দশম গ্রেডে বেতনসহ তিন দফা দাবিতে শাহবাগ অভিমুখে প্রাথমিক শিক্ষকদের পদযাত্রা পুলিশ বাধা দেয়। এতে একপর্যায়ে আন্দোলনরত শিক্ষকদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ জলকামান, সাউন্ড গ্রেনেড ও টিয়ার শেল নিক্ষেপ করে। শনিবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে শাহবাগে এ ঘটনা ঘটে।
প্রাথমিক শিক্ষক নেতা শামসুদ্দিন মাসুদ জানান, পুলিশের হামলায় শতাধিক শিক্ষক আহত হয়েছেন।
এর আগে সকালে ‘প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদ’-এর ব্যানারে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকরা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন। সকাল ৯টা থেকেই দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আসা হাজারো শিক্ষক সেখানে জড়ো হয়ে তিন দফা দাবি আদায়ে আন্দোলনে অংশ নেন। দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত রাজপথে থাকার ঘোষণা দেন তারা।

কর্মসূচিতে অংশ নেয় চারটি সংগঠন—বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি (কাশেম–শাহিন), বাংলাদেশ প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক সমিতি, বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি (শাহিন–লিপি) এবং সহকারী শিক্ষক দশম গ্রেড বাস্তবায়ন পরিষদ। পাশাপাশি ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগের তৃতীয় ধাপে নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষকরাও আন্দোলনে যোগ দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।
ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলার অলহরী দুর্গাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ফাতেমা শবনম বলেন, “আমরা শিক্ষক হয়ে ১৩তম গ্রেডে বেতন পাই, অথচ উপজেলা হিসাবরক্ষণ অফিসের অফিস সহকারীরা পান ১২তম গ্রেডে। এতে আমরা বৈষম্যের শিকার হচ্ছি।”
তিনি আরও বলেন, “আমাদের বেতন এত কম যে বাজারে গিয়ে ভালো মাছও কেনা যায় না। দুই ঈদের বোনাস পেলেও তাতে ঠিকভাবে উৎসব করা সম্ভব হয় না, কুরবানি তো দূরের কথা।”
শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার শিক্ষক ইয়াছিন মিয়া বলেন, “সরকারি গাড়িচালকরা ১২তম গ্রেডে বেতন পান, অথচ দেশের ভবিষ্যৎ গড়ার দায়িত্বে থাকা শিক্ষকরা ১৩তম গ্রেডে। এটা এক ধরনের অবমূল্যায়ন।”
বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির (শাহিন–লিপি) সাধারণ সম্পাদক খায়রুন নাহার লিপি বলেন, “বছরের পর বছর আলোচনার পরও কোনো অগ্রগতি নেই। এবার আমাদের দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত রাজপথ ছাড়ব না।”
সহকারী শিক্ষকদের তিন দফা দাবি হলো—
১️⃣ দশম গ্রেডে বেতন নির্ধারণ,
২️⃣ ১০ ও ১৬ বছর পূর্তিতে উচ্চতর গ্রেড সমস্যার সমাধান, এবং
৩️⃣ শতভাগ বিভাগীয় পদোন্নতি বাস্তবায়ন।