মৃত্যুর আগে বর্ষাকে যে অনুরোধ করেছিলেন ছাত্রদল নেতা জুবায়েদ

  প্রিন্ট করুন   প্রকাশকালঃ ২১ অক্টোবর ২০২৫ ০৫:৩৮ অপরাহ্ণ   |   ৮৭ বার পঠিত
মৃত্যুর আগে বর্ষাকে যে অনুরোধ করেছিলেন ছাত্রদল নেতা জুবায়েদ

পুরান ঢাকার আরমানিটোলার পানির পাম্প গলিতে রোববার (১৯ অক্টোবর) রাতে ছাত্রীকে পড়াতে গিয়ে তারই বাসার নিচে নির্মমভাবে খুন হন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থী ও ছাত্রদল নেতা জুবায়েদ হোসাইন।
 

সেদিন বিকেল ৪টার দিকে ছাত্রী বার্জিস শাবনাম বর্ষাকে পড়াতে আসেন জুবায়েদ। তখনই বর্ষার প্রেমিক মাহীর সুইচগিয়ার দিয়ে তাকে আঘাত করে।
 

মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে লালবাগ জোনের ডিসি মল্লিক আহসান উদ্দিন সামী জানান, আঘাতের পরও তখনো জীবিত ছিলেন জুবায়েদ। বাঁচার তাগিদে তিনি দোতলা থেকে উপরে ওঠেন। তিন তলায় দাঁড়িয়ে ছিল বর্ষা। জুবায়েদ তাকে অনুরোধ করে বলেন, “বর্ষা, আমাকে বাঁচাও।”
কিন্তু তখন বর্ষা নির্মমভাবে জবাব দেয়, “তুমি না মরলে আমি মাহীরের হতে পারব না।” বর্ষা এরপর নিশ্চিত হয় যে জুবায়েদ মারা গেছেন এবং সরে যায়। জুবায়েদ বাঁচার জন্য দরজায় কড়া নাড়লেও কেউ সাড়া দেয়নি।

 

ডিসি সামী আরও বলেন, “বর্ষা ছিল অনেক চতুর। দুজনের সঙ্গেই প্রেমের সম্পর্ক বজায় রেখেছিল। এটি একটি ত্রিভুজ প্রেমের ঘটনা—বরগুনার মিন্নির ঘটনার মতোই। পুরো হত্যাকাণ্ডের সময় বর্ষা সামনে থেকেই সবকিছু দেখেছে।”
 

পুলিশ জানায়, টিউশনির ছাত্রী বর্ষার পরিকল্পনাতেই খুন হন জুবায়েদ। মূলত, বর্ষা প্রেম করতেন মাহীরের সঙ্গে। পরে জুবায়েদের সঙ্গে পরিচয়ের পর তার প্রতিও আকৃষ্ট হন। মাহীর বিষয়টি জানতে পারলে বর্ষা তার সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করেন, কিন্তু পরে আবার যোগাযোগ শুরু করেন। এক পর্যায়ে বর্ষা মাহীরকে বলেন, “জুবায়েদকে না মারলে আমি তোমার হব না।”
 

এরপর ২৫ সেপ্টেম্বর তারা হত্যার পরিকল্পনা করে। নতুন দুটি সুইচগিয়ার ছুরি কেনা হয়, এবং সেই অস্ত্র দিয়েই বর্ষার বাসার নিচে এলোপাতাড়ি হামলা চালিয়ে জুবায়েদকে হত্যা করা হয়।
 

জুবায়েদ গত এক বছর ধরে বর্ষাকে পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন ও জীববিজ্ঞান পড়াতেন। বর্ষার বাবা গিয়াসউদ্দিন পুরান ঢাকায় থাকেন। অন্যদিকে নিহত জুবায়েদ কুমিল্লার হোমনা উপজেলার কৃষ্ণপুর গ্রামের মোবারক হোসেনের ছেলে।
 

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের এই ছাত্রদল নেতাকে সোমবার রাতে নিজ গ্রামের পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।