প্রকাশকালঃ
১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১২:১৫ অপরাহ্ণ ৩০৮ বার পঠিত
‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি, আমি কি ভুলিতে পারি।’ অমর একুশে বাংলাদেশের একটি জাতীয় দিবস যা ভাষা আন্দোলনের শহীদদের স্মরণে পালিত হয়। এই দিনটিতে, বাঙালিরা তাদের মাতৃভাষার প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে এবং তাদের জীবনের জন্য আত্মত্যাগ করা শহীদদের স্মরণ করতে একত্রিত হয়।
ভাষা আন্দোলন ১৯৫২ সালে ঘটেছিল যখন পাকিস্তান সরকার উর্দুকে একমাত্র রাষ্ট্রভাষা হিসেবে ঘোষণা করে। বাঙালিরা এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে এবং তাদের মাতৃভাষার অধিকারের জন্য প্রতিবাদ করে। ২১ ফেব্রুয়ারি, পুলিশ প্রতিবাদকারীদের উপর গুলি চালায়, বরকত, রফিক, সালাম সহ বেশ কয়েকজন নিহত হয়। একুশের দিন, বাঙালিরা সাধারণত সাদা-কালো পোশাক পরে। এই রঙগুলি শোক এবং ত্যাগের প্রতীক। অনেকেই শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে ভাষা আন্দোলনের স্মৃতিস্তম্ভ শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে যান। সারা দেশে অনুষ্ঠান এবং মিছিলের আয়োজন করা হয়।
একুশে ফেব্রুয়ারির সঙ্গে শুধু বাংলা ভাষার সম্পর্কের কথা বললে বড় ধরনের ভুল হয়ে যাবে। এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে বাঙালির ইতিহাস, ঐতিহ্য, সর্বোপরি বাঙালিয়ানা। তাই এ দিনের সাজে অবশ্যই ভাষা এবং দেশের প্রতি ভালোবাসা থাকা উচিত। দিবসটি ঘিরে আমাদের দেশে হয়ে থাকে নানা আয়োজন। বাদ যায় না সাজ-পোশাকও। এ দিনের সাজসজ্জায় প্রাধান্য পেয়ে থাকে সাদা-কালো ও লাল রঙ।
পোশাকের অনুষঙ্গ হিসেবে বরাবরের মতো এবারও মেয়েদের জন্য বাজারে এসেছে সাদা-কালোর সমন্বয়ে তৈরি বিভিন্ন সালোয়ার কামিজ। পাশাপাশি সাদা-কালো কিংবা লালের পটভূমিতে একুশের বর্ণমালাকে ধারণ করা শাড়িতে রয়েছে সুতির প্রাধান্য। একুশের পথ বেয়ে অর্জিত হয় লাল-সবুজের বাংলা। এ দুই রংয়ের আনাগোনাও আমাদের একুশের সাজে বেশ লক্ষ্য করা যায়। দেশীয় প্রতিষ্ঠানগুলো বেশিরভাগই কালো-সাদা পোশাক তৈরি করেছে।
এদিন যারা শহীদ মিনারে যাবেন, তাদের একটু প্রস্তুতি দরকার। মেয়েরা চুলে সাদামাটা বেণী বা খোঁপা করতে পারেন। চোখে কালো আইশ্যাডো ব্যবহার করাই জুতসই। এরপর আইভ্রুর ঠিক নিচে সিলভার হাইলাইটার দিন। যারা কাজল ব্যবহার করেন তারা শহীদ দিবসের সাজের সঙ্গে তা যুক্ত করে নিতে পারেন। ঠোঁটে হালকা স্বাভাবিক রংয়ের লিপস্টিক ব্যবহার করুন।
নেইলপলিশে এখন বিভিন্ন রং ব্যবহার হয়। এদিন নখে কালো নেইলপলিশের ওপর সাদা রং দিয়ে এঁকে নিতে পারেন বাংলার বিভিন্ন বর্ণ। লুকটা হওয়া চাই ন্যাচারাল। সাজে যেন কোনো বাহার না থাকে। ছেলেরা মাথায় পরতে পারেন বাংলাদেশ পতাকার রংয়ের কোনো ফেট্টি কিংবা হাতে লাল-সবুজের কোনো ব্রেসলেট। এটিও আমাদের বাঙালিত্ব পরিচয় ফুটিয়ে তুলে।
অমর একুশের পোশাকে ব্যবহৃত রং, কাপড়, নকশায় উজ্জ্বল হওয়া চায় ভাষা আন্দোলনের মহিমা। পোশাকে যুক্ত হতে পারে একুশের গান, কবিতা, স্লোগান ও বাংলা ভাষায় রচিত বিভিন্ন পংক্তিমালা। এর বাইরে শহীদ মিনার, মানচিত্র, পতাকাসহ একুশের বিভিন্ন চিত্রের নান্দনিক প্রকাশও ঘটাতে পারেন।ছোট-বড় সবার গালে রং তুলির ছোঁয়ায় লেখা বর্ণমালা এবং একুশের মিনারও হতে পারে সাজের অনুষঙ্গ। ছোট ছেলেরা পরতে পারে লাল-সবুজ পাজামা-পাঞ্জাবি। মাথায় বাঁধতে পারে পতাকা। ছোট মেয়েরা লাল-সবুজ শাড়ি কিংবা সালোয়ার-কামিজ পরতে পারে।