আমদানির গত জুলাইয়ে ঋণপত্র খোলা কমেছে ৩১ দশমিক ১৯ শতাংশ

প্রকাশকালঃ ২৭ আগu ২০২৩ ০২:০৫ অপরাহ্ণ ১৮১ বার পঠিত
আমদানির গত জুলাইয়ে ঋণপত্র খোলা কমেছে ৩১ দশমিক ১৯ শতাংশ

ত ২০২২-২৩ অর্থবছরে আমদানি কমেছে ১৫ দশমিক ৮১ শতাংশ। ২০২১-২২ অর্থবছরে আমদানি বেড়েছিল প্রায় ৩৬ শতাংশ।

চলতি ২০২৩–২৪ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে ৪৩২ কোটি ডলারের ঋণপত্র খুলেছেন ব্যবসায়ীরা। গত বছরের একই মাসে ঋণপত্র খোলা হয়েছিল ৬৩৫ কোটি ডলারের। সে হিসাবে আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় গত জুলাইয়ে ঋণপত্র খোলা কমেছে ৩১ দশমিক ১৯ শতাংশ। এর আগে জুন মাসে আমদানি কমেছিল ৩৩ দশমিক ৫২ শতাংশ। ঋণপত্র খোলার পাশাপাশি গত মাসে ঋণপত্র নিষ্পত্তিও কমেছে ২০ দশমিক ১৪ শতাংশ। বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এই তথ্য পাওয়া গেছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত মাসে সবচেয়ে বেশি ঋণপত্র খোলা কমেছে তেল ও গ্যাসের। এসব পণ্যের ঋণপত্র খোলা কমেছে ৫০ শতাংশ। এরপরই ৩৬ শতাংশ ঋণপত্র খোলা কমেছে শিল্পের কাঁচামালের। ৩০ শতাংশ ঋণপত্র খোলা কমেছে মধ্যবর্তী পণ্যের। ২২ শতাংশ কমেছে মূলধনি যন্ত্রপাতির ও ২১ শতাংশ কমেছে ভোগ্যপণ্যের।


নাম প্রকাশ না করার শর্তে একটি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, আমদানি পণ্যের দাম কমে গেছে। আবার চাহিদামতো ডলারও পাওয়া যাচ্ছে না। তাই গ্রাহকের চাহিদামতো ঋণপত্র খোলা যাচ্ছে না।

বিদায়ী ২০২২-২৩ অর্থবছরে আমদানি ১৫ দশমিক ৮১ শতাংশ কমে গিয়েছিল। ওই অর্থবছরে আমদানিতে খরচ হয় ৭ হাজার ৫০৬ কোটি ডলার। তার আগে ২০২১-২২ অর্থবছরে আমদানিতে খরচ হয়েছিল ৮ হাজার ৯১৬ কোটি ডলার। গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিশ্ববাজারে পণ্যের দাম বেড়ে যায়। তাতে আমদানি খরচ বেড়ে যায় ও ডলারের সংকট দেখা দেয়। এরপর আমদানি কমাতে নানা শর্ত ও কড়াকড়ি আরোপ করে বাংলাদেশ ব্যাংক। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) আমদানিতে অতিরিক্ত শুল্ক বসায়। এরপর কমতে শুরু করে আমদানি ব্য়য়।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, ব্যাংকগুলো চাহিদামতো ঋণপত্র খুলছে না। যেসব ব্যবসায়ী ব্যাংকের মালিকানার সঙ্গে যুক্ত, তাঁরাই বেশি ঋণপত্র খুলতে পারছেন। এ কারণে সার্বিকভাবে ঋণপত্র খোলা কমে গেছে।


এদিকে সরকারি আমদানি দায় মেটাতে ডলার বিক্রির কারণে বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভও কমে গেছে। ২০২১ সালের আগস্টে রিজার্ভ ৪৮ বিলিয়ন বা ৪ হাজার ৮০০ কোটি ডলারে পৌঁছালেও এখন তা কমে হয়েছে ২ হাজার ৯৩২ কোটি ডলার। তবে আইএমএফের হিসাব পদ্ধতি বিপিএম ৬ অনুযায়ী, রিজার্ভ ২৩ দশমিক ১৬ বিলিয়ন বা ২ হাজার ৩১৬ কোটি ডলার। আর নিট বা প্রকৃত রিজার্ভ ২০ বিলিয়ন বা দুই হাজার কোটি ডলারের কম।

ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেন, ব্যাংকগুলো অতিপ্রয়োজনীয় পণ্য ছাড়া ঋণপত্র খোলায় নিরুৎসাহিত করছে। এ জন্য ঋণপত্র খোলা ও আমদানি কমে গেছে। তবে শিল্পের কাঁচামালের ঋণপত্র না খুললে চলবে না। শিল্পের চাকা চালু রাখতে হবে। ব্যাংকগুলোকে অতিপ্রয়োজনীয় ও শিল্পের কাঁচামালের ঋণপত্র খোলার জন্য নির্দেশনা দেওয়া প্রয়োজন। তার বিপরীতে বিলাসপণ্য আমদানি বন্ধ করে দিতে হবে।

ব্যাংকে ডলারের দাম প্রসঙ্গে মাহবুবুল আলম বলেন, ব্যাংক-গ্রাহক সম্পর্কের ভিত্তিতে ডলারের দাম নির্ধারণ করা হচ্ছে। যার কাছ থেকে যেমন পাচ্ছে, তেমন দাম নিচ্ছে।