আহত শিক্ষার্থীরা হলেন— ফিন্যান্স বিভাগের ২০২১–২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী আল ফারাবী, ২০২৩–২৪ শিক্ষাবর্ষের তাহমিদ আহমেদ বখশী, এবং নাট্যকলা বিভাগের একই বর্ষের মোহাম্মদ মিনহাজ। এর মধ্যে আল ফারাবী পূর্বে নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের মাদার বখশ হল শাখার দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা ছিলেন, যিনি গত ১৫ জুলাই জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় সংগঠন থেকে পদত্যাগের ঘোষণা দেন।
প্রত্যক্ষদর্শী ও প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, রাতের খাবারের সময় ১০–১৫টি মোটরসাইকেলে করে মুখোশ ও হেলমেট পরা দুর্বৃত্তরা হোটেলে ঢুকে একজনের ছবি দেখিয়ে তাকে শনাক্ত করার চেষ্টা করে। কিছুক্ষণের মধ্যেই তারা হাতুড়ি, রড, রামদা ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি হামলা চালায় এবং আল ফারাবী ও বখশীকে জোরপূর্বক তুলে নিয়ে যায়।
রাত পৌনে ১২টার দিকে ফারাবীকে বিনোদপুর বেতার মাঠের পাশে এবং বখশীকে বিশ্ববিদ্যালয়ের হবিবুর রহমান হলের সামনে থেকে উদ্ধার করা হয়। দুজনের শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়। আল ফারাবী বর্তমানে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে ২২ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি রয়েছেন। বখশী বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসাকেন্দ্রে চিকিৎসা নিয়েছেন। মিনহাজও রামেকে চিকিৎসা নেন।
এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন,
“খাবার খাওয়ার সময় মুখোশ ও হেলমেটপরা কয়েকজন আমাদের মাঝে একজনের খোঁজ করে। এরপর হঠাৎ হামলা শুরু করে এবং দুজনকে তুলে নিয়ে যায়।”
তামজিদ আহমেদ বখশী জানান,
“তারা আমাকে পিটিয়ে রিকশায় তুলে নিয়ে সুইটের মোড়ের দিকে নিয়ে যায়। অন্ধকারে বসিয়ে নানা প্রশ্ন করে। পরে আমাকে মোল্লা স্কুলের কাছে রেখে চলে যায়।”
আল ফারাবী বলেন,
“হামলার পর আমাকে টেনে নিয়ে যায় এবং পথে পিটিয়ে বেতার মাঠের পাশে ফেলে রেখে যায়।”
রামেক হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. শংকর কে. বিশ্বাস জানান,
“তিন শিক্ষার্থী চিকিৎসা নিয়েছেন। তাদের শরীরে কালসিটে ও আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক মাহবুবর রহমান বলেন,
“হামলা ও অপহরণের ঘটনাটি উদ্বেগজনক। দুজনকে উদ্ধার করা হয়েছে, তারা বর্তমানে চিকিৎসাধীন।”
মতিহার থানার ওসি আব্দুল মালেক জানান,
“অভিযান চলছে। বিস্তারিত তদন্তের পর জানানো হবে।”
ঘটনার পর রাত সাড়ে ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীরা কাজলা ফটকের সামনে আগুন জ্বালিয়ে ঢাকা–রাজশাহী মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন।
ঘটনাটি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন তুলেছে। তদন্ত করে দায়ীদের দ্রুত গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছে শিক্ষার্থীরা।