মুরাদনগরে প্রধান শিক্ষককে পদত্যাগে বাধ্য

প্রকাশকালঃ ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০৫:১৪ অপরাহ্ণ ৫১৮ বার পঠিত
মুরাদনগরে প্রধান শিক্ষককে পদত্যাগে বাধ্য

ঢাকা প্রেস

আবুল কালাম আজাদ, কুমিল্লা প্রতিনিধি:-

 


কুমিল্লার মুরাদনগরে বেরিকেট দিয়ে জোর করে প্রধান শিক্ষককে পদত্যাগ পত্রে স্বাক্ষর নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে।
গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় উপজেলা কমপ্লেক্সের ভিতরে এ ঘটনা ঘটে। স্বাক্ষর নেয়ার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে ছড়িয়ে দেয়া হয়েছে।


পদত্যাগপত্রে স্বাক্ষর দেয়া সৈয়দা হাছিনা আক্তার উপজেলা সদরের নূরুন্নাহার বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক।
পদত্যাগে বাধ্য করানো বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থীর সাথে কথা হলে তারা বলেন, প্রধান শিক্ষকের নিয়োগ অবৈধ। তাছাড়া তিনি পরিক্ষার ফ্রিসহ নানান বিষয়ে আমাদের কাছ থেকে টাকা বেশি নেন। তাই আমরা তাকে পদত্যাগে বাধ্য করেছি। বর্তমানে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আপনাদের বিদ্যালয়ের সভাপতি। তাঁর কাছে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে কোন লিখত অভিযোগ দিয়েছেন? এমন প্রশ্নে তারা বলেন, এই প্রক্রিয়া সময় সাপেক্ষ বিষয়। তাই আমরা দেরি না করে এক দফায় দাবি নিয়ে তাঁকে পদত্যাগ করিয়েছি।


 বিদ্যালয়টির বর্তমান সভাপতি ও  উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সিফাত উদ্দিনের সাথে এই বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘কিছু শিক্ষার্থী নূরুন্নাহার বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের পদত্যাগ পত্র আমার কাছে দিয়ে গিছে। আমি আমার উর্ধ্বতন কর্মকর্তার সাথে আলোচনা করে ব্যবস্থা নিবো।


ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট কোন অভিযোগ না থাকার পরেও এমন ঘটনা ঘটার নেপত্যে তিনজন আওয়ামী লীগ নেতার নাম এখন অভিভাবকদের মুখে মুখে। তারা অষ্টম ও নবম শ্রেণীর কিছু শিক্ষার্থীদের ভুল বুঝিয়ে এ ঘটনা ঘটিয়েছে বলেও মন্তব্য করে বিদ্যালয়টির অভিভাবক সদস্য জাকির হোসেন বলেন, ফ্যাসিবাদী সরকারের এই আসনের সাবেক এমপি জাহাঙ্গীরের ডিও লেটারে এই বিদ্যালয়ের বিদ্যুৎসাহী সদস্য হয় যুবলীগের যুগ্ম আহŸায়ক রিপন। প্রভাব খাটিয়ে স্বেচ্ছাসেবক লীগের মানিক হয় অভিভাবক সদস্য। কমিটি হওয়ার শুরু থেকে এই দুজন আওয়ামী লীগ নেতা রিংকুকে সাথে নিয়ে নানান পায়তারা করে প্রধান শিক্ষক হাসিনা বেগমকে হঠানোর জন্য। গত পাঁচ তারিখ দেশে পরিবর্তন আসায় তারা এলাকা ছাড়া। কিন্তু নেপথ্যে থেকে বর্তমান কিছু শিক্ষার্থীকে ঢাল হিসাবে ব্যবহার করেছে তারা। তার প্রমান স্বরূপ: ওই ঘটনায় যে সকল শিক্ষর্থীরা নেতৃত্ব দিয়েছে তার অধিকাংশ আওয়ামী লীগ নেতাদের সন্তান। বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী আছে প্রায় ষোলশ অথচ অষ্টম ও নবম শ্রেণীর ৫০-৬০ শিক্ষার্থী ম্যাডামকে পদত্যাগে বাধ্য করেছে।
যুব লীগ নেতা রিপন ও স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা মানিকের মুঠোফোন বন্ধ পাওয়ায় তাদের বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।


বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক সৈয়দা হাছিনা আক্তার বলেন, ‘অষ্টম ও নবম শ্রেণীর কিছু শিক্ষার্থী উপজেলা সদরের আল্লাহু চত্বরে জড়ো হয়ে আমার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করছে এমন খবরে আমি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মহোদয়ের কাছে  এই বিষয়ে পরামর্শের জন্য বেলা বোরোটার দিকে উপজেলা কমপ্লেক্সে যাই। ওখানে গিয়ে শিক্ষার্থীরা আমাকে বেরিকেট দেয়। সন্ধ্যা অবদি আমাকে আটকে রেখে জোর পূর্বক আমার কাছ থেকে পদত্যাগের স্বাক্ষর নেয়।


তিনি আরো বলেন,‘০৬-০২-২০১২ সালে আমার নিয়োগ। একযোগ পরে আমার বিরুদ্ধে এমন মিথ্যা অভিযোগ মানসিক ভাবে কষ্ট দিয়েছে।