প্রকাশকালঃ
১১ মে ২০২৩ ১১:৫৯ পূর্বাহ্ণ ১৫৬ বার পঠিত
ফিফা ফান্ড ব্যবহার করে কেনাকাটায় অনিয়ম, জালিয়াতি করায় বাফুফে সাধারণ সম্পাদককে দুই বছরের নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে ফিফা। অনিয়ম, জালিয়াতির বিষয়গুলো কিভাবে প্রমাণিত হয়েছে, সাধারণ সম্পাদক হিসেবে আবু নাঈম সেখানে কিভাবে দায়ী তার বিস্তারিতও তুলে ধরা হয়েছে ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদনে। কিন্তু আবু নাঈম ও তাঁর আইনজীবী বলছেন এসবই করা হয়েছে উদ্দেশ্যমূলকভাবে, যদিও তাঁরা বলছেন না জালিয়াতি হয়নি। নিষিদ্ধ হওয়ার পর গতকালই প্রথম জনসমক্ষে এসেছেন বাফুফের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবু নাঈম।
ঢাকার ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে সংবাদমাধ্যমের সামনে নিজের অবস্থান তুলে ধরতে এদিন সঙ্গে নিয়ে এসেছিলেন তিনি আইনজীবী আজমালুল হোসেন কেসিকে। আবু নাঈমের এই আইনজীবীর বক্তব্য, ‘কেনাকাটায় শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ফিফা কিন্তু যুক্ত ছিল। বাফুফে প্রথমে কী কিনতে চায়, সেটা ফিফাকে জানিয়েছে। তারা অনুমোদন দেওয়ার পর আমরা (বাফুফে) ওয়ার্ক অর্ডার ইস্যু করেছি। সেটা ফিফার কাছে পাঠানো হয়। ফিফা সেটাও অনুমোদন করে ফান্ড ছাড় করলে তবেই না কেনা হয়েছে। তার মানে যাচাই-বাছাইয়ে প্রক্রিয়াটা ফিফা নিজেই করছিল। সেগুলো আমরা কাগজপত্রের মাধ্যমে তুলে ধরেছিলাম। কিন্তু তারা আমলে নেয়নি। যে কারণে আন্তর্জাতিক ক্রীড়া আদালতে যেতে হচ্ছে আমাদের।’জালিয়াতি হয়নি, তাও বলছেন না সোহাগ। আজমালুল জানিয়েছেন, তাঁরা এর মধ্যেই আপিলের জন্য সেখানে আবেদন করেছেন, ১৫ মের মধ্যে আনুষঙ্গিক সব কাগজপত্রও পাঠিয়ে দেবেন তাঁরা। আজমালুলের সঙ্গে সুইস একজন আইনজীবীও নিয়েছেন আবু নাঈম। লুজানের এই ক্রীড়া আদালতে মামলা পরিচালনা বিশাল ব্যয়সাধ্য ব্যাপার। সে ব্যয় আবু নাঈম কিভাবে মেটাচ্ছেন তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল।
আরো অনেক প্রশ্নের মতো এ প্রশ্নের উত্তরও এড়িয়ে গেছেন সাজাপ্রাপ্ত সাবেক সাধারণ সম্পাদক। এটিই তিনি জোর গলায় বলেছেন, ‘আশা করি সব রকম অভিযোগ মিথ্যা প্রমাণিত করে আবার আপনাদের সামনে এসে দাঁড়াব। এই মুহূর্তে চাইলেও অনেক বিষয়ে আমার পক্ষে কথা বলা সম্ভব নয়।’ যেমনটা বলেননি তিনি ফিফা থেকে নিষেধাজ্ঞা পাওয়া বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন থেকেও পুনরায় বহিষ্কার হওয়ার বিষয়ে। তিনি নিজেকে নির্দোষ দাবি করছেন কি না—এমন প্রশ্ন কয়েকবার করা হলেও বলেছেন, ‘সময় সব কিছুর উত্তর দেবে। আমি আশা করি নিজের সম্মান, বাংলাদেশের সম্মান ফিরিয়ে আনতে পারব।’
কাগজপত্রে জালিয়াতি হয়ে থাকলেও ফিফাকে দেখিয়েই সেটা হয়েছে। তার মানে দায় ফিফারও। এই যুক্তি নিয়েই মূলত আপিলে যাচ্ছেন আবু নাঈম। আইনজীবী আজমালুলেরও ঢালও এটাই। কিন্তু জালিয়াতি হয়নি—এমনটি বলছেন না আবু নাঈম বা তাঁর আইনজীবী কেউই। তবে নিষেধাজ্ঞার শুরু থেকেই যে প্রশ্নটি সবার মধ্যে ঘুরছে, কেনাকাটার এই দুর্নীতিতে বাফুফে থেকে একা কেন সাধারণ সম্পাদকের ওপরই নিষেধাজ্ঞা চলে এলো। প্রতিটি প্রক্রিয়ায় আবু নাঈমসহ আরো অন্তত তিন-চারজনের সই লেগেছে। আর আবু নাঈম যদি ইচ্ছাকৃত কিছু করে না-ও থাকেন সে ক্ষেত্রে কার আদিষ্ট হয়ে তিনি এসব করেছেন, সেসব প্রশ্নেরও অবশ্য জবাব দেননি তিনি সংবাদ সম্মেলনে। আজমালুলই তাঁর মক্কেলকে এসব প্রশ্নের উত্তর দেওয়া থেকে দূরে রেখেছেন, ‘আমরা এখনো আপিল প্রক্রিয়ার মধ্যে আছি। এই সময়ে বেফাঁস কোনো মন্তব্য করে আমরা আমাদের আপিলের ক্ষতি করতে চাই না। সবার কাছ থেকেই এ ব্যাপারে সুবিবেচনা আশা করছি।’ এদিকে গতকাল দ্বিতীয় সভা শেষে কমিটির প্রধান কাজী নাবিল আহমেদ জানিয়েছেন, তাঁরা ফিফার অভিযোগ সংশ্লিষ্ট কাগজপত্র এর মধ্যে পরীক্ষা-নিরীক্ষা শুরু করেছেন এবং বেশ কয়েকজন কর্মকর্তাকেও গতকাল জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন।