রাষ্ট্রের মৌলিক সংস্কারের একটি বিস্তারিত রূপরেখা জাতীয় ঐকমত্য কমিশনে জমা দিয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। মঙ্গলবার (৬ মে) জাতীয় সংসদের এলডি হলে কমিশনের সঙ্গে এক সংলাপে অংশ নিয়ে এই প্রস্তাবনা তুলে ধরেন দলটির নেতারা।
এর আগে ১৯ এপ্রিল প্রথম দফায় সংলাপে অংশ নিয়েছিল এনসিপি।
সংলাপে অংশ নিয়ে এনসিপির সদস্যসচিব আখতার হোসেন বলেন, "আমরা যে মৌলিক সংস্কারের কথা বলছি, তা কোনো নির্বাচনী ব্যবস্থার পরিবর্তন কিংবা দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে সংবিধান সংশোধনের মতো সীমিত বিষয়ে নয়। বরং এটি ক্ষমতার ভারসাম্য, জবাবদিহিতা এবং বিকেন্দ্রীকরণ—এই তিন মূলনীতির ভিত্তিতে একটি গঠনমূলক রাষ্ট্র সংস্কারের প্রস্তাব।"
তিনি আরও বলেন, "সাংবিধানিক ও রাষ্ট্র কাঠামো থেকে স্বৈরতান্ত্রিক ও ফ্যাসিবাদী উপাদানগুলো দূর করে কিভাবে একটি গণতান্ত্রিক কাঠামো গড়া যায়, সেটিই আমাদের প্রস্তাবনার মূল উদ্দেশ্য। দলীয়করণমুক্তভাবে সাংবিধানিক পদে নিয়োগ, বিচারবিভাগের স্বাধীনতা, এবং ন্যায়বিচারের সুরক্ষা—এসবই আমাদের মৌলিক সংস্কারের অন্তর্ভুক্ত বিষয়।"
আখতার হোসেন উল্লেখ করেন, “গত ৫৩ বছরে দেশের শাসন কাঠামোয় যে স্বৈরতান্ত্রিক ও ফ্যাসিবাদী ধারা রয়ে গেছে, তাতে জনগণ বারবার নিপীড়নের শিকার হয়েছে। সেই অবস্থা থেকে উত্তরণের লক্ষ্যে বহু ছাত্র জীবন দিয়েছেন, বিশেষত জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থানে। আমরা চাই, তাদের আত্মত্যাগ যেন সার্থক হয়।”
তিনি আরও বলেন, “বাংলাদেশ যেন আর কখনো স্বৈরতন্ত্রের পথে না চলে, বরং একটি স্থায়ী গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার দিকে এগিয়ে যেতে পারে—এ লক্ষ্যে এনসিপি তার প্রস্তাবনা দিয়েছে।”
সংলাপে আখতার হোসেনের নেতৃত্বে অংশ নেন এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক সরোয়ার তুষার, জাভেদ রাসিন এবং মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজের সভাপতিত্বে ও প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দারের সঞ্চালনায় আয়োজিত সংলাপে আরও উপস্থিত ছিলেন কমিশনের সদস্য সফর রাজ হোসেন, বিচারপতি এমদাদুল হক, ড. বদিউল আলম মজুমদার, ড. ইফতেখারুজ্জামান এবং ড. মোহাম্মদ আইয়ুব মিয়া।