এনসিপি নেতা শিশিরের হুঁশিয়ারি: “আওয়ামী লীগ পেলেই গণধোলাই”

নিউজ ডেস্ক (কুমিল্লা):-

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) কেন্দ্রীয় যুগ্ম সদস্য সচিব জয়নাল আবেদীন শিশির কুমিল্লায় আয়োজিত ২৮ মার্চ এক ইফতার মাহফিলে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন। তিনি বলেছেন, “বিগত দিনে শুনেছি কুমিল্লা আওয়ামী সন্ত্রাসীদের ঘাঁটি; কিন্তু আমরা বলতে চাই- কুমিল্লায় যেখানে আওয়ামী লীগ, সেখানেই গণধোলাই। আওয়ামী লীগকে যেখানে পাবেন, সেখানে গণধোলাই দিয়ে জেলে ভরে দেবেন। আমাদের স্লোগান- ‘একটা একটা লীগ ধর, ধরে ধরে জেলে ভর।’”

শুক্রবার লালমাই উপজেলার বাগমারা উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে এনসিপি আয়োজিত ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

জুলাই বিপ্লব ও অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান....

শিশির অভিযোগ করেন, “কেউ কেউ এখন জুলাই বিপ্লবকে স্বীকার করতে চাচ্ছে না। এটাকে দ্বিতীয় স্বাধীনতা বলছে না। বরং তারা বলছে এটি কোনো বিপ্লবই হয়নি। অথচ আপনারা আমাদের সহযোগী ছিলেন, মজলুম ছিলেন। যদি এখন মজলুম থেকে জালিমে পরিণত হতে চান, তাহলে আপনাদেরকেও আওয়ামী লীগের মতো পরাজিত করা হবে।”

তিনি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, “জুলাইয়ের প্রতিটি শহিদকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদা দিতে হবে। আমরা সরকারের কাছে দাবি জানাই, অবিলম্বে জুলাই ঘোষণাপত্র প্রকাশ করুন এবং সেকেন্ড রিপাবলিক (স্বাধীনতা) ঘোষণা করুন। বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে অনেক ছিনিমিনি খেলা হয়েছে, যা এখনো চলমান। জাতীয় সংসদ ও গণপরিষদ নির্বাচন একসঙ্গে দিতে হবে। যদি তা না করা হয়, তাহলে জুলাই আন্দোলনের মহানায়করা আবারও রাজপথে বুকের তাজা রক্ত দিতে প্রস্তুত থাকবে।”

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান.....

শেখ হাসিনার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “শেখ হাসিনা যদি আবার এ বাংলায় রক্তগঙ্গা বইয়ে দিতে চায়, আমরা আবার শহিদ হওয়ার জন্য মাঠে নামব। আমরা শেখ হাসিনা ও তার দলকে এক মুহূর্তের জন্য বাংলাদেশে সহ্য করব না। তিনি আবার নরেন্দ্র মোদিকে দিয়ে অপকর্ম চালাতে চাইছেন। কিছুদিন আগে সংখ্যালঘু নির্যাতনের অভিযোগ তোলা হয়েছে, অথচ ভারতে সবচেয়ে বেশি মুসলমান, ইহুদি ও খ্রিস্টান নির্যাতিত হয়। সেসব নিয়ে তাদের কোনো মাথাব্যথা নেই, অথচ এই সম্প্রীতির বাংলাদেশকে অপবাদ দেওয়া হচ্ছে। আমরা রাজপথে থেকে শক্ত হাতে এসব অপবাদ মোকাবিলা করব।”

বিক্ষোভ মিছিল.....

ইফতার মাহফিল শেষে এনসিপির নেতারা আওয়ামী লীগের নিবন্ধন বাতিলের দাবিতে কুমিল্লা-নোয়াখালী আঞ্চলিক মহাসড়কের বাগমারা বাজারে বিক্ষোভ মিছিল করেন। মিছিলটি বাগমারা উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে থেকে শুরু হয়ে বাগমারা দক্ষিণ বাজারে গিয়ে শেষ হয়। বিক্ষোভে পাঁচ শতাধিক এনসিপি নেতাকর্মী ও সমর্থক অংশ নেন। তারা আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্লোগান দেন এবং অতীতের নিপীড়ন-নির্যাতনের নানা অভিযোগ তোলেন।

উপস্থিত নেতৃবৃন্দ.....

ইফতার মাহফিল ও বিক্ষোভ মিছিলে উপস্থিত ছিলেন এনসিপির কেন্দ্রীয় সদস্য হাফসা জাহান, নেতা ফজলে এলাহি রুবেল, হুমায়ুন কবির, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কুমিল্লা মহানগর কমিটির আহ্বায়ক আবু রায়হান, সদস্য সচিব মুহাম্মদ রাশেদুল হাসান, ঢাবি গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের যুগ্ম সদস্য সচিব শাকিল আহমেদ, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা মোস্তফা জিহান, ইয়াছিন আরাফাত, হুমায়ুন কবির, আবুল কাসেম, নোমান আহমেদ, কবির হোসেন, সাদ্দাম হোসেন, জান্নাতুল ফেরদৌস, ইম্পা ফারহা জান্নাতুল জান্নাত, লুৎফল হাসান রুমি, এসবি জুয়েল, জিসান, মোহাম্মদ মুমিন হোসেন, ইঞ্জিনিয়ার রাসেল সিদ্দিকী, মারুফ সিরাজী ও জুলাই আন্দোলনে পুলিশের ছররা গুলিতে আহত মেহেদী হাসান শুভ প্রমুখ।