ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলোচনা হতে পারে আলুর দাম কমাতে

প্রকাশকালঃ ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ০৪:৩৭ অপরাহ্ণ ১৮৮ বার পঠিত
ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলোচনা হতে পারে আলুর দাম কমাতে

দাম নিয়ন্ত্রণে সরকার গত বৃহস্পতিবার আলু, ডিম ও পেঁয়াজের দাম বেঁধে দিয়েছে। কিন্তু নির্ধারিত দামে এসব পণ্য বিক্রি হচ্ছে না। ব্যবসায়ীরা বলছেন, দাম বেঁধে দিয়ে বাজার নিয়ন্ত্রণ সম্ভব নয়। এ নিয়ে গতকাল মুঠোফোনে কথা বলেছে তিন খাতের তিন ব্যবসায়ীর সঙ্গে।

সরকার ভোক্তাদের কম দামে আলু সরবরাহ করতে দাম বেঁধে দিয়েছে। তবে মুক্তবাজার অর্থনীতিতে এভাবে দাম বেঁধে দিয়ে বাজার নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়। দাম নিয়ন্ত্রণে সরকারের অন্য কার্যকর পন্থা অবলম্বন করা উচিত হবে।


আলুর মূল্যবৃদ্ধির মূল কারণ না খুঁজে হিমাগারমালিক ও ব্যবসায়ীদের দায়ী করা ঠিক হচ্ছে না। দাম বেঁধে দিলে বা ব্যবসায়ীদের শাস্তি দিলে বাজারে দীর্ঘ মেয়াদে সরবরাহব্যবস্থা নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা থাকে।

বর্তমানে হিমাগারগুলোতে যে পরিমাণে আলু রয়েছে, তার প্রায় ৪০ ভাগ কৃষকদের, বাকিটা মজুতদার-আড়তদারদের। কৃষকের আলুর ১৫ শতাংশ বীজ আলু। সরকারের বেঁধে দেওয়া দামে আলু বিক্রি করলে হিমাগার পর্যায়ের ব্যবসায়ীরা বস্তাপ্রতি ৫০০ টাকার মতো অতিরিক্ত মুনাফা থেকে বঞ্চিত হবেন। বিষয়টি তাঁরা মানতে পারছেন না। এ কারণে দুই দিন ধরে কৃষক ও আড়তদারেরা আলু বিক্রি একপ্রকার বন্ধ রেখেছেন। ফলে তাঁরা আলু বিক্রি না করলে আমরা তো বাধ্য করতে পারি না।

২০২০ সালে সরকার একইভাবে আলুর দাম বেঁধে দিয়েছিল। তখনো দাম নিয়ন্ত্রণ করা যায়নি। সরকার বর্তমানে হিমাগারে থাকা আলু নিলাম করার কথাও বলেছে। কিন্তু নিলাম করলে সেই আলু তো মজুতদার-আড়তদারেরাই কিনবেন।


সরকার আলু আমদানির কথাও বলছে। আমদানি করলে দাম হয়তো কমে আসবে। তবে তাতে ব্যবসায়ীদের ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। সে ক্ষেত্রে তাঁরা আলুর ব্যবসা থেকে সরে এলে এবং কৃষকেরা আলু উৎপাদন কমিয়ে দিলে সরবরাহ–সংকট তৈরি হবে। সরকার বছরের শুরুতে আলু কিনে ক্রমান্বয়ে বাজারে ছাড়লে দাম নিয়ন্ত্রণে থাকবে। কিন্তু আগামী মৌসুমের আগপর্যন্ত সেই সুযোগ নেই।

ফলে দোষারোপ করে, আঙুল দেখিয়ে চলমান সংকটের সমাধান হবে না। সরকার এখন যেসব ব্যবস্থা নিচ্ছে, তা গত জুলাই মাসের মধ্যেই নেওয়া উচিত ছিল। তাতে দাম নিয়ন্ত্রণে থাকত। বর্তমান পরিস্থিতিতে সরকারকে বাস্তবসম্মত উপায়ে যেতে হবে। আমাদের কাছে হিমাগারে আলু রাখা ব্যবসায়ীদের তালিকা রয়েছে। স্থানীয় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে আলু ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলোচনা করে দাম কমানোর চেষ্টা করা উচিত হবে। এ ছাড়া অন্য কোনো ভালো উপায় আমি দেখি না