প্রকাশকালঃ
১৯ মার্চ ২০২৩ ০১:২০ অপরাহ্ণ ১৫৬ বার পঠিত
বিএনপিকে দুর্নীতিবাজদের দল আখ্যা দিয়ে তাদের মুখে দুর্নীতির কথা মানায় না বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, শেখ হাসিনা চুরি করেন না। তিনি চুরি থেকে দেশকে বাঁচিয়েছেন। রাজনীতিকে দুর্নীতিমুক্ত ও গণতান্ত্রিক করেছেন।
আজ বিকেলে রাজধানীর ধোলাইখাল এলাকায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০৩তম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন ওবায়দুল কাদের।
আওয়ামী লীগের দলীয় সূত্র বলছে, বঙ্গবন্ধুর জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা হলেও এটি বিএনপির সমাবেশের পাল্টা হিসেবেই এই কর্মসূচি। ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগও মিরপুরের ভাষানটেকে বঙ্গবন্ধুর জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে একই সময়ে সমাবেশ করেছে। সেখানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সংসদের উপনেতা ও আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী। এ ছাড়া যুবলীগ সমাবেশের আয়োজন করে রাজধানীর উত্তরায়। এ ছাড়া বিএনপির মতো ঢাকার বাইরে অন্য মহানগরগুলোতেও আওয়ামী লীগের সমাবেশ ও আলোচনা সভা ছিল।
ধোলাইখালের আলোচনা সভাটি অনুষ্ঠিত হয় সড়কের ওপর। নেতা-কর্মীদের উপস্থিতির কারণে সড়কটি বন্ধ করে দেওয়া হয়। বেলা তিনটায় আলোচনা সভা হলেও ওবায়দুল কাদের উপস্থিত হন বিকেল পাঁচটার পর। বক্তৃতা শুরু করেন সাড়ে পাঁচটায়। ততক্ষণে নয়াপল্টনে বিএনপির সমাবেশও শেষ হয়ে যায়। বঙ্গবন্ধুর জন্মবার্ষিকীর কর্মসূচি হলেও ওবায়দুল কাদের বক্তৃতার শুরুতেই বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নাম উল্লেখ করে তাঁর কড়া সমালোচনা করেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘মির্জা ফখরুল নামের একটা লোক! দেখতে ভদ্রলোক মনে হয়। কিন্তু অন্তরে বিষ আর বিষ। এত মিথ্যাচার করতে পারে! সেরা প্যাথলজিক্যাল লায়ার, সেরা মিথ্যাবাদী।’ তিনি বলেন, দুর্নীতিতে বিএনপি পরপর পাঁচবার বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন। এরা দুর্নীতির বিরুদ্ধে যখন কথা বলে, তখন জনগণের মাঝে হাস্যরস সৃষ্টি হয়। দুর্নীতিবাজের মুখে দুর্নীতির বিরুদ্ধে কথা বলে, এদের লজ্জা-শরম বলতে কিছুই নেই।
বিএনপি ক্ষমতায় এলে দেশকে আবার দেউলিয়া করে দেবে বলে দাবি করেন ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, তারেক রহমান কোটি কোটি টাকা পাচার করবে। এই অপশক্তি সাম্প্রদায়িকতার পৃষ্ঠপোষক। জঙ্গিদের হাতে চলে যাবে দেশ। সেটা হতে দেওয়া হবে না।
বিএনপিকে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক দলটির নেতাদের বলেন, ‘পায়ের তলায় মাটি থাকলে নির্বাচনে এসে প্রমাণ করুন। ফাঁকা আওয়াজ দিয়ে জনপ্রিয়তা প্রমাণ করতে পারবেন না। প্রমাণ করতে নির্বাচনে আসুন।’
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুলের নাম উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, তাদের মতো শেখ হাসিনা চুরির চিন্তা করেন না। জনগণের কল্যাণে কাজ করেন শেখ হাসিনা। এই বিষয়ে তিনি আরও বলেন, শেখ হাসিনা চুরি করলে পদ্মা সেতু ও মেট্রোরেল, উড়ালসড়ক হতো না। শেখ হাসিনা যদি চুরি করতেন, তাহলে চট্টগ্রামে বঙ্গবন্ধু টানেল হতো না। এক দিনে ১০০ সড়ক ও সেতুর উদ্বোধন সম্ভব হতো না।
গত ৪৮ বছরে শেখ হাসিনার মতো দক্ষ ও সৎ নেতার জন্ম হয়নি দাবি করে ওবায়দুল কাদের বলেন, শেখ হাসিনার ছেলেমেয়েদের নামে হাওয়া ভবন তৈরি হয়নি। কোটি কোটি মানুষের কাছে খাদ্য পৌঁছে দিয়েছেন শেখ হাসিনা। তিনি বিনা পয়সায় ভ্যাকসিন দিয়েছেন জনগণকে। শেখ হাসিনা আছেন বলেই গৃহহীনেরা ঘর পাচ্ছে, ভূমিহীনেরা ভূমি পাচ্ছে।
আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফী। আরও বক্তৃতা করেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, কামরুল ইসলাম ও মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন; সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির প্রমুখ। সভা পরিচালনা করেন মহানগরের দপ্তর সম্পাদক রিয়াজ উদ্দিন।
বাংলাদেশ উন্নতির শিখরে
মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় সংসদ উপনেতা মতিয়া চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশ উন্নতির শিখরে চলে যাচ্ছে বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে। এটাই বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনে বড় অর্জন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেন, পিতার রাজনীতির আদর্শে ও ধারাবাহিকতায় শেখ হাসিনার এই সফলতা।
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান। আরও বক্তৃতা করেন আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণবিষয়ক সম্পাদক আমিনুল ইসলাম, মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম মান্নান, সহসভাপতি কাদের খান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মতিউর রহমান, দপ্তর সম্পাদক উইলিয়াম প্রলয় সমাদ্দার প্রমুখ।