বিসিএসের মৌখিক পরীক্ষার অভিজ্ঞতা

প্রকাশকালঃ ২৯ আগu ২০২৩ ০৩:৪৪ অপরাহ্ণ ২৪১ বার পঠিত
বিসিএসের মৌখিক পরীক্ষার অভিজ্ঞতা

৪৩তম বিসিএসের মৌখিক পরীক্ষা আগামী ৩ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হচ্ছে। ৪৩তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ ৯ হাজার ৮৪১ জন প্রার্থী মৌখিক পরীক্ষায় অংশ নেবেন। প্রতিদিন ১৮০ জনের ভাইভা নেবে পিএসসি। প্রার্থীদের প্রস্তুতির সুবিধার জন্য আগে যাঁরা মৌখিক পরীক্ষা দিয়ে সফল হয়েছেন, তাঁদের অভিজ্ঞতা প্রকাশ করা হচ্ছে। নিয়মিত আয়োজনের আজ প্রথম পর্বে মৌখিক পরীক্ষার অভিজ্ঞতা জানিয়েছেন ৪১তম বিসিএসে প্রশাসন ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত ফারজানা রহমান তন্বী।

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক পাস করে বেসরকারি টেলিভিশনে উপস্থাপক হিসেবে চাকরি শুরু করেন ফারজানা রহমান তন্বী। টেলিভিশনে উপস্থাপনার পাশাপাশি বিসিএস পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নেন। প্রথম বিসিএসেই পেয়েছেন সফলতা। ৪১তম বিসিএসে নিজের পছন্দ প্রশাসন ক্যাডারে সুপারিশ পেয়েছেন তিনি।  

গত ৯ মার্চ ৪১তম বিসিএসের মৌখিক পরীক্ষা দেন ফারজানা রহমান তন্বী। মৌখিক পরীক্ষার দিনে ফারজানা রহমানের ক্রমিক নম্বর ছিল শেষের দিকে। ভাইভায় তাঁর নিজের ক্যাম্পাস নিয়ে প্রশ্ন করা হয়নি। তবে তাঁর পঠিত বিষয়, সাম্প্রতিক বিষয় ও প্রথম পছন্দ প্রশাসন ক্যাডার বিষয়ে প্রশ্ন করা হয়েছিল। এসব প্রশ্নের মধ্যে প্রায় ৯০ ভাগ প্রশ্নের উত্তর দিতে পেরেছিলেন।


ফারজানা রহমান বলেন, ‘আমার ভাইভার প্রস্তুতি ছিল বেশ গোছানো। আমি মনে মনে কয়েকটা ফরম্যাট ভেবে গিয়েছিলাম। প্রথম প্রশ্ন কী হতে পারে, সে প্রশ্নের উত্তরে সম্পূরক প্রশ্ন কী হতে পারে, এসব বিষয়। আমি যেহেতু টেলিভিশনে দীর্ঘ পাঁচ বছর ধরে উপস্থাপনা করছি, অনেক মানুষের ইন্টারভিউ করা হয়েছে, তাই প্রশ্নোত্তরের বিষয়টা আমার কিছুটা আয়ত্তে ছিল। ভাইভা বোর্ডে ছিলাম প্রায় ১৮ মিনিটের মতো। ভাইভার তারিখটা ছিল ৯ মার্চ। তাই ভেবেছিলাম বাংলাদেশের ইতিহাস, স্বাধীনতা ও বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে প্রশ্ন আসতে পারে। সেগুলোর প্রস্তুতি নিয়েছিলাম। এসব বিষয় নিয়ে আমাকে প্রশ্ন করা হয়েছিল এবং এগুলোর উত্তর ভালো হয়েছিল।’

ফারজানা রহমানকে প্রথম প্রশ্ন করা হয়েছিল, আপনি কী করেন? বেসরকারি টেলিভিশনে উপস্থাপনা করেন উত্তর দেওয়ার পর তাঁকে প্রশ্ন করা হয়, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটে এখন পর্যন্ত কতগুলো টেলিভিশন চ্যানেল যুক্ত হয়েছে? এরপর প্রশ্ন করা হয় মিডিয়াতে যেসব সংবাদ প্রচার করেন, সেগুলো মিডিয়ার স্বার্থে না জনগণের স্বার্থে? এর উত্তরে তিনি বলেন, সংবাদ অনেক সময় মিডিয়ার স্বার্থে অনেক সময় জনগণের স্বার্থে প্রচার করা হয়?


ফারজানা রহমানের স্নাতকে পড়া বিষয় নিয়েও প্রশ্ন করা হয়েছিল। তাঁকে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল কৃষি অর্থনীতির কী প্রয়োজন বাংলাদেশে? এর উত্তরে তিনি বলেছিলেন, কৃষিপণ্য উৎপাদনকারী এবং ভোক্তাদের মাঝে মধ্যস্বত্বভোগীদের দৌরাত্ম্য কমাতে কৃষি অর্থনীতি প্রয়োজন। মধ্যস্বত্বভোগীদের দৌরাত্ম্য কমাতে পারলে আমাদের কৃষক উপকৃত হবেন। কৃষক উপকৃত হলে অর্থনীতিও এগিয়ে যাবে।

ফারজানা রহমান তন্বীর ৪১তম বিসিএসে প্রথম পছন্দ ছিল প্রশাসন ক্যাডার। পছন্দের ক্যাডার নিয়েও প্রশ্ন করা হয়েছিল। তাঁর কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, প্রশাসন ক্যাডারে এলে রমজানে দ্রব্যমূল্য কমাতে কী কী উদ্যোগ নেবেন? এর উত্তরে তিনি বলেছিলেন, বাজার মনিটরিং বাড়াতে হবে, অসাধু ব্যবসায়ী চক্র যেন খেয়ালখুশিমতো দাম বাড়াতে না পারে, সে জন্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অনুমতি সাপেক্ষে বেশি বেশি মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করতে হবে।  

অর্থনৈতিক সমীক্ষা থেকে এককথায় উত্তরের মতো কিছু প্রশ্ন করা হয়েছিল ফারজানা রহমানকে। বিভিন্ন সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান নিয়ে কিছু প্রশ্ন করা হয়েছিল। মুক্তিযুদ্ধ নিয়েও কয়েকটি প্রশ্ন করা হয়েছিল। ফারজানা রহমান বলেন, ‘আমি প্রতিটি প্রশ্ন অত্যন্ত যত্নের সঙ্গে গুছিয়ে বলার চেষ্টা করেছি। আমার কথা বলার মুনশিয়ানা কাজে লাগিয়েছি শতভাগ। আমার মনে হচ্ছিল বিজ্ঞ বোর্ড চেয়ারম্যান স্যার এবং দুজন এক্সটার্নাল স্যার ব্যাপারটি পছন্দ করছেন। যে কয়টি প্রশ্নের উত্তর দিতে পারিনি, সেগুলোও অত্যন্ত বিনয়ের সঙ্গে ফেস করেছি।’