জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জে বাবার বিরুদ্ধে মেয়েকে (১৪) ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে, ভুক্তভোগীর মা বাদী হয়ে মামলা করায় সেই মামলায় পলাতক আসামিকে বৃহস্পতিবার রাতে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। শুক্রবার (২ জুন) সকালে আদালতে পাঠানো হয়। তবে আসামি নিজেকে তার সৎ বাবা বলে দাবি করেছে।
মামলা সূত্রে জানা যায়, ১৫-১৬ বছর আগে দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার বাহাদুরাবাদ ইউনিয়নের নয়াগ্রাম নাজিরপুরের আব্দুর রহমান (৪০) ভুক্তভোগীর মাকে বিয়ে করেন।
তাদের ঘরে একটি কন্যা সন্তান রয়েছে (১৪)। এক বছর আগে আব্দুর রহমান স্ত্রীকে না জানিয়ে আরেকটা বিয়ে করেন। তবে বিয়ের কিছুদিন পর স্থানীয়দের সালিসির মাধ্যমে দ্বিতীয় বিয়ে বিচ্ছেদ ঘটে। এক মাস আগে ভুক্তভোগী মেয়েটিকে নিয়ে তার মা স্বামীর গ্রামের বাড়িতে চলে যান।
২৭ মে (শনিবার) রাত আনুমানিক ৮টার দিকে মেয়েটিকে সিলেট নিয়ে যাওয়ার কথা বলে বাহাদুরাবাদ ইউনিয়নের নাজিরপুর গ্রামের আলী রহমানের সেচ মেশিন পাম্পের আনুমানিক ৩শ গজ পশ্চিমে পাটক্ষেতের ভেতর নিয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণ করেন।
ভুক্তভোগীর মা বলেন, আব্দুর রহমান ও আমার সংসারে একটি কন্যা সন্তান রয়েছে। আমার স্বামী জামালপুর শহরে আমার বাবার বাড়িতে ঘরজামাই থাকতো। এক বছর আগে আমাদের কাছে গোপন রেখে সে আরেকটা বিয়ে করে, যদিও বিয়ের কিছুদিন পর স্থানীয়দের সালিসির মাধ্যমে সেই বিয়ে বিচ্ছেদ ঘটে।
এই ঘটনায় স্বামী আমাকে দায়ী করে সম্পর্কের অবনতি ঘটায়। এক মাস আগে আমি আমার মেয়েকে নিয়ে স্বামীর গ্রামের বাড়িতে চলে যাই। তবু সে আমাকে রেখে দুরে থাকতে শুরু করে। ২৭ মে (শনিবার) রাত আনুমানিক ৮টার দিকে আমার মেয়েকে সিলেট নিয়ে যাওয়ার কথা বলে বের হয়। পরে বাহাদুরাবাদ ইউনিয়নের নাজিরপুর গ্রামের আলী রহমানের সেচ পাম্পের পাশে পাটক্ষেতের ভেতর নিয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে।
জানা গেছে, ঘটনার পর দিন ২৮ মে রাতে আব্দুর রহমানের স্ত্রী বাদী হয়ে নারী ও শিশু দমন নির্যাতন আইনে মামলা করেন। সেই মামলায় আব্দুর রহমান পলাতক ছিলেন। বৃহস্পতিবার (১ জুন) দিবাগত রাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এই ঘটনার বর্ণনা দিয়ে সেই ভুক্তভোগী এবং তার মা স্থানীয় সাংবাদিক এবং পুলিশকে বক্তব্য প্রদান করেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এস আই জুয়েল বর্মন কালের কণ্ঠকে জানান, আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। সে নিজেকে সৎ বাবা দাবি করেছে, তবে সে বহুবার ধর্ষণ করেছে বলে নিজে মুখে স্বীকার করেছে। আমরা ডিএনএ টেস্টের জন্য কোর্টে আবেদন জানাব আর ভুক্তভোগীর নমুনা সংগ্রহ করে আগেই পরীক্ষায় দেওয়া হয়েছে। সকল রিপোর্ট হাতে আসলে প্রকৃত ঘটনা জানা যাবে।
দেওয়ানগঞ্জ মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ শ্যামল চন্দ্রধর কালের কণ্ঠকে জানান, পলাতক আসামিকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে। ভিকটিভের ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন করার জন্য সকল ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।