গত রবিবার বিএনপির একটি প্রতিনিধিদল ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোর রাষ্ট্রদূতদের সঙ্গে বৈঠক করে বলেছেন, আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করবে না। বাংলাদেশের নির্বাচনব্যবস্থা ভেঙে গেছে, এখানে জনগণের ভোটাধিকার প্রয়োগ ছাড়াই সরকার অবৈধভাবে ক্ষমতায় বসে আছে। বাংলাদেশের মানুষ নিরপেক্ষ নির্বাচনব্যবস্থা ছাড়া এই সরকারের অধীনে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবে এমন চিন্তাও করে না। গতকাল সকালে বৈঠক শেষে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী এসব কথা জানান। সকাল ১০.১৫টা থেকে ১১.৩০টা পর্যন্ত ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) ৭ দেশের রাষ্ট্রদূতদের সঙ্গে বৈঠক করেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এর নেতৃত্বে বিএনপি নেতারা। ঢাকায় ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত চার্লস হোয়াইটলির গুলশানের বাসায় এ বৈঠক হয়। বৈঠকে ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি, নেদারল্যান্ডস, স্পেন, ডেনমার্ক ও নরওয়ের রাষ্ট্রদূত অংশ নেন। বৈঠকে বিএনপির পক্ষ থেকে আমীর খসরু ছাড়াও ছিলেন দলের সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ এবং মানবাধিকার সম্পাদক অ্যাডভোকেট আসাদুজ্জামান আসাদ। বৈঠক শেষে প্রেস ব্রিফিংকালে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, অবশ্যই বিএনপি এই সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনে যাবে না।
বৈঠকে আমরা সাম্প্র্রতিক ও বিভিন্ন ইস্যুতে কথা বলেছি। দেশের মানুষ যেসব বিষয় পর্যবেক্ষণ করছে সেসব বিষয়ে অর্থাৎ নির্বাচন নিয়ে কথা হয়েছে। বিশ্বের যারা গণতান্ত্রিক দেশ, তারা বাংলাদেশকে নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। তাদের সবার কাছে এই বিষয়টি পরিষ্কার করা হয়েছে যে, বাংলাদেশে বর্তমান অবৈধ, দখলদার ও অনির্বাচিত সরকারের অধীনে দেশের জনগণ ভোটাধিকার প্রয়োগ করে তাদের সংসদ ও সরকার নির্বাচিত করতে পারবে না। দেশের নির্বাচনিব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে দাবি করে আমীর খসরু বলেন, এখানে জনগণের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়ে অবৈধ দখলদার সরকার ক্ষমতায় আছে। সেই প্রেক্ষাপটে আলোচনা হয়েছে। আবারও যদি দেশের জনগণ ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে না পারে তবে দেশ যে সংকটের দিকে যাবে সেই বিষয়ে রাষ্ট্রদূতরা জানতে চেয়েছেন। এই সরকার তো বিদেশেও ষড়যন্ত্র করছে। আসলে সবার উদ্দেশ্য হচ্ছে বাংলাদেশে কীভাবে একটি অংশগ্রহণমূলক ও সুষ্ঠু নির্বাচন করা যায়। নির্বাচনের বিষয়ে বিএনপির অবস্থান কী আপনারা ইউরোপীয় ইউনিয়নকে পরিষ্কার করেছেন কি না_ এমন প্রশ্নের জবাবে আমীর খসরু বলেন, অবশ্যই এই সরকারের অধীন বিএনপি নির্বাচনে যাবে না। সেটা আমরা খোলাখুলিভাবে বলেছি। বিশ্বের যারা বাংলাদেশের ওপর নিবিড়ভাবে কাজ করছে, পর্যবেক্ষণ করছে, সবার কাছে এটা পরিষ্কার করা হয়েছে যে বর্তমান দখলদার, অনির্বাচিত সরকারের অধীন বাংলাদেশের জনগণ ভোটাধিকার প্রয়োগ করে তাদের প্রতিনিধি, তাদের সরকার, তাদের সংসদ নির্বাচিত করতে পারবে না। এই বিষয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়ন কী মনে করে জানতে চাইলে আমীর খসরু বলেন, তারা কী মনে করে, সেটা তারাই বলতে পারবে। আমি তো বলতে পারব না। আপনারা তো সব কিছু জানেন যে দেশের মানুষ যেভাবে পর্যবেক্ষণ করছে, দেশের বর্তমান অবস্থা ও নির্বাচন, সারা বিশ্বের যারা গণতান্ত্রিক দেশ আছে, সবাই নিবিড়ভাবে বাংলাদেশকে পর্যবেক্ষণ করছে। তার অংশ হিসেবে ইউরোপীয় ইউনিয়ন দেখছে, বাংলাদেশের বর্তমান গণতান্ত্রিক অবস্থা কী? মানবাধিকার, আইনের শাসন, মানবাধিকার, বাকস্বাধীনতা, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা কেমন। বিশেষ করে আগামী নির্বাচন নিয়ে যে শঙ্কা কাজ করছে দেশের ভেতরে, দেশের বাইরে, সেটার ওপর তো তাদের স্বাভাবিকভাবে একটা দৃষ্টি আছে।