আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশের জনগণের ভোটে যে সরকারই ক্ষমতায় আসুক, তাদের সমর্থন ও সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে ভারত— এমন মন্তব্য করেছেন ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রি।
সোমবার (৬ অক্টোবর) নয়াদিল্লিতে ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে বাংলাদেশের কূটনৈতিক সাংবাদিকদের সংগঠন ডিক্যাব (ডিপ্লোম্যাটিক করেসপন্ডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ)-এর সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন।
বিক্রম মিশ্রি বলেন, “বাংলাদেশে অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের মাধ্যমে যারা নির্বাচিত হবেন, তাদের সঙ্গেই কাজ করবে ভারত। জনগণের রায়কেই আমরা সম্মান জানাই।”
তিনি আশা প্রকাশ করেন, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ঘোষণার পরিপ্রেক্ষিতে নির্ধারিত সময়ে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। তিনি বলেন, “অন্তর্বর্তী সরকার ইতোমধ্যে ঘোষণা করেছে যে আগামী ফেব্রুয়ারিতেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ভারত চায়, যত দ্রুত সম্ভব বাংলাদেশে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচন সম্পন্ন হোক। সেই প্রক্রিয়ায় যেই সরকারই গঠিত হোক না কেন, আমরা তাদের সহযোগিতা করতে প্রস্তুত।”
ভারতের পররাষ্ট্র সচিব আরও বলেন, “বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার পায়। এই সম্পর্ক টিকিয়ে রাখতে উভয় পক্ষেরই প্রতিহিংসামূলক বক্তব্য থেকে বিরত থাকা জরুরি। দুই দেশের মধ্যে বর্তমানে বাণিজ্য, সংস্কৃতি ও নিরাপত্তাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতা অব্যাহত রয়েছে।”
তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রধান হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূস দায়িত্ব নেওয়ার পর ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিই ছিলেন প্রথম বিশ্বনেতা, যিনি তাকে অভিনন্দন জানান।
ভিসা ইস্যুতে এক প্রশ্নের জবাবে বিক্রম মিশ্রি বলেন, “যদিও বর্তমানে ভিসা কার্যক্রম কিছুটা সীমিত, তারপরও ঢাকা বিশ্বব্যাপী ভারতীয় ভিসা ইস্যুর সবচেয়ে বড় কেন্দ্র। ভারত সবসময় দুই দেশের মানুষের মধ্যে দৃঢ় সম্পর্ককে মূল্য দেয়।”
আঞ্চলিক নিরাপত্তা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “ভারত প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে আঞ্চলিক সহযোগিতাকে অত্যন্ত গুরুত্ব দেয়। দক্ষিণ এশিয়ায় শান্তি ও স্থিতিশীলতা রক্ষায় আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। চরমপন্থার উত্থান রোধে বাংলাদেশসহ প্রতিবেশীদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছি।”
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফেরত দেওয়ার বিষয়ে ঢাকার অনুরোধ সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বলেন, “এটি একটি আইনি বিষয়, তাই এ নিয়ে বিস্তারিত মন্তব্য করা সমীচীন নয়।”
গঙ্গা পানিবণ্টন ও তিস্তা প্রকল্প নিয়ে প্রশ্নের জবাবে বিক্রম মিশ্রি বলেন, “পারস্পরিক বোঝাপড়ার ভিত্তিতে এসব ইস্যু সমাধানে ভারত ও বাংলাদেশের যৌথ প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।”