কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলায় হৃদয়বিদারক এক ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যাওয়া এক বৃদ্ধার মরদেহ নিয়ে বাড়ি ফেরার পথে ডাকাতদের কবলে পড়েছে তার স্বজনরা। শুধু ডাকাতিই নয়, লাশ দেখে সত্যতা যাচাই করতেও মরদেহের মুখ থেকে কাপড় সরিয়েছে ডাকাতরা।
ঘটনাটি ঘটেছে বুধবার (২৫ জুন) দিবাগত রাত ২টার দিকে মিরপুর উপজেলার ছাতিয়ান ইউনিয়নের দুর্গাপুর মাঠ এলাকায়। এ সময় সড়কে বাঁশ ফেলে অ্যাম্বুলেন্সের পথরোধ করে ডাকাতদল।
ঢাকা ট্রিবিউনকে ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন মিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মমিনুল ইসলাম।
পরিবার সূত্রে জানা গেছে, ২৫ জুন রাত ১০টার দিকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান আয়েশা খাতুন (৬০)। তিনি কুষ্টিয়ার পোড়াদহ ইউনিয়নের সৌদিরাজপুর গ্রামের বাসিন্দা এবং নিয়ামত আলীর স্ত্রী। মৃত্যুর পর তার মরদেহ নিয়ে পরিবারের সদস্যরা একটি অ্যাম্বুলেন্সযোগে বাড়ির উদ্দেশে রওনা দেন।
রাত ২টার দিকে দুর্গাপুর মাঠের এক পানের বরজের পাশে পৌঁছালে, সড়কে বাঁশ ফেলে ৪-৫ জন অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী অ্যাম্বুলেন্সটি থামিয়ে দেয়। এরপর হুমকি দিয়ে স্বজনদের কাছ থেকে নগদ প্রায় ৩২,৬০০ টাকা এবং স্বর্ণালংকার লুটে নেয়। এমনকি মরদেহ আছে কি না নিশ্চিত হতে লাশের মুখের কাপড়ও সরিয়ে দেখে তারা।
মৃতার ভাই রকিবুল ইসলাম বলেন,
“রাতে আমরা অ্যাম্বুলেন্সে করে বাড়ি ফিরছিলাম। হঠাৎ কালিতলার এক পানের বরজের সামনে ৪-৫ জন লোক হাঁসুয়া নিয়ে আমাদের ঘিরে ফেলে। আমার কাছে থাকা ২০ হাজার টাকা, ছোট বোনের কানের দুলসহ সবকিছু নিয়ে যায়। বারবার বলেছি, আমার বোন মারা গেছে, আমাদের কিছু নেই। কিন্তু তারা কিছু শুনল না। জোর করে সবকিছু ছিনিয়ে নেয়।”
মৃতার ছোট বোনও বলেন,
“আমরা ডাকাতদের বলেছি, ভাই, আপনাদেরও মা-বোন আছে। দেখেন, আমার বোন মারা গেছে। তারপরও আমার কানের দুল ছিনিয়ে নেয়। এমনকি তারা আমার বোনের মুখের কাপড় সরিয়ে নিশ্চিত হয়, সত্যিই সে মারা গেছে কি না।”
এ ঘটনায় মিরপুর থানার ওসি মমিনুল ইসলাম জানান,
“ঘটনা জানার পরপরই আমরা অভিযুক্তদের আটকে অভিযান শুরু করেছি। এখন পর্যন্ত কাউকে আটক করা সম্ভব হয়নি। বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করা হচ্ছে।”