ঢাকা প্রেস নিউজ
প্রিয়জনকে জড়িয়ে ধরলেই বুক হালকা হয়, অথবা মনটা হয়ে ওঠে চনমনে—এ কথা অস্বীকার করা যাবে না। জড়িয়ে ধরা শুধুমাত্র ভালোবাসার প্রকাশ নয়, এটি মানসিক শান্তি, স্বস্তি এবং সংযোগের প্রতীকও। বৈজ্ঞানিক গবেষণায় প্রমাণিত যে, আলিঙ্গন মানুষের মানসিক চাপ কমাতে, সম্পর্কের বন্ধন মজবুত করতে এবং সুখ বাড়াতে সাহায্য করে।
প্রিয়জনকে প্রায় সবাই জড়িয়ে ধরেন, এবং এটি বিশ্বাস, ভালোবাসা, বন্ধুত্ব ও স্নেহের অনুভূতি বাড়াতে সহায়তা করে।
আজ ৩ ডিসেম্বর, ‘প্রিয়জনকে জড়িয়ে ধরা দিবস’ বা ‘লেটস হাগ ডে’। এই দিবসটি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পালিত হয়, তবে দিবসটি কবে থেকে শুরু হয়েছে এবং কেন পালিত হয়, তা সম্পর্কে সুস্পষ্ট তথ্য পাওয়া যায়নি।
যতটুকু জানা গেছে, কেভিন জাবর্নি নামক এক ব্যক্তি এই দিবসটির পেছনে মাস্টারমাইন্ড ছিলেন। তিনি মানুষের মধ্যে একে অপরের প্রতি স্নেহ প্রদর্শনে উৎসাহিত করতে প্রথম জাতীয় আলিঙ্গন দিবস উদযাপন করেন।
এই দিবসটির মূল উদ্দেশ্য হলো একে অপরের প্রতি স্নেহ ও ভালোবাসা প্রকাশ করা, যা আলিঙ্গনের মাধ্যমে অনুভূত হয়। আলিঙ্গনের নানা স্বাস্থ্য উপকারিতাও রয়েছে।
জানলে অবাক হবেন, আলিঙ্গন মানসিক চাপ কমিয়ে আমাদের দৈনন্দিন জীবনের সুস্থতা বজায় রাখতে সাহায্য করে। আমেরিকান ইনডিপেনডেন্ট একাডেমিক পাবলিশিং কোম্পানি প্রকাশিত সেজ জার্নালসের গবেষণায় ৪০০ প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির ওপর গবেষণা করে দেখা গেছে, আলিঙ্গন মানুষের অসুস্থ হওয়ার আশঙ্কা কমাতে পারে। যারা বেশি আলিঙ্গন পেয়েছেন, তাদের অসুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা কম ছিল।
আদিকাল থেকেই মানুষের মধ্যে আলিঙ্গন বা জড়িয়ে ধরার আনন্দ ছিল। যখন মানুষ প্রথম অনুভব করেছিল যে, একে অপরকে জড়িয়ে ধরা কতটা মধুর। এভাবে, দিবসটির শুরু যেভাবেই হোক, আজও এটি বন্ধু ও পরিবারের সদস্যদের মধ্যে ভালোবাসা ও মমতা প্রকাশের একটি উপায় হয়ে রয়েছে।
মজার বিষয় হলো, আলিঙ্গন বা জড়িয়ে ধরা একটি সর্বজনীন ভালোবাসার প্রকাশ। যখন বিভিন্ন সংস্কৃতিতে অভিবাদনের ধরন পরিবর্তিত হয়, যেমন—করমর্দন, নমস্কার বা হাই-ফাইভ, তখন আলিঙ্গন প্রায় সব সংস্কৃতিতেই ভালোবাসা ও সংযোগ প্রকাশের এক সাধারণ মাধ্যম হিসেবে প্রতিভাত হয়। মানুষের সুস্থ ও সুন্দরভাবে বেঁচে থাকার জন্য আলিঙ্গন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, বিশেষত সদ্যোজাত শিশুদের জন্য। যেসব শিশুরা ছোটবেলায় স্নেহ ও আলিঙ্গন পায় না, তারা সাধারণত ভালোভাবে বেড়ে ওঠে না।
এটা শুধু শিশুদের জন্য নয়, প্রাপ্তবয়স্কদের জন্যও উপকারী। বহু গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে যে, আলিঙ্গন কেবল মানসিক এবং আবেগিকভাবে নয়, শারীরিক স্বাস্থ্যের উন্নতির জন্যও সহায়ক।
তাহলে আর লজ্জা কেন? প্রস্তুত হোন, এবং 'জড়িয়ে ধরা দিবস' উপলক্ষে কাউকে জড়িয়ে ধরুন!