আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে দণ্ডিতদের রাজনীতিতে নিষিদ্ধের সুপারিশ করেছে নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন।

  প্রিন্ট করুন   প্রকাশকালঃ ১৬ জানুয়ারি ২০২৫ ০৩:৩৫ অপরাহ্ণ   |   ৮৪৬ বার পঠিত
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে দণ্ডিতদের রাজনীতিতে নিষিদ্ধের সুপারিশ করেছে নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন।

ঢাকা প্রেস নিউজ


বুধবার (১৫ জানুয়ারি) প্রধান উপদেষ্টার কাছে জমা দেওয়া একটি প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা যায়। ড. বদিউল আলম মজুমদারের নেতৃত্বাধীন এই কমিশন নয় পৃষ্ঠার প্রতিবেদনটিতে নির্বাচন ব্যবস্থার উন্নয়নে ১৬টি বিষয়ে মোট ১৫০টি সুপারিশ পেশ করেছে। এর মধ্যে রয়েছে:

  • ‘না’ ভোটের বিধান চালু করা।
  • স্থানীয় সরকার নির্বাচনে দলীয় প্রতীক বাদ দেওয়া।
  • ৪০ শতাংশের কম ভোট পড়লে পুনর্নির্বাচন।
  • এমপিদের সুবিধা কমানো।
  • ১০ বছর বা তার বেশি বয়সী নাগরিকদের জাতীয় পরিচয়পত্র দেওয়ার উদ্যোগ।

 

মানবতাবিরোধী অপরাধ, গুম, খুন এবং অর্থ পাচারের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের রাজনীতি থেকে দূরে রাখতে কমিশন সুপারিশ করেছে। প্রস্তাবে বলা হয়েছে, রাজনীতিকদের সদস্যদের তালিকা থাকতে হবে, এবং তার ভিত্তিতে দলীয় নেতা নির্বাচিত হবেন। ছাত্র এবং শিক্ষক রাজনীতিতে লেজুড়বৃত্তি বন্ধের বিষয়টিও প্রতিবেদনে গুরুত্ব পেয়েছে।

 

২০১৮ সালের বহুল আলোচিত "রাতের ভোট" নির্বাচনসহ গত তিন বিতর্কিত নির্বাচনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নির্বাচন কমিশন, আমলা, পুলিশ এবং প্রার্থীদের বিচারের আওতায় আনার প্রস্তাব করা হয়েছে।

 

কেউ যেন দুবারের বেশি প্রধানমন্ত্রী হতে না পারেন, এমন নিয়ম প্রণয়নের প্রস্তাব দিয়েছে কমিশন। এছাড়া দ্বিতীয় মেয়াদের পর কোনো ব্যক্তিকে রাষ্ট্রপতি বা সরকারের অন্য কোনো পদে নিয়োগ দেওয়া যাবে না বলে সুপারিশ করা হয়েছে।

 

সংসদের ২৫ শতাংশ আসন নারী প্রার্থীদের জন্য ঘূর্ণায়মান পদ্ধতিতে সংরক্ষণের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। স্থানীয় সরকার নির্বাচনেও নারী, ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘুদের জন্য ১০ শতাংশ মনোনয়নের সুযোগ রাখার সুপারিশ করা হয়েছে।
 

অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশ

  • ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) বাতিল।
  • প্রার্থী হওয়ার জন্য ৫ বছরের আয়কর রিটার্ন জমা বাধ্যতামূলক।
  • হলফনামায় মিথ্যা তথ্য দিলে প্রার্থিতা বাতিল।
  • রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন নবায়ন প্রতি ৫ বছরে একবার বাধ্যতামূলক।
  • প্রবাসীদের জন্য পোস্টাল ও অনলাইন ভোটিং ব্যবস্থা চালু।

 

প্রতিবেদন জমা দেওয়ার পর এক সংবাদ সম্মেলনে কমিশনপ্রধান ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, “জনগণের অধিকার রক্ষায় নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার অপরিহার্য। এতে সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত হবে এবং রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় জবাবদিহিতা বৃদ্ধি পাবে।”
 

সংবিধানের ক্ষমতা এবং আইন অনুযায়ী নির্বাচন কমিশনের কার্যকারিতা বৃদ্ধি এবং জনকল্যাণে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা প্রণয়নের জন্য এ সুপারিশগুলো করা হয়েছে বলে জানান তিনি।