কুড়িগ্রামে পানির অভাবে ভাড়া ডোবায় পাট জাগ কৃষকের 

  প্রিন্ট করুন   প্রকাশকালঃ ১৪ জুলাই ২০২৫ ০৭:৩৫ অপরাহ্ণ   |   ৩১ বার পঠিত
কুড়িগ্রামে পানির অভাবে ভাড়া ডোবায় পাট জাগ কৃষকের 

আনোয়ার সাঈদ তিতু, কুড়িগ্রাম জেলা প্রতিনিধি:-


 

কুড়িগ্রাম জেলার উলিপুর উপজেলায় পানির অভাবে পাট জাগ দিয়ে পারছেন না কৃষকরা। জমে থাকা পানির ডোবা ভাড়া নিয়ে পাট জাগ দিতে বাধ্য হচ্ছেন অনেক কৃষক। প্রতি একর জমির পাট কাটা থেকে জাগ দেওয়ার জন্য শ্রমিকদের দিতে হচ্ছে ২৫ হাজার টাকা। ফলে নানা প্রতিকূলতায় পাট চাষে আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন কৃষকরা। এছাড়া উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি, বাজারে ন্যায্যমূল্য না পাওয়ায় এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে বলে পাট চাষিদের অভিযোগ। 

 


 

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমের উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে ২ হাজার ৫৩০ হেক্টর জমিতে পাট চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এরমধ্যে দেশি জাতের ১১৫ হেক্টর, তোষা জাতের ২ হাজার ২৫০ হেক্টর, মেশতা জাতের ৩ হেক্টর ও কেনাফ জাতের ১৬২ হেক্টর জমিতে পাট চাষ করা হয়েছে। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্র নির্ধারণ করা হয়েছে দেশি জাতের ১৪৪ মেট্রিক টন, তোষা জাতের ৪ হাজার ৫০০ মেট্রিকটন, মেশতা জাতের ৪ মেট্রিকটন ও কেনাফ জাতের ২০৩ মেট্রিকটন মিলে মোট ৪ হাজার ৮৫১ মেট্রিকটন। 

 


 

উলিপুর পৌরসভার নাওডাঙ্গা গ্রামের কৃষক জীবন চন্দ্র জানান, একটু পানি জমে থাকা জমির মালিকের টাকার বিনিময়ে ডোবায় পাট জাগ দিচ্ছেন। এছাড়া প্রতি শতক জমির পাট কাটা থেকে জাগ দেওয়া পর্যন্ত ২৫০ টাকা টাকা দিতে হয়েছে শ্রমিকদের। 
 

একই এলাকার কৃষক চপল কুমার বলেন, পানির সমস্যার কারণে আগাম পাট কেটে নিজের পুকুরে জাগ দিয়েছিলাম। এখন শুকানোর পর যদি দাম না পাই তাহলে লোকসান গুনতে হবে।

 


 

উপজেলার থেতরাই ইউনিয়নের কৃষক রব্বানী বলেন, সরকার পলিথিনমুক্ত দেশ গড়তে চাইলে পাটচাষে কৃষকদের আধুনিক উন্নত প্রশিক্ষণ ও প্রযুক্তির সমন্বয় করে পাট চাষে কৃষকদের আগ্রহী করে তুলতে হবে। সেই সাথে পাটের ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করতে পারলে আবারও এ অঞ্চলে সোনালী আঁশ পাটের সুদিন ফিরে আসবে।

 


 

এছাড়াও কথা হয় উপজেলার বজরা, থেতরাই ও দলদলিয়া ইউনিয়নের কৃষক সাইদুল ইসলাম, মাহতাব হোসেন, জাহাঙ্গীর হোসেনসহ অনেকেই বলেন, বাপ-দাদারা একসময় পাট চাষাবাদ করে সংসার চালাতো। উলিপুরে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ব্যবসায়ীরা এসে পাট ক্রয় করে নিয়ে যেত। পাট বিক্রির টাকা দিয়ে তারা ইলিশ মাছ,নদীর বড় বড় বাইগর মাছ কিনে আনতো। সেসব আজ স্মৃতি হয়ে আছে। আজ নানা কারণে মানুষ আর পাট চাষ করতে চায় না।  
 

উলিপুর উপজেলা উপসহকারী পাট উন্নয়ন কর্মকর্তা মাসুদ রানা জানান, চলতি মৌসুমে উপজেলার ৩ হাজার কৃষককে ১ কেজি পাটবীজ ও ১২ কেজি সার প্রণোদনা হিসেবে প্রদান করা হয়েছে।
 

উলিপুর উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মোশারফ হোসেন বলেন, কৃষি বিভাগ থেকে পাট চাষে কৃষকদের উৎসাহিত করা হচ্ছে। এজন্য প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও প্রণোদনা প্রদান করা হয়েছে। যেসব এলাকায় পানির সমস্যা হতে পারে তাদের আগাম পাট কেটে জাগ দিতে বলা হয়েছে।