আনোয়ার সাঈদ তিতু, কুড়িগ্রাম জেলা প্রতিনিধি:-
কুড়িগ্রাম জেলা সদর উপজেলার আরাজী পলাশবাড়ী এলাকায় আর.এস রেকর্ড ভুল ও ভিত্তিহীন হওয়ায় তা সংশোধন না হওয়া পর্যন্ত এস.এ রেকর্ড মোতাবেক ভূমি উন্নয়ন কর সহ যাবতীয় কার্যক্রম চলমান রাখার দাবিতে ২৫ জুন’ ২০২৫ইং বুধবার দুপুরে কুড়িগ্রাম জেলা শহরের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার সংলগ্ন শাপলা চত্ত্বর এলাকায় আরাজী পলাশবাড়ী এলাকাবাসী এক মানববন্ধন কর্মসূচী পালন করে। পরে আরাজী পলাশবাড়ী এলাকার স্থানীয় কৃষক-কৃষাণী মিছিল যোগে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে এসে প্রশাসনের কাছে বিষয়টি তুলে ধরেন।
আরাজী পলাশবাড়ী এলাকাবাসীর দাবির প্রেক্ষিতে জানা যায, আরাজী পলাশবাড়ী মৌজার এস.এ ১ নং খাস খতিয়ানের ৭২.২৩ একর নিষ্কন্টক জমি আরাজী পলাশবাড়ী মৌজার হতদরিদ্র, গৃহহীন ও ভূমিহীন পরিবারকে পর্যায়ক্রমে পূনর্বসান করার লক্ষ্যে ১৯৮৯ সালে ২২.৫০ একর জমিতে (প্রতি পরিবারকে ১.৫০ একর জমি হিসাবে) সরকারি উদ্যোগে গুচ্ছগ্রাম নির্মাণ করে সরকারের পক্ষ থেকে ১৫টি হতদরিদ্র, গৃহহীন ও ভূমিহীন পারিবারকে রেজিষ্ট্রিকৃত কবুলিয়তমূলে বন্দোবস্ত ও নামজারি প্রদান সাপেক্ষে হস্তান্তর করা হয়। পরবর্তীতে ২.০০ একর জমি (যার এস.এ দাগ ২০০১) ১৯৯৯ সালে সরকারি উদ্যোগে আশ্রায়ন প্রকল্পের মাধমে ২০ (বিশ) টি ঘর, ০২ (দুই)টি ব্যারাক নির্মাণ করে হতদরিদ্র, গৃহহীন ও ভূমিহীন পরিবারকে রেজিষ্ট্রিকৃত কবুলিয়তমূলে বন্দোবস্ত ও নামজারি প্রদান করা হয়। সরকারী উদ্যোগে এস.এ ২০৭৪ দাগের ১.০০ একর জমিতে পাকা বাড়ী নির্মাণ করে সম্মানিত বীর প্রতীক তারামন বিবিকে বন্দোবস্ত প্রদান করা হয়। সরকারী উদ্যোগে এস.এ ২০৭৪ ও ২০০১ দাগে ২০২১ সালে পাকা ঘর নির্মাণ করে ২৪ টি হতদরিদ্র, গৃহহীন ও ভূমিহীন পরিবারকে যথাযথভাবে বন্দোবস্ত প্রদান কর' হয়।
চক্রান্তমূলকভাবে কিছু অসাধু ব্যক্তি বর্ণিত এস.এ ১ নং খাস খতিয়ানের জমি আরএস রেকর্ডে ব্যক্তি মালিকানায় রেকর্ডকৃত করেছে এবং সরকারি ভূমি উন্নয়ন কর পরিশোধ করে উক্ত জমিতে বসবাসরত হতদরিদ্র, গৃহহীন ও ভূমিহীন পরিবারকে উচ্ছেদের অপচেষ্টা চালাচ্ছে। এই সকল কারণে আরাজী পলাশবাড়ী এলাকাবাসী ইতোমধ্যে কয়েক দফায় কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক বরাবর আরাজী পলাশবাড়ী গুচ্ছগ্রাম এলাকার আর.এস রেকর্ড ভুল ভিত্তিহীন হওয়ায় সংশোধন না হওয়া পর্যন্ত এস.এ রেকর্ড মোতাবেক ভূমি উন্নয়ন কর সহ যাবতীয় কার্যক্রম চলমান রাখার দাবি জানায়।
এরই প্রেক্ষিতে কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের আর.এম শাখার সিনিয়র সহকারী কমিশনার নিশাত তামান্না স্বাক্ষরিত গত ১৬/০১/২০২৩ইং এবং একই দপ্তরের সহকারী কমিশনার স্বাক্ষরিত গত ১৬/০৩/২০২৫ইং স্বাক্ষরিত দুটি পত্রের মাধ্যমে কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার বরাবর বিষয়টি নিয়ে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের নির্দেশনা প্রদান করা হলেও এখন পর্যন্ত বর্তমান আর.এস রেকর্ড মূলেই ভূমি উন্নয়ন কর সহ যাবতীয় কার্যক্রম চালু রেখেছে স্থানীয় পৌর ভূমি অফিস। এরকম পরিস্থিতিতে বিষয়টি দ্রুত নিষ্পত্তির স্বার্থে আরাজী পলাশবাড়ী এলাকাবাসী মানববন্ধন কর্মসূচী পালন করে।
মানববন্ধন কর্মসূচীতে উপস্থিত ছিলেন- আরাজী পলাশবাড়ীর স্থানীয় কৃষক আলেপ উদ্দিন, হানিফ মিয়া, নুর ইসলাম, চান মিয়া, আমিনুর রহমান, জহির হোসেন, কৃষাণী সোহাগী বেগম, রাবেয়া বেগম, রোকেয়া বেগম, নাজমা বেগম, হেনা বেগম ও রাষ্ট্র সংস্কার কৃষক আন্দোলনের ব্যানারে পয়স্তি শীকস্তি আইনে মালিকানা জমি খাস খতিয়ানে রেকর্ড করার প্রতিবাদে অংশ নেন- স্থানীয় কৃষক সেকেন্দার আলী, আমানুল হক, আবুল কাশেম, ভজু মিয়া, আফজাল হোসেন, ময়েজ উদ্দিন, আব্দুস সামাদ, নবীর উদ্দিন, এরশাদুল হক ও মমতাজ আলী প্রমূখ।