জয় বাংলা ক্লাবের সভাপতি এখন বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের যুগ্ম আহ্বায়ক

  প্রিন্ট করুন   প্রকাশকালঃ ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ০৬:২০ অপরাহ্ণ   |   ৬৬ বার পঠিত
জয় বাংলা ক্লাবের সভাপতি এখন বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের যুগ্ম আহ্বায়ক

কুয়াকাটা (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি:-

 

পটুয়াখালীর মহিপুর থানার জয় বাংলা ক্লাবের সভাপতি এবং বঙ্গবন্ধু স্মৃতি সংসদ ও বঙ্গবন্ধু স্মৃতি পাঠাগারের কলাপাড়া উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মো. রাকিব মুসুল্লি এখন সাভার উপজেলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের যুগ্ম আহ্বায়ক পদ পেয়েছেন। গত শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) অনুষ্ঠিত সভায় নতুন কমিটি ঘোষণা করা হয়, এবং তাতে তাকে যুগ্ম আহ্বায়ক করা হয়। এ ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোচনা ও সমালোচনা শুরু হয়েছে।
 

জানা গেছে, পটুয়াখালী-৪ (কলাপাড়া-রাঙ্গাবালী) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও প্রতিমন্ত্রী অধ্যক্ষ মহিবুর রহমান এবং তার স্ত্রী কলাপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক ফাতেমা আক্তার রেখার ঘনিষ্ঠ ছিলেন রাকিব মুসুল্লি। তিনি সাবেক প্রতিমন্ত্রী মহিবুর রহমান প্রতিষ্ঠিত ‘জয় বাংলা ক্লাব’-এর মহিপুর থানার সভাপতি এবং বঙ্গবন্ধু স্মৃতি সংসদ ও বঙ্গবন্ধু স্মৃতি পাঠাগারের কলাপাড়া উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক। রাকিবের বাবা মো. মজিবর মুসুল্লি কুয়াকাটা পৌর কৃষক লীগের সাবেক সভাপতি ছিলেন।
 

স্থানীয়দের অভিযোগ, রাকিব মুসুল্লি ছাত্রলীগের ছত্রছায়ায় সমাজসেবা সংগঠনের নামে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন গড়ে তোলেন, যার আড়ালে তিনি চাঁদাবাজি করতেন। অভিযোগ রয়েছে, তিনি স্থানীয় ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষকে এই সংগঠনে অর্থ দিতে বাধ্য করতেন। এছাড়া বিএনপি ও জামায়েতপন্থি ব্যবসায়ীদের মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে হয়রানি করতেন রাকিব।
 

গত বছরের ৫ আগস্ট দেশে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর, আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গসংগঠনের অনেক নেতাকর্মীর মতো রাকিবও এলাকা ছেড়ে ঢাকার সাভারে আশ্রয় নেন এবং সেখানে ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’-এর সাথে যুক্ত হন। সবশেষ সাভার উপজেলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের যুগ্ম আহ্বায়ক পদে আসীন হন।
 

এ বিষয়ে আলিপুরের বাসিন্দা ব্যবসায়ী মো. আল সাঈদ বলেন, “আমার পরিবার বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত, তবে আমাদের সঙ্গে কোনো মানুষের বিরোধ নেই। শুধু বিএনপি করার অপরাধে রাকিব মুসুল্লি আমার নামে বেশ কয়েকটি মামলা করে। সে নিয়মিত নানা মানুষের কাছ থেকে টাকা আদায় করত।”
 

এ প্রসঙ্গে রবীন্দ্র সৃজনকলা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান সমন্বয়ক ও সম্মিলিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় বৃহত্তর উত্তরের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা আবু সালেহ অমি বলেন, “জুলাই আন্দোলনে ছাত্র-জনতা তাদের জীবন দিয়ে এই দেশকে ফ্যাসিস্ট মুক্ত করেছে। ফ্যাসিস্টের একজন দোসর কীভাবে এমন গুরুত্বপূর্ণ পদ পেল? আমরা কেন্দ্রীয় সমন্বয়কদের কাছে ৩৬ ঘণ্টার মধ্যে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।”
 

বিষয়টি নিয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য রফিকুল ইসলাম জানান, “আমরা খোঁজ নিচ্ছি। যদি প্রমাণিত হয় যে তিনি ফ্যাসিস্টের দোসর, তাহলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
 

তবে, রাকিবের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তা বন্ধ পাওয়া যায়।