বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ ও সারজিস আলমের গাড়িবহর একদিনের ব্যবধানে দুইবার সড়ক দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। এ ঘটনাগুলোকে হত্যাচেষ্টা বলে দাবি করেছেন তারা।
শুক্রবার (২৯ নভেম্বর) ট্রাকের ধাক্কাকে কেন হত্যাচেষ্টা বলা হচ্ছে, সে বিষয়ে গণমাধ্যমে ব্যাখ্যা দেন সারজিস আলম।
সারজিস বলেন, “প্রথমে আমরা ঘটনাটিকে হত্যাচেষ্টা হিসেবে সন্দেহ করিনি। কিন্তু ঘটনার পর চালককে জিজ্ঞাসাবাদ করলে কোনো স্পষ্ট উত্তর পাইনি। তিনি দাবি করেন, জিনিসপত্র আনলোড করার জন্য গাড়িটি এনেছেন, তবে কোনো বৈধ কাগজপত্র তার কাছে ছিল না। মালিক সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, মালিক বিদেশে আছেন। পরে যখন ক্ষতিপূরণের কথা তুলি, তখন চালক জানান, মালিক জেলে আছেন।”
সারজিস আরও জানান, চালককে জিজ্ঞাসাবাদের সময় জানা যায়, ট্রাকের মালিক জুলাই মাসের গণঅভ্যুত্থানের একটি হত্যা মামলার আসামি এবং বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন। এ তথ্য সামনে আসার পর ঘটনাটি আরও সন্দেহজনক মনে হয়।
“এ ঘটনার পর আমরা প্রথমে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করি। কিন্তু তদন্তের সীমাবদ্ধতার কারণে পরে মামলা দিই। যদি ট্রাক মালিকের সংশ্লিষ্টতা প্রমাণিত না হয়, তাহলে মামলা নিষ্পত্তি হয়ে যাবে,” বলেন সারজিস।
বৃহস্পতিবার সকালে কুমিল্লা থেকে ঢাকা ফেরার পথে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকায় হাসনাত আবদুল্লাহর গাড়ি দুর্ঘটনায় পড়ে। পরে মাতুয়াইল এবং গুলিস্তানেও তার গাড়ি দুর্ঘটনার শিকার হয়। মাতুয়াইলে একটি ট্রাক এবং গুলিস্তানে একটি মিনি ট্রাক গাড়িটিকে আঘাত করে পালিয়ে যায়। এসব ঘটনাকে পরিকল্পিত হামলা বলে দাবি করেন হাসনাত।
এর আগে, বুধবার (২৭ নভেম্বর) সন্ধ্যায় চট্টগ্রামে অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম আলিফের কবর জিয়ারত শেষে ফেরার পথে হাসনাত ও সারজিস সড়ক দুর্ঘটনার শিকার হন। চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের চুনতি ইউনিয়নের হাজী রাস্তার মোড়ে ট্রাকের ধাক্কায় তাদের গাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এ ঘটনায় চালক মজিবুর রহমান (৪০) এবং তার সহকারী রিফাত মিয়াকে (১৮) আটক করা হয়েছে।
ট্রাক মালিকের রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতার প্রসঙ্গে সারজিস বলেন, “জুলাই গণঅভ্যুত্থানের মামলায় মালিক আওয়ামী লীগের ব্যাকগ্রাউন্ডের। এ কারণে ঘটনাটি আরও পরিকল্পিত বলে মনে হচ্ছে।”
হাসনাত ও সারজিসের দাবি, এসব ঘটনা শুধু দুর্ঘটনা নয়, বরং তাদের হত্যা করার উদ্দেশ্যে সংগঠিত হামলা।