শ্রীলঙ্কা সফর থেকেই বাংলাদেশ টি–টোয়েন্টি দল ছন্দে ছিল। লিটন কুমার দাসদের নেতৃত্বে দলটি ২–১ ব্যবধানে সিরিজ জিতে ফিরেছিল অলআউট ক্রিকেট খেলে। এরপর পাকিস্তান ও নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষেও জয় ধরে রাখে টাইগাররা। টি–টোয়েন্টি এশিয়া কাপেও দেখা যায় স্পষ্ট উন্নতি—শারজাহ স্টেডিয়ামে আফগানিস্তানকে হোয়াইটওয়াশ করে আত্মবিশ্বাসে ভরপুর ছিল দলটি। ফলে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজকে ঘিরে ছিল বাড়তি প্রত্যাশা। কিন্তু বাস্তবে ঘটে উল্টোটা—তিন ম্যাচে হোয়াইটওয়াশ হয়ে হতাশ করেছে বাংলাদেশ, আর সেই পারফরম্যান্স নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)।
চট্টগ্রামে অনুষ্ঠিত সিরিজটি ছিল স্পোর্টিং উইকেটে—যেখানে ব্যাটার ও বোলারদের সমান সুযোগ থাকে। কিন্তু ব্যাটিং ব্যর্থতায় একপেশে ক্রিকেটে জিতে নেয় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। তিন ম্যাচের মধ্যে দুবারই অলআউট হয় বাংলাদেশ।
প্রথম ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ১৬৫ রানের জবাবে বাংলাদেশ গুটিয়ে যায় ১৪৯ রানে। দ্বিতীয় ম্যাচে ক্যারিবীয়দের ১৪৯ রানে আটকে রাখলেও ব্যাট হাতে সংগ্রহ হয় মাত্র ১৩৫/৮। শেষ ম্যাচে ১৫১ রান ডিফেন্ড করতে ব্যর্থ হয়ে ১৬.৫ ওভারে ১৫২ রান হজম করে পরাজিত হয় দল।
এই হতাশাজনক পারফরম্যান্স নিয়ে বিসিবির ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের চেয়ারম্যান নাজমুল আবেদীন ফাহিম বলেন,
“আমাদের দল পরপর চারটি টি–টোয়েন্টি সিরিজ জিতেছে। তাই এই হোঁচট কিছুটা হতাশার। এমন ওঠানামা ক্রিকেটে হতেই পারে, কিন্তু সাম্প্রতিক ফর্ম অনুযায়ী আরও ভালো খেলার প্রত্যাশা ছিল। বিশেষ করে ব্যাটিংয়ে আমরা যেই রান করার সুযোগ পেয়েছি, তা কাজে লাগাতে পারিনি। সাম্প্রতিক সময়ে ব্যাটিং ইউনিট যে আত্মবিশ্বাস দেখিয়েছে, এই সিরিজে তা অনুপস্থিত ছিল।”
বাংলাদেশ সাধারণত ম্যাচ জেতে বোলারদের দাপটে। কিন্তু ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সেই বিভাগও ছন্দ হারায়। ওপেনার তানজিদ হাসান তামিম ছাড়া কেউ বড় ইনিংস খেলতে পারেননি। লিটন দাস, তানজিম হাসান সাকিবরা থেমেছেন ২০–৩০ রানের মধ্যে।
নাজমুল আবেদীন ফাহিম বলেন,
“শুরুতে সাইফ বেশ ভালো ব্যাটিং করছিল, কিন্তু এই সিরিজে তার ধারাবাহিকতা পাইনি। জুনিয়র তামিম ভালো দুটি ইনিংস খেলেছে, তবে মিডল অর্ডার এবার ব্যর্থ। আগের সিরিজগুলোতে জাকের, সোহানদের মতো ব্যাটাররা ম্যাচজয়ী ইনিংস খেলেছিল, সেটি এবার মিস করেছি। ক্রিকেটে এমন উত্থান–পতন আসবেই। আশা করি, এখান থেকেই দল ঘুরে দাঁড়াবে।”
যদিও তানজিদ দ্বিতীয় ও তৃতীয় ম্যাচে দারুণ দুটি ইনিংস খেলেছেন—৬১ ও ৮৯ রান—তবুও দলের সার্বিক ব্যর্থতা ছাপিয়ে যায় সেই আলো। সমর্থকরা যেমন প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ সিরিজ দেখতে চেয়েছিলেন, বিসিবি কর্মকর্তারাও চেয়েছিলেন বিশ্বকাপের আগে শক্তিশালী প্রস্তুতি দেখতে। কিন্তু ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে একেবারেই ছন্দহীন ব্যাটিং সেই আশায় পানি ঢেলে দিয়েছে।