আনোয়ার সাঈদ তিতু, কুড়িগ্রাম জেলা প্রতিনিধি:-
কুড়িগ্রাম জেলার উলিপুর উপজেলার ধামশ্রেনী ইউনিয়নের ভদ্রপাড়া গ্রামে রঙিন ফুলকপি চাষে সাফল্যের নতুন এক অধ্যায় সৃষ্টি করেছেন ফারুক আহমেদ। তিনি ২০ শতক জমিতে হলুদ, বেগুনি ফুলকপি এবং লাল বাঁধাকপি ও ব্রকলি চাষ করে এলাকায় সাড়া ফেলেছেন। শুধু চাষই নয়, তার এই উদ্যোগ স্থানীয় কৃষকদের মাঝেও রঙিন কপি চাষে আগ্রহ সৃষ্টি করেছে।
ফারুক আহমেদ শুধু একজন সাধারণ কৃষক নন, তিনি একজন প্রশিক্ষিত কৃষিবিদ। গত বছর অল্প পরিসরে রঙিন কপি চাষ করে সফলতা পেয়েছিলেন। এবার তিনি বাণিজ্যিকভাবে রঙিন কপি চাষ করেছেন। তার মতে, রঙিন কপি চাষে খরচের দ্বিগুণ লাভ হওয়ায় তিনি এ পথে এগিয়েছেন। তার এই সাফল্য দেখে স্থানীয় অনেক কৃষকই এখন রঙিন কপি চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন।
রঙিন ফুলকপি শুধু দেখতেই সুন্দর নয়, এটি পুষ্টিগুণেও ভরপুর। সাধারণ ফুলকপির চেয়ে এর দামও বেশি। বর্তমানে বাজারে সাদা ফুলকপির দাম কেজি প্রতি ৫ টাকা হলেও রঙিন ফুলকপি বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকা কেজি দরে। ফারুক আহমেদ ২০ শতক জমিতে ২,৫০০টি চারা রোপণ করেছেন, যার মোট খরচ হয়েছে ১৫ হাজার টাকা। তিনি আশা করছেন, এবার তার আয় হবে প্রায় ৫০ হাজার টাকা।
ফারুক আহমেদের রঙিন কপির ক্ষেত দেখতে প্রতিদিনই ভিড় করছেন স্থানীয় ও দূর-দূরান্তের দর্শনার্থীরা। ক্ষেতের রঙিন কপির সৌন্দর্য সবার নজর কেড়ে নিচ্ছে। দর্শনার্থীরা শুধু ক্ষেত দেখেই ক্ষান্ত হননি, অনেকে রঙিন কপির চারা ও বীজ সংগ্রহ করছেন এবং ভবিষ্যতে এ চাষ শুরু করার আগ্রহ প্রকাশ করছেন।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, এবার উলিপুর উপজেলায় সবজি চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১ হাজার ৫০ হেক্টর জমিতে। এর মধ্যে কপি চাষও উল্লেখযোগ্য অংশ জুড়ে রয়েছে। উপজেলা কৃষি অফিস কৃষকদেরকে রোগবালাই ও পোকামাকড় নিয়ন্ত্রণসহ নানা পরামর্শ দিয়ে সহযোগিতা করছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোশারফ হোসেন জানান, ফারুক আহমেদের রঙিন কপি চাষ এলাকায় একটি নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করেছে। রঙিন কপি সাধারণ কপির চেয়ে পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ এবং বাজারে এর চাহিদাও বেশি। তিনি আশা প্রকাশ করেন, ফারুক আহমেদের সাফল্য দেখে আরও বেশি কৃষক রঙিন কপি চাষে উদ্বুদ্ধ হবেন।