নোয়াখালীর উপকূলীয় অঞ্চল প্লাবিত, নদীভাঙনে ঝুঁকিতে শতাধিক ঘরবাড়ি

  প্রিন্ট করুন   প্রকাশকালঃ ২৬ জুলাই ২০২৫ ০৬:১৪ অপরাহ্ণ   |   ৩২ বার পঠিত
নোয়াখালীর উপকূলীয় অঞ্চল প্লাবিত, নদীভাঙনে ঝুঁকিতে শতাধিক ঘরবাড়ি

নোয়াখালী প্রতিনিধি:-


 

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের কারণে নোয়াখালীর দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ায় মেঘনা নদীতে অস্বাভাবিক জোয়ারের সৃষ্টি হয়েছে। এর ফলে নিঝুমদ্বীপ, কোম্পানীগঞ্জের মুছাপুর ও চরএলাহী ইউনিয়নের কিছু অংশসহ একাধিক নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। কোথাও কোথাও নদীভাঙনের ঘটনাও ঘটেছে, ঝুঁকির মুখে পড়েছে শতাধিক বসতবাড়ি।
 

শনিবার (২৬ জুলাই) বিকেল পর্যন্ত হাতিয়ার টাংকির ঘাট ও চেয়ারম্যানঘাট এলাকায় নদীভাঙন তীব্র রূপ ধারণ করে। এতে অর্ধশতাধিক ঘরবাড়ি নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয় বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
 

শুক্রবার সকালেই জোয়ারের পানিতে নিঝুমদ্বীপের প্রধান সড়ক সম্পূর্ণভাবে তলিয়ে যায়। প্লাবিত হয় নামার বাজারসহ আশপাশের এলাকা। ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে পানি ঢুকে ক্ষয়ক্ষতির সৃষ্টি হয়েছে। বহু মাছের ঘের ও পুকুরের মাছ পানির স্রোতে ভেসে গেছে। এছাড়া উপজেলার নলচিরা, সোনাদিয়া ও সুখচর ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।
 

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, হঠাৎ জোয়ারের পানিতে বহু ঘরবাড়ি, ফসলি জমি এবং সড়ক ডুবে গেছে। দুর্ভোগে পড়েছেন হাজারো মানুষ। বিশেষ করে নিঝুমদ্বীপ জাতীয় উদ্যানে বসবাসকারী হরিণসহ বন্যপ্রাণীর জন্যও এই প্রাকৃতিক দুর্যোগ হুমকিস্বরূপ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
 

এদিকে নোয়াখালীর জেলা শহর মাইজদীর বিভিন্ন এলাকাতেও জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। পৌরসভার ড্রেন ও খাল পরিষ্কার না থাকায় পানি বের হতে না পেরে রাস্তাঘাট ডুবে যায়, চরম ভোগান্তিতে পড়েন এলাকাবাসী।
 

নোয়াখালী জেলা আবহাওয়া কর্মকর্তা মো. রফিকুল ইসলাম জানান, নিম্নচাপের প্রভাবে উপকূলীয় এলাকায় দমকা হাওয়া ও গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হচ্ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ৫১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। সমুদ্রগামী নৌযান ও মাছ ধরার ট্রলারগুলোকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি থাকতে বলা হয়েছে।
 

হাতিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আলাউদ্দিন বলেন, নিঝুমদ্বীপ ইউনিয়ন, সুখচর ও সোনাদিয়া ইউনিয়নের বেশ কিছু গ্রাম এখনো পানির নিচে রয়েছে। কোথাও কোথাও ২-৩ ফুট পর্যন্ত পানি উঠেছে। সুখচরের একটি বেড়িবাঁধ ভেঙে প্লাবনের সৃষ্টি হয়েছে।
 

তিনি আরও জানান, বেড়িবাঁধের বাইরে জেলে পল্লীগুলোতে জোয়ারের পানি ওঠানামা করছে। নলচিরা ইউনিয়নসহ কয়েকটি এলাকায় নদীভাঙনের আশঙ্কায় অনেকে তাদের বসতঘর ও দোকানপাট সরিয়ে নিয়েছেন। তবে শনিবার বিকেলে নদীর পানি কিছুটা স্থির থাকায় কিছু রুটে সীমিতভাবে নৌযান চলাচল শুরু হয়েছে।