারাপ হবে, সে পরীক্ষায় ডিম বা গোল্লা পাবে। সমাজে প্রচলিত এই কথাটি কোনো কোনো মানুষকে এতটাই প্রভাবিত করে যে পরীক্ষার দিন তারা তাদের সন্তানকে কোনো অবস্থাতেই ডিম খেতে দেবে না।
এখন প্রশ্ন হলো, এ রকম ভিত্তিহীন কথা বিশ্বাস করা কি ইসলামের দৃষ্টিতে জায়েজ? ডিমের মতো একটি হালাল খাদ্যকে পরীক্ষার দিন খাওয়া অশুভ মনে করার কোনো সুযোগ কি ইসলামে আছে? এর উত্তর হলো, না। ইসলামের দৃষ্টিতে কোনো জিনিসকে অশুভ লক্ষণ মনে করার সুযোগ নেই। হাদিস শরিফে ইরশাদ হয়েছে,
আফফান (রহ.) থেকে বর্ণিত, সালীম ইবনে হাইয়ান আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণনা করেন, রাসুল (সা.) বলেছেন, (আল্লাহর হুকুম ছাড়া) রোগের কোনো সংক্রমণ নেই, কুলক্ষণ বলে কিছু নেই, পেঁচা অশুভের লক্ষণ নয়, সফর মাসের কোনো অশুভ নেই। কুষ্ঠ রোগী থেকে দূরে থাক, যেভাবে তুমি বাঘ থেকে দূরে থাক। (বুখারি, হাদিস : ৫৭০৭)
মানুষের কল্যাণ-অকল্যাণ মহান আল্লাহর হাতে। কোনো বস্তু বিশেষ মানুষের কল্যাণ-অকল্যাণ করতে পারে না। তাই কোনো মুসলমান কোনো বস্তুকে অকল্যাণকর বলে বিশ্বাস করতে পারে না। অশুভ মনে করতে পারে না। হাদিসে কোনো কিছু অশুভ মনে করার ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা এসেছে।
আনাস (রা.) বলেন, নবী (সা.) বলেছেন, ...কোনো কিছুকে অশুভ মনে করাও ঠিক নয়। (আবু দাউদ, হাদিস : ৩৯১৬)
অতএব পরীক্ষার দিন সকালে ডিম খাওয়াকে অশুভ বলে বিশ্বাস করার সুযোগ নেই। এটা নিছক কুসংস্কার। ইসলামে কুসংস্কারের কোনো স্থান নেই। যারা কুসংস্কার বিশ্বাস করবে, তারা মূলত নবীজি (সা.)-এর নির্দেশনা অমান্য করবে। যার পরিণতি ভয়াবহ। মহান আল্লাহ সবাইকে এ ধরনের বিশ্বাস থেকে দূরে থাকার তাওফিক দান করুন। আমিন।