কুড়িগ্রামে শীতের তীব্রতা বৃদ্ধি, চরম দুর্ভোগে জনজীবন

  প্রিন্ট করুন   প্রকাশকালঃ ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১২:১১ অপরাহ্ণ   |   ১৬০ বার পঠিত
কুড়িগ্রামে শীতের তীব্রতা বৃদ্ধি, চরম দুর্ভোগে জনজীবন

ঢাকা প্রেস
আনোয়ার সাঈদ তিতু, কুড়িগ্রাম জেলা প্রতিনিধি:-


 

কুড়িগ্রামে ঘন কুয়াশা ও কনকনে শীতে জনজীবন প্রায় স্থবির হয়ে পড়েছে। রোববার জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১২.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। প্রচণ্ড ঠান্ডা ও কুয়াশার কারণে শ্রমজীবী মানুষ কাজে বের হতে পারছেন না, ফলে তারা বেকার বসে থাকতে বাধ্য হচ্ছেন। গরম কাপড়ের অভাবে ছিন্নমূল ও হতদরিদ্র মানুষ চরম দুর্ভোগের মধ্যে দিন কাটাচ্ছে। শিশুদের মধ্যে শীতজনিত রোগের প্রকোপ বাড়ছে, যার ফলে হাসপাতালগুলোতে রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে।
 

শীতজনিত রোগের প্রকোপ ও হাসপাতালের প্রস্তুতি

কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের আরএমও ডা. শাহিদ সরদার জানান, শীতের কারণে রোগীর সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে, বিশেষ করে শিশুদের ডায়রিয়ার প্রকোপ লক্ষ্য করা যাচ্ছে। তবে এ পরিস্থিতি মোকাবিলায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ যথাযথ প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে বলে তিনি জানান।
 

শীতের তীব্রতায় বিপর্যস্ত চরাঞ্চলের মানুষ

গত দুই দিন ধরে সূর্যের দেখা মেলেনি, সমগ্র এলাকা ঢাকা পড়েছে ঘন কুয়াশায়। বিকেল গড়াতেই হিমালয়ের বরফস্পর্শী ঠান্ডা বাতাস দুর্ভোগ আরও বাড়িয়ে তুলছে। জেলার নদী ও চরাঞ্চলের প্রায় সাত লাখ মানুষ চরম কষ্টে দিন কাটাচ্ছে। শিশু ও বৃদ্ধরা অসুস্থ হয়ে পড়ছেন, প্রয়োজনীয় গরম কাপড়ের অভাবে পরিবার নিয়ে অতিকষ্টে রাত পার করতে হচ্ছে অনেককে। রাতে ঘন কুয়াশা বৃষ্টির মতো ঝরে, ফলে সারাদিনই প্রকৃতি কুয়াশার চাদরে ঢাকা থাকে। এমনকি দিনের বেলাতেও যানবাহনকে হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে।
 

শীতের কষ্টে শ্রমজীবী মানুষের দুর্ভোগ

সদর উপজেলার হলোখানা ইউনিয়নের চর সারডোব গ্রামের করিম মিয়া (৫০) জানান, “কয়েকদিন ধরে প্রচণ্ড ঠান্ডা ও কুয়াশার কারণে কাজে যেতে পারছি না। গরম কাপড়ও নেই, ছেলে-মেয়ে নিয়ে খুব কষ্টে দিন কাটাচ্ছি।”
 

এদিকে, কুড়িগ্রাম শহরের রিকশাচালক ফরাজি আলী জানান, “সকাল ১১টার আগে ঘন কুয়াশার কারণে বের হতে পারি না। তাছাড়া, এই সময়ে ভাড়াও কম, ফলে আয়-রোজগারও কমে গেছে।”
 

শীত মোকাবিলায় সরকারি উদ্যোগ

কুড়িগ্রাম কৃষি আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ অফিসের পর্যবেক্ষক সুবল চন্দ্র সরকার জানান, রোববার জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১২.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে।
 

অন্যদিকে, কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, জেলার ৯টি উপজেলার ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে সরকারিভাবে ৩৫ হাজার কম্বল বিতরণ করা হয়েছে। তবে স্থানীয়দের দাবি, প্রচণ্ড শীত মোকাবিলায় আরও সহায়তা প্রয়োজন।
 

শীতের তীব্রতায় বিপর্যস্ত কুড়িগ্রামের মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা পুনরুদ্ধারে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।