দোয়া বিশেষ মর্যাদাপূর্ণ ইবাদত। আল্লাহর মুখাপেক্ষিতা ও অনুনয়-বিনয় প্রকাশের মাধ্যম হলো দোয়া। রাসুলুল্লাহ (সা.) দোয়াকেই সর্বোচ্চ ইবাদত হিসেবে সাব্যস্ত করেছেন। তিনি বলেন, ‘দোয়াই ইবাদত।’ (তিরমিজি, হাদিস : ২৯৬৯)
তিনি আরো বলেন, ‘দোয়ার চেয়ে বেশি প্রিয় আল্লাহর কাছে অন্য কিছু নেই।’ (সহিহ ইবনে হিব্বান, হাদিস : ৮৭০)
হজে রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর দোয়ার ছিল নিবিড় সম্পর্ক। তিনি তাওয়াফের সময় তাঁর রবের কাছে দোয়া করেছেন। (আবু দাউদ, হাদিস : ১৮৯২)
সাফা ও মারওয়ার ওপর দাঁড়িয়ে দোয়া করেছেন; আরাফায় উটের ওপর বসে হাত সিনা পর্যন্ত উঠিয়ে মিসকিন যেভাবে খাবার চায় সেভাবে দীর্ঘ দোয়া ও কান্নাকাটি করেছেন; আরাফার যে জায়গায় তিনি অবস্থান করেছেন সেখানে স্থির হয়ে সূর্য হেলে গেলে সালাত আদায় করার পর থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত দোয়া করেছেন।
মুজদালিফার মাশআরুল হারামে ফজরের সালাতের পর আকাশ ফর্সা হওয়া পর্যন্ত দীর্ঘ আকুতি-মিনতি ও মুনাজাতে রত থেকেছেন। (মুসলিম, হাদিস : ১২১৮)
তাশরিকের দিনগুলোতে প্রথম দুই জামরায় কঙ্কর নিক্ষেপের পর দাঁড়িয়ে হাত উঠিয়ে দীর্ঘক্ষণ দোয়া করেছেন। (বুখারি, হাদিস : ১৭৫১)
ইবনুল কায়্যিম (রহ.) বলেন, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর হজ ছিল ছয়টি স্থানে বিশেষভাবে দোয়ায় পূর্ণ। প্রথম সাফায়, দ্বিতীয় মারওয়ায়, তৃতীয় আরাফায়, চতুর্থ মুজদালিফায়, পঞ্চম প্রথম জামরায় এবং ষষ্ঠ দ্বিতীয় জামরায়।’ (জাদুল মাআদ : ২/২৬৩)
বিশেষভাবে আরাফার দিন বিশেষ গুরুত্বসহ দোয়া করা উচিত। আয়েশা (রা.) বলেন, নিশ্চয়ই রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘আরাফার দিনের চেয়ে উত্তম এমন কোনো দিন নেই, যেদিন আল্লাহ সবচেয়ে বেশি বান্দাকে জাহান্নামের আগুন থেকে মুক্তি দেন; নিশ্চয়ই তিনি নিকটবর্তী হন; অতঃপর আরাফাবাসীকে নিয়ে ফেরেশতাদের কাছে গৌরব করে বলেন, এরা কি চায়?’ (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ১৩৪৮)
জাবের (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে এসেছে, ‘(আরাফার দিন) আল্লাহ তাআলা নিকটতম আসমানে আসেন এবং পৃথিবীবাসীকে নিয়ে আসামানের অধিবাসী অর্থাত্ ফেরেশতাদের সঙ্গে গর্ব করেন। বলেন, দেখো, আমার বান্দারা উষ্কখুষ্ক চুলে, ধুলামলিন বদনে, রোদে পুড়ে দূর-দূরান্ত থেকে এখানে সমবেত হয়েছে। তারা আমার রহমতের প্রত্যাশী।
অথচ তারা আমার আজাব দেখেনি। ফলে আরাফার দিনের মতো আর কোনো দিন এত বেশি পরিমাণে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দেওয়া হয় না।’ (সহিহ ইবনে হিব্বান, হাদিস : ৩৮৫৩)